Wednesday, October 7, 2015

খণ্ডকালীন ও চুক্তিভিত্তিক চাকুরী ‘আধুনিক দাসত্বে’ পরিণত হচ্ছে

খণ্ডকালীন ও চুক্তিভিত্তিক চাকুরী ‘আধুনিক দাসত্বে’ পরিণত করছে মানুষদের

                    শ্রমিক সংগঠন ইন্ডাস্ট্রিঅল বাংলাদেশ কাউন্সিল বলছে, খণ্ডকালীন বা চুক্তিভিত্তিক ‘নিরাপত্তাহীন ও অনিশ্চিত’ কাজের মাধ্যমে চাকরিজীবী বা শ্রমিক তার ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
                    শ্রমিকদের কাজের জন্য যেসব ন্যায্য সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার কথা, খণ্ডকালীন বা চুক্তিভিত্তিক কাজের মাধ্যমে অনেকেই তা পায়না।
                     সংগঠনটি বলছে, এর মাধ্যমে শ্রমিকদেরকে আধুনিক দাসে পরিণত করা হচ্ছে। আর এই প্রবণতা বিশ্বব্যাপী দিন দিন বাড়ছে।
                     ইন্ডাস্ট্রিঅল বাংলাদেশ কাউন্সিলের রায় রমেশচন্দ্র বলেন, বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় এবং ব্যক্তি মালিকানাধীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে এ ধরনের বঞ্চনার ঘটনা ঘটছে । অনেকে বারো বছর, চৌদ্দ বছর, পনেরো বছর ধরে এভাবে কাজ করে যাচ্ছেন কিন্তু স্থায়ী হচ্ছেন না। ফলে চুক্তিভিত্তিক শ্রমিকরা অনেক সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
                   তিনি বলেন, ‘প্রত্যেক শ্রমিকের আইনানুগ নিয়োগপত্র, চাকরির স্থায়িত্ব, সুযোগ-সুবিধা, গ্রাচুইটি সবার জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য হওয়া দরকার। কিন্তু মুক্ত বাজার অর্থনীতির নামে বিশ্বব্যাপী খণ্ডকালীন বা আউট সোর্সিং এর নামে শ্রমিকদেরকে আধুনিক দাসে পরিণত করা হচ্ছে।’
মূলত শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত করে মালিক পক্ষ কিংবা নিয়োগদাতাদের লাভ করার মানসিকতাই এর কারণ বলে তিনি জানান।
                    বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন সরকারী বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন সেক্টরেই চুক্তিভিত্তিক কিংবা খণ্ডকালীন নিয়োগ দেয়া হয়ে থাকে। এই কাজগুলোকে Precarious work বা নিরাপত্তাহীন অনিশ্চিত কাজ বলা হয়ে থাকে।
এই ‘নিরাপত্তাহীন অনিশ্চিত কাজ’ বন্ধের দাবিতে আজ একটি কর্মসূচি পালন করছে ইন্ডাস্ট্রিঅল।

সূত্র: বিবিসি

’সীমানা পেরিয়ে’- পূর্ণদৈর্ঘ বাংলা ছায়াছবি Simana Periye-Full Length Bangla Movie


মালির পথে - ইবনে বতুতার রোমাঞ্চকর অভিযান

মালির পথে

ইবনে বতুতার রোমাঞ্চকর অভিযান  

আইওয়ালাতানে থাকতে আর ভাল লাগছে না।ভাবলাম দেশে ফিরে যাব।কিন্ত পরে চিন্তা করলাম এদের রাজধানী না দেখে গেলে কেমন হয় !তাই মালি সফরের প্রস্তুতি নিলাম আইওয়ালাতান থেকে মালির দূরত্ব দ্রুত গতিতে গেলে চব্বিশ দিনের পথ।বিশাল এক মরুভূমি পাড়ি দিতে হবে।আমি একজন পথ প্রদর্শক ভাড়া করে রওয়ানা হলাম।আমার সাথে আরোও তিন জন ছিলেন।একটি বন এলাকা দিয়ে আমরা চলেছি।বড় বড় গাছের সারির ভেতর দিয়ে পথ চলে গিয়েছে।গাছগুলোর কান্ড বিশালাকায়।কোন কোন গাছের ডালপালা এতা বিস্তৃত যে একটি গাছের ছায়াতেই একটি কাফেলার সবাই বিশ্রাম নিতে পারে।কোন কোন গাছে কোন পাতা নেই।কিন্তু কান্ড এতো বিশাল যে এর ছায়াতেই মুসাফিররা বিশ্রাম নিতে পারে।এই এলাকার এক লোকের গাছ দেখলাম কান্ড বিশালাকায় ,বোতলাকৃতির এবং ভিতরে ফাঁপা।সেই ফাঁপা স্থানে বৃষ্টির পানি জমা থাকে।যেন একটি পানির কূপ!মুসাফিররা গাছের কান্ড ফুটো করে সেই পানি পান করতে পারে।আবার কোন কোন গাছের ফাঁপা অংশে মৌমাছিরা মৌচাক তৈরী করে।ওখান থেকে প্রচুর মধু পা্ওয়া যায়।এক জায়গায় আমি দেখলাম এক গাছের ফাঁপা অংশের বিশাল ফাটলে এক তাঁতী তার তাঁত দিয়ে ভেতরে বসে আরামে বসে বুনন কাজ করছে।এই দৃশ্য দেখে আমি তাজ্জব হয়ে গেলাম।আইওয়ালাতান ও মালির মধ্যবর্তী এলাকার জঙ্গলে বিভিন্ন রকমের ফল মূলের গাছ জন্মে।এখানে আপেল,নাশপাতি,খুবানী,শাফতালু গাছের মতো গাছ দেখা যায়।কিন্তু আসলে এগুলো অন্য গাছ।এ এলাকায় খরবুজার মতো এক জাতের ফল উতপন্ন হয়।পাকলে ফেটে যায় এবং ভিতবে আঠার মতো পদার্থ পা্ওয়া যায়।এই ফলগুলো রান্না করে খাওয়া হয়।বাজারেও বিক্রী হয়।মাটির নীচে শিমের বিচির মতো একধরনের শষ্য জন্মে।এগুলোকে ভেজে খাওয়া যায়।নাশপাতির মতো দেখতে গারতি নামে এক জাতের ফল জন্মে।যা খেতে অত্যন্ত মিষ্টি।এর বিচি থেকে তেলও পাওয়া যায়।এই তেল ভাজা,রান্না,চেরাগ জ্বালানো,গায়ে মাখা এবং এক জাতের মাটির সাথে মিশিয়ে পুটিন বানানোর কাজেও ব্যবহৃত হয়।এই তেল এই এলাকায় প্রচুর উতপন্ন হয়।লাউয়ের খোলের ভিতর বিভিন্ন শহরে নিয়ে যাওয়া হয়।এখানে বিশালাকৃতি লাউয়ের খোল শুকিয়ে পাত্র বানানো হয়। যা একটি বড় কলসির সমান হয়।এই এলাকায় সফরের সময় মুসাফিররা নিজেদের মালপত্র,খাবার দাবার বা টাকা পয়সা সাথে নেয় না।টাকা পয়সার বদলে নিয়ে যায় লবণের টুকরো আর সীসার অলংকার।সীসার তৈরী অলংকারকে বলা হয় নাজম।এছাড়া বিভিন্ন সুগন্ধি দ্রব্যও নিয়ে যাওয়া হয়।মুসাফিরদের কাফেলা কোন গ্রামে গিয়ে পৌঁছলে কৃষ্ণাঙ্গ রমণীরা ভূট্টা,চাল,দুধ,মুরগী,বরবটি,শিমের আটা,সরষের মতো দেখতে দানাদার শষ্য ফুনি প্রভৃতি নিয়ে আসেন।লবন,সীসার অলংকার ও সুগন্ধী দ্রব্যের বিনিময়ে এগুলো মুসাফিররা পছন্দ মতো কিনে নেন।

দশ দিন পর আমরা জাগনী নামে এক জনপদে এসে পৌঁছলাম।এখানে সাগবাগো সম্প্রদায়ের বসবাস।এরা কৃষ্ণাঙ্গ এবং আবাজিয়া।খারেজী মাজহাবের অনুসারী।এখানে মালেকি মাজহাবের লোকজনকে তুরি বলা হয় ।জাগরী থেকে আমরা পৌছালাম নাইজার নদীতে।মালি সম্রাজ্যের প্রধান নদী এই নাইজার।এই নদীর তীরে বিভিন্ন শহর গড়ে উঠেছে আমরা নাইজার তীরবর্তী কারসাখু কাবারাহ হয়ে জাগাহ পৌঁছলাম।কারবাহ ও জাগাহ দুইটি এলাকার দুজন রাজা শাসন করেন ।দুই জনেই মালির সুলতানের অধীন।জাগাহর কৃষ্ণাঙ্গরা প্রচীনকাল থেকেই ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন।এরা অত্যন্ত পরহেজগার এবং বিদ্যুতসাহী।জাগাহ থেকে নাইজার নদী এখান দিয়ে ঘুরে তুমবুকত ও কাউকাউ হয়ে মুলিতে পৌঁছেছে।মুলিতে লিমি উপউপজাতীয়দের বসবাস। এই এলাকা হলো মালি সম্রাজ্যের শেষ সীমা।নাইজার নদী এখান থেকে ঘুরে ইউফি শহরে পৌঁছেছে।এই এলাকা থেকে শুরু হয়েছে কৃষ্ণাঙ্গ কাফেরদের এলাকা।এখানকার রাজাকে কৃষ্ণাঙ্গ কাফেরদের সবচেয়ে বড় রাজা হিসাবে গণ্য করা হয়।শ্বেতকায়রা এই এলাকায় যায় না।কারণ গেলেই কৃষ্ণাঙ্গ কাফেররা হামলা করে ওদেরকে কতল করে ফেলে ।

ইউফি থেকে নাইজার নদী লোবা এলাকায় প্রবাহিত হয়েছে।এই এলাকার জনগণ খ্রিষ্টান। এরপর নাইজার নদী পৌঁছেছে দুনকুলা শহরে।এটি কৃষ্ণঙ্গদের সবচেয়ে বড় শহর।এখানকার সুলতানের নাম ইবনে কানজুদ্দিন।মিশরের সুলতান মালেক নাসেরের সময় ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হন ।এরপর নাইজার জানাদিল এলাকায় এসে সাগরে মিশেছে ।


কর্টেসী-মোহাম্মদ মামুনূর রশীদ

Tuesday, October 6, 2015

Total Recall (টোটাল রিকল) American science fiction action Full Movies HD 1080p


মনে হয় একদিন - জীবনানন্দ দাশ

 জীবনানন্দ দাশ


মনে হয় একদিন আকাশে শুকতারা দেখিব না আর ;
দেখিব না হেলেঞ্চার ঝোপ থেকে এক ঝাড় জোনাকি কখন
নিভে যায়  দেখিব না আর আমি এই পরিচিত বাঁশবন ,
শুঁকনো বাঁশের পাতা ছাওয়া মাটি হয়ে যাবে গভীর আঁধার
আমার চোখের কাছে  লক্ষী পূর্ণিমার রাতে সে কবে আবার
পেঁচা ডাকে জোছনায়  হিজলের বাকা ডাল করে গুঞ্জরন ;
সারা রাত কিশোরীর লাল পাড় চাঁদে ভাসে – হাতের কাঁকন
বেজে ওঠে : বুঝিব না গঙ্গাজল ,নারকোলনাড়ুগুলো তার
জানি না সে কারে দেবে  জানি না সে চিনি আর সাদা তালশাঁস
হাতে লয়ে পলাশের দিকে চেয়ে দুয়ারে দাড়ায়ে রবে কি না
আবার কাহার সাথে ভালবাসা হবে তার  আমি তা জানি না;
মৃত্যুরে কে মনে রাখে ?কীর্তিনাশা খুঁড়ে খুঁড়ে চলে বারো মাস
নতুন ডাঙার দিকে –পিছনের অবিরল মৃত চর বিনা
দিন তার কেটে যায়  শুকতারা নিভে গেলে কাঁদে কি আকাশ ?


১৯৪৬-৪৭

 -জীবনানন্দ দাশ

 দিনের আলোয় অই চারি দিকে মানুষের অস্পষ্ট ব্যাস্ততা:
পথে-ঘাটে ট্রাক ট্রামলাইনে ফুটপাতে;
কোথায় পরের বাড়ি এখুনি নিলেম হবে—মনে হয়,
জলের মতন দামে।
সকলকে ফাঁকি দিয়ে স্বর্গে পৌঁছুবে
সকলের আগে সকলেই তাই।
অনেকেরই ঊর্ধশ্বাসে যেতে হয়, তবু
নিলেমের ঘরবাড়ি আসবাব—অথবা যা নিলেমের নয়
সে সব জিনিস
বহুকে বঞ্চিত ক’রে দু জন কি একজন কিনে নিতে পারে।
পৃথিবীতে সুদ খাটে: সকলের জন্যে নয়।
অনির্বচনীয় হুণ্ডি একজন দু জনের হাতে।
পৃথিবীর এইসব উঁচু লোকদের দাবি এসে
সবই নেয়, নারীকেও নিয়ে যায়।
বাকি সব মানুষেরা অন্ধকারে হেমন্তের অবিরল পাতার মতন
কোথাও নদীর পানে উড়ে যেতে চায়,
অথবা মাটির দিকে—পৃথিবীর কোনো পুনঃপ্রবাহের বীজের ভিতরে
মিশে গিয়ে। পৃথিবীতে ঢের জন্ম নষ্ট হয়ে গেছে জেনে, তবু
আবার সূর্যের গন্ধে ফিরে এসে ধুলো ঘাস কুসুমের অমৃতত্বে
কবে পরিচিত জল, আলো আধো অধিকারিণীকে অধিকার করে নিতে হবে:
ভেবে তারা অন্ধকারে লীন হয়ে যায়।
লীন হয়ে গেলে তারা তখন তো—মৃত।
মৃতেরা এ পৃথিবীতে ফেরে না কখনও
মৃতেরা কোথাও নেই; আছে?
কোনো কোনো অঘ্রানের পথে পায়চারি-করা শান্ত মানুষের
হৃদয়ের পথে ছাড়া মৃতেরা কোথাও নেই বলে মনে হয়;
তা হলে মৃত্যুর আগে আলো অন্ন আকাশ নারীকে
কিছুটা সুস্থিরভাবে পেলে ভালো হত।
বাংলার লক্ষ গ্রাম নিরাশায় আলোহীনতায় ডুবে নিস্তব্ধ নিস্তেল।
সূর্য অস্তে চলে গেলে কেমন সুকেশী অন্ধকার
খোঁপা বেঁধে নিতে আসে—কিন্তু কার হাতে?
আলুলায়িত হয়ে চেয়ে থাকে—কিন্তু কার তরে?
হাত নেই—কোথাও মানুষ নেই; বাংলার লক্ষ গ্রামরাত্রি একদিন
আলপনার, পটের ছবির মতো সুহাস্যা, পটলচেরা চোখের মানুষী
হতে পেরেছিল প্রায়; নিভে গেছে সব।
এইখানে নবান্নের ঘ্রাণ ওরা সেদিনও পেয়েছে;
নতুন চালের রসে রৌদ্রে কতো কাক
এ-পাড়ার বড়ো...ও-পাড়ার দুলে বোয়েদের
ডাকশাঁখে উড়ে এসে সুধা খেয়ে যেত;
এখন টুঁ শব্দ নেই সেই সব কাকপাখিদেরও;
মানুষের হাড় খুলি মানুষের গণনার সংখ্যাধীন নয়;
সময়ের হাতে অন্তহীন।
ওখানে চাঁদের রাতে প্রান্তরে চাষার নাচ হত
ধানের অদ্ভুত রস খেয়ে ফেলে মাঝি-বাগ্‌দির
ঈশ্বরী মেয়ের সাথে
বিবাহের কিছু আগে-বিবাহের কিছু পরে-সন্তানের জন্মাবার আগে।
সে সব সন্তান আজ এ যুগের কুরাষ্ট্রের মূঢ়
ক্লান্ত লোকসমাজের ভীড়ে চাপা পড়ে
মৃতপ্রায়; আজকের এই সব গ্রাম্য সন্ততির
প্রপিতামহের দল হেসে খেলে ভালোবেসে-অন্ধকারে জমিদারদের
চিরস্থায়ী ব্যাবস্থাকে চড়কের গাছে তুলে ঘুমায়ে গিয়েছে।
ওরা খুব বেশি ভালো ছিল না; তবুও
আজকের মন্বন্তর দাঙ্গা দুঃখ নিরক্ষরতায়
অন্ধ শতচ্ছিন্ন গ্রাম্য প্রাণীদের চেয়ে
পৃথক আর-এক স্পষ্ট জগতের অধিবাসী ছিল।
আজকে অস্পষ্ট সব? ভালো করে কথা ভাবা এখন কঠিন;
অন্ধকারে অর্ধসত্য সকলকে জানিয়ে দেবার
নিয়ম এখন আছে; তারপর একা অন্ধকারে
বাকি সত্য আঁচ করে নেওয়ার রেওয়াজ
রয়ে গেছে; সকলেই আড়চোখে সকলকে দেখে।
সৃষ্টির মনের কথা মনে হয়—দ্বেষ।
সৃষ্টির মনের কথা: আমাদেরই আন্তরিকতাতে
আমাদেরই সন্দেহের ছায়াপাত টেনে এনে ব্যাথা
খুঁজে আনা। প্রকৃতির পাহাড়ে পাথরে সমুচ্ছল
ঝর্নার জল দেখে তারপর হৃদয়ে তাকিয়ে
দেখেছি প্রথম জল নিহত প্রাণীর রক্তে লাল
হয়ে আছে ব’লে বাঘ হরিণের পিছু আজও ধায়;
মানুষ মেরেছি আমি—তার রক্তে আমার শরীর
ভরে গেছে; পৃথিবীর পথে এই নিহত ভ্রাতার
ভাই আমি; আমাকে সে কনিষ্ঠের মতো জেনে তবু
হৃদয়ে কঠিন হয়ে বধ করে গেল, আমি রক্তাক্ত নদীর
কল্লোলের কাছে শুয়ে অগ্রজপ্রতিম বিমূঢ়কে
বধ করে ঘুমাতেছি—তাহার অপরিসর বুকের ভিতরে
মুখ রেখে মনে হয় জীবনের স্নেহশীল ব্রতী
সকলকে আলো দেবে মনে করে অগ্রসর হয়ে
তবুও কোথাও কোনো আলো নেই বলে ঘুমাতেছে।
ঘুমাতেছে।
যদি ডাকি রক্তের নদীর থেকে কল্লোলিত হয়ে
বলে যাবে কাছে এসে, 'ইয়াসিন আমি,
হানিফ মহম্মদ মকবুল করিম আজিজ—
আর তুমি?' আমার বুকের 'পরে হাত রেখে মৃত মুখ থেকে
চোখ তুলে শুধাবে সে—রক্তনদী উদ্বেলিত হয়ে
ব’লে যাবে, 'গগন, বিপিন, শশী,পাথুরেঘাটার;
মানিকতলার, শ্যামবাজারের, গ্যালিফ স্ট্রীটের, এন্টালির-'
কোথাকার কেবা জানে; জীবনের ইতর শ্রেণীর
মানুষ তো এরা সব; ছেঁড়া জুতো পায়ে
বাজারের পোকাকাটা জিনিসের কেনাকাটা করে;
সৃষ্টির অপরিক্লান্ত চারণার বেগে
এইসব প্রাণকণা জেগেছিল—বিকেলের সূর্যের রশ্মিতে
সহসা সুন্দর বলে মনে হয়েছিল কোনো উজ্জ্বল চোখের
মনীষী লোকের কাছে এই সব অণুর মতন
উদ্ভাসিত পৃথিবীর উপেক্ষিত জীবনগুলোকে।
সূর্যের আলোর ঢলে রোমাঞ্চিত রেণুর শরীরে
রেণুর সংঘর্ষে যেই শব্দ জেগে ওঠে
সেখানে তার অনুপম কণ্ঠের সংগীতে
কথা বলে; কাকে বলে? ইয়াসিন মকবুল শশী
সহসা নিকটে এসে কোনো-কিছু বলবার আগে
আধ-খণ্ড অনন্তের অন্তরের থেকে যেন ঢের
কথা বলে গিয়েছিল; তবু—
অনন্ত তো খণ্ড নয়; তাই সেই স্বপ্ন, কাজ, কথা
অখণ্ডে অনন্তে অন্তর্হিত হয়ে গেছে;
কেউ নেই, কিছু নেই-সূর্য নিভে গেছে।
এ যুগে এখন ঢের কম আলো সব দিকে, তবে।
আমরা এ পৃথিবীর বহুদিনকার
কথা কাজ ব্যাথা ভুল সংকল্প চিন্তার
মর্যাদায় গড়া কাহিনীর মূল্য নিংড়ে এখন
সঞ্চয় করেছি বাক্য শব্দ ভাষা অনুপম বাচনের রীতি।
মানুষের ভাষা তবু অনুভূতিদেশ থেকে আলো
না পেলে নিছক ক্রিয়া; বিশেষণ; এলোমেলো নিরাশ্রয় শব্দের কঙ্কাল
জ্ঞানের নিকট থেকে ঢের দূরে থাকে।
অনেক বিদ্যার দান উত্তরাধিকারে পেয়ে তবু
আমাদের এই শতকের
বিজ্ঞান তো সংকলিত জিনিসের ভিড় শুধু—বেড়ে যায় শুধু;
তবুও কোথাও তার প্রাণ নেই বলে অর্থময়
জ্ঞান নেই আজ এই পৃথিবীতে; জ্ঞানের বিহনে প্রেম নেই।
এ-যুগে কোথাও কোনো আলো—কোনো কান্তিময় আলো
চোখের সুমুখে নেই যাত্রিকের; নেই তো নিঃসৃত অন্ধকার
রাত্রির মায়ের মতো: মানুষের বিহ্বল দেহের
সব দোষ প্রক্ষালিত করে দেয়—মানুষের মানুষের বিহ্বল আত্মাকে
লোকসমাগমহীন একান্তের অন্ধকারে অন্তঃশীল ক’রে
তাকে আর শুধায় না—অতীতের শুধানো
প্রশ্নের উত্তর চায় না আর—শুধু শব্দহীন মৃত্যুহীন
অন্ধকারে ঘিরে রাখে, সব অপরাধ ক্লান্তি ভয় ভুল পাপ
বীতকাম হয় যাতে—এ জীবন ধীরে ধীরে বীতশোক হয়,
স্নিগ্ধতা হৃদয়ে জাগে; যেন দিকচিহ্নময় সমুদ্রের পারে
কয়েকটি দেবদারুগাছের ভিতরে অবলীন
বাতাসের প্রিয়কণ্ঠ কাছে আসে—মানুষের রক্তাক্ত আত্মায়
সে-হাওয়া অনবচ্ছিন্ন সুগমের—মানুষের জীবন নির্মল।
আজ এই পৃথিবীতে এমন মহানুভব ব্যাপ্ত অন্ধকার
নেই আর? সুবাতাস গভীরতা পবিত্রতা নেই?
তবুও মানুষ অন্ধ দুর্দশার থেকে স্নিগ্ধ আঁধারের দিকে
অন্ধকার হ’তে তার নবীন নগরী গ্রাম উৎসবের পানে
যে অনবনমনে চলেছে আজও—তার হৃদয়ের
ভুলের পাপের উৎস অতিক্রম ক’রে চেতনার
বলয়ের নিজ গুণ রয়ে গেছে বলে মনে হয়।

বোধ

  -জীবনানন্দ দাশ

 আলো-অন্ধকারে যাই - মাথার ভিতরে
স্বপ্ন নয়, - কোন্‌ এক বোধ কাজ করে!
স্বপ্ন নয় - শান্তি নয়―ভালোবাসা নয়,
হৃদয়ের মাঝে এক বোধ জন্ম লয়!
আমি তারে পারি না এড়াতে,
সে আমার হাত রাখে হাতে;
সব কাজ তুচ্ছ হয়, - পণ্ড মনে হয়,
সব চিন্তা - প্রার্থনার সকল সময়
শূন্য মনে হয়,
শূন্য মনে হয়!

সহজ লোকের মতো কে চলিতে পারে!
কে থামিতে পারে এই আলোয় আঁধারে
সহজ লোকের মতো! তাদের মতন ভাষা কথা
কে বলিতে পারে আর! - কোনো নিশ্চয়তা
কে জানিতে পারে আর? - শরীরের স্বাদ
কে বুঝিতে চায় আর? - প্রাণের আহ্লাদ
সকল লোকের মতো কে পাবে আবার!
সকল লোকের মতো বীজ বুনে আর
স্বাদ কই! - ফসলের আকাঙ্ক্ষায় থেকে,
শরীরে মাটির গন্ধ মেখে,
শরীরে জলের গন্ধ মেখে,
উৎসাহে আলোর দিকে চেয়ে
চাষার মতন প্রাণ পেয়ে
কে আর রহিবে জেগে পৃথিবীর ՚পরে?
স্বপ্ন নয়, - শান্তি নয়,―কোন্‌ এক বোধ কাজ করে
মাথার ভিতরে!

পথে চ’লে পারে - পারাপারে
উপেক্ষা করিতে চাই তারে;
মড়ার খুলির মতো ধ’রে
আছাড় মারিতে চাই,জীবন্ত মাথার মতো ঘোরে
তবু সে মাথার চারিপাশে!
তবু সে চোখের চারিপাশে!
তবু সে বুকের চারিপাশে!
আমি চলি,সাথে সাথে সেও চলে আসে!
আমি থামি, -
সেও থেমে যায়;
সকল লোকের মাঝে ব’সে
আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা?
আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
আমার চোখেই শুধু বাধা?
জন্মিয়াছে যারা এই পৃথিবীতে
সন্তানের মতো হয়ে, -
সন্তানের জন্ম দিতে দিতে
যাহাদের কেটে গেছে অনেক সময়,
কিংবা আজ সন্তানের জন্ম দিতে হয়
যাহাদের ; কিংবা যারা পৃথিবীর বীজক্ষেতে আসিতেছে চ’লে
জন্ম দেবে - জন্ম দেবে ব’লে;
তাদের হৃদয় আর মাথার মতন
আমার হৃদয় না কি?―তাহাদের মন
আমার মনের মতো না কি? -
তবু কেন এমন একাকী?
তবু আমি এমন একাকী!
হাতে তুলে দেখিনি কি চাষার লাঙল?
বাল্‌টিতে টানিনি কি জল?
কাস্তে হাতে কতবার যাইনি কি মাঠে?
মেছোদের মতো আমি কত নদী ঘাটে
ঘুরিয়াছি;
পুকুরের পানা শ্যালা - আঁশটে গায়ের ঘ্রাণ গায়ে
গিয়েছে জড়ায়ে;
 - এইসব স্বাদ;
 - এ সব পেয়েছি আমি;―বাতাসের মতন অবাধ
বয়েছে জীবন,
নক্ষত্রের তলে শুয়ে ঘুমায়েছে মন
একদিন;
এইসব সাধ
জানিয়াছি একদিন, - অবাধ - অগাধ;
চ’লে গেছি ইহাদের ছেড়ে; -
ভালোবেসে দেখিয়াছি মেয়েমানুষেরে,
অবহেলা ক’রে আমি দেখিয়াছি মেয়েমানুষেরে,
ঘৃণা ক’রে দেখিয়াছি মেয়েমানুষেরে;
আমারে সে ভালোবাসিয়াছে,
আসিয়াছে কাছে,
উপেক্ষা সে করেছে আমারে,
ঘৃণা ক’রে চ’লে গেছে - যখন ডেকেছি বারে-বারে
ভালোবেসে তারে;
তবুও সাধনা ছিল একদিন, - এই ভালোবাসা;
আমি তার উপেক্ষার ভাষা
আমি তার ঘৃণার আক্রোশ
অবহেলা ক’রে গেছি; যে নক্ষত্র - নক্ষত্রের দোষ
আমার প্রেমের পথে বার-বার দিয়ে গেছে বাধা
আমি তা ভুলিয়া গেছি;
তবু এই ভালোবাসা - ধুলো আর কাদা -।

মাথার ভিতরে স্বপ্ন নয় - প্রেম নয় - কোনো এক বোধ কাজ করে।
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চ’লে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে :
সে কেন জলের মতো ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
অবসাদ নাই তার? নাই তার শান্তির সময়?
কোনোদিন ঘুমাবে না? ধীরে শুয়ে থাকিবার স্বাদ
পাবে না কি? পাবে না আহ্লাদ
মানুষের মুখ দেখে কোনোদিন!
মানুষীর মুখ দেখে কোনোদিন!
শিশুদের মুখ দেখে কোনোদিন!

এই বোধ - শুধু এই স্বাদ
পায় সে কি অগাধ - অগাধ!
পৃথিবীর পথ ছেড়ে আকাশের নক্ষত্রের পথ
চায় না সে? - করেছে শপথ
দেখিবে সে মানুষের মুখ?
দেখিবে সে মানুষীর মুখ?
দেখিবে সে শিশুদের মুখ?
চোখে কালোশিরার অসুখ,
কানে যেই বধিরতা আছে,
যেই কুঁজ - গলগণ্ড মাংসে ফলিয়াছে
নষ্ট শসা - পচা চালকুমড়ার ছাঁচে,
যে সব হৃদয়ে ফলিয়াছে
- সেই সব।


ঘাস

  -জীবনানন্দ দাশ

 কচি লেবুপাতার মত নরম সবুজ আলোয়
পৃথিবী ভরে গিয়েছে এই ভোরের বেলা;
কাঁচা বাতাবির মতো সবুজ ঘাস–তেমনি সুঘ্রাণ–
হরিণেরা দাঁত দিয়ে ছিঁড়ে নিচ্ছে।
আমারও ইচ্ছা করে এই ঘাসের ঘ্রাণ হরিৎ মদের মতো
গেলাসে গেলাসে পান করি,
এই ঘাসের শরীর ছানি–চোখে চোখ ঘষি,
ঘাসের পাখনায় আমার পালক,
ঘাসের ভিতর ঘাস হয়ে জন্মাই কোনো এক নিবিড় ঘাস–মাতার
শরীরের সুস্বাদ অন্ধকার থেকে নেমে।


নিরালোক

   -জীবনানন্দ দাশ

 একবার নক্ষত্রের দিকে চাই – একবার প্রান্তরের দিকে
আমি অনিমিখে।
ধানের ক্ষেতের গন্ধ মুছে গেছে কবে
জীবনের থেকে যেন; প্রান্তরের মতন নীরবে
বিচ্ছিন্ন খড়ের বোঝা বুকে নিয়ে ঘুম পায় তার;
নক্ষত্রেরা বাতি জ্বেলে–জ্বেলে–জ্বেলে– ‘নিভে গেলে- নিভে গেলে?’
বলে তারে জাগায় আবার;
জাগায় আবার।
বিচ্ছিন্ন খড়ের বোঝা বুকে নিয়ে- বুকে নিয়ে ঘুম পায় তার;
ঘুম পায় তার।

অনেক নক্ষত্রে ভরে গেছে সন্ধ্যার আকাশ– এই রাতের আকাশ;
এইখানে ফাল্গুনের ছায়া মাখা ঘাসে শুয়ে আছি;
এখন মরণ ভাল,– শরীরে লাগিয়া রবে এই সব ঘাস;
অনেক নক্ষত্র রবে চিরকাল যেন কাছাকাছি।
কে যেন উঠিল হেঁচে,– হামিদের মরখুটে কানা ঘোড়া বুঝি!
সারা দিন গাড়ি টানা হল ঢের,– ছুটি পেয়ে জ্যোৎস্নায় নিজ মনে খেয়ে যায় ঘাস;
যেন কোনো ব্যথা নাই পৃথিবীতে,– আমি কেন তবে মৃত্যু খুঁজি?
‘কেন মৃত্যু খোঁজো তুমি?’– চাপা ঠোঁটে বলে কৌতুকী আকাশ।

ঝাউফুলে ঘাস ভরে– এখানে ঝাউয়ের নীচে শুয়ে আছি ঘাসের উপরে;
কাশ আর চোরকাঁটা ছেড়ে দিয়ে ফড়িং চলিয়া গেছে ঘরে।
সন্ধ্যার নক্ষত্র, তুমি বলো দেখি কোন্‌ পথে কোন্‌ ঘরে যাব!
কোথায় উদ্যম নাই, কোথায় আবেগ নাই,- চিন্তা স্বপ্ন ভুলে গিয়ে শান্তি আমি পাব?

রাতের নক্ষত্র, তুমি বলো দেখি কোন্‌ পথে যাব ?
‘তোমারই নিজের ঘরে চলে যাও’– বলিল নক্ষত্র চুপে হেসে–
‘অথবা ঘাসের ‘পরে শুয়ে থাকো আমার মুখের রূপ ঠায় ভালবেসে;
অথবা তাকায়ে দেখো গোরুর গাড়িটি ধীরে চলে যায় অন্ধকারে
সোনালি খড়ের বোঝা বুকে;
পিছে তার সাপের খোলস, নালা, খলখল অন্ধকার – শান্তি তার রয়েছে সমুখে
চলে যায় চুপ-চুপে সোনালি খড়ের বোঝা বুকে–
যদিও মরেছে ঢের গন্ধর্ব, কিন্নর, যক্ষ, - তবু তার মৃত্যু নাই মুখে।‘

 আবার আসিব ফিরে

- জীবনানন্দ দাশ

আবার আসিব ফিরে ধানসিঁড়িটির তীরে - এই বাংলায়
হয়তো মানুষ নয় - হয়তো বা শাঁখচিল শালিকের বেশে,
হয়তো ভোরের কাক হয়ে এই কার্তিঁকের নবান্নের দেশে
কুয়াশার বুকে ভেসে একদিন আসিব কাঁঠাল ছায়ায়।
হয়তো বা হাঁস হবো - কিশোরীর - ঘুঙুর রহিবে লাল পায়
সারাদিন কেটে যাবে কলমীর গন্ধভরা জলে ভেসে ভেসে।
আবার আসিব আমি বাংলার নদী মাঠ ক্ষেত ভালোবেসে
জলঙ্গীর ঢেউ এ ভেজা বাংলারি সবুজ করুণ ডাঙ্গায়।
হয়তো দেখিবে চেয়ে সুদর্শন উড়িতেছে সন্ধ্যার বাতাসে।
হয়তো শুনিবে এক লক্ষীপেঁচা ডাকিতেছে শিমুলের ডালে।
হয়তো খৈয়ের ধান সরাতেছে শিশু এক উঠানের ঘাসে।
রূপসার ঘোলা জলে হয়তো কিশোর এক সাদাছেঁড়া পালে
ডিঙ্গা বায় - রাঙ্গা মেঘে সাঁতরায়েঅন্ধকারে আসিতেছে নীড়ে,
দেখিবে ধবল বক; আমারে পাবে তুমি ইহাদের ভীড়ে।

 এই সব দিনরাত্রি

- জীবনানন্দ দাশ


মনে হয় এর চেয়ে অন্ধকারে ডুবে যাওয়া ভালো।
এইখানে
পৃথিবীর এই ক্লান্ত এ অশান্ত কিনারা দেশে
এখানে আশ্চর্য সব মানুষ রয়েছে।
তাদের সম্রাট নেই, সেনাপতি নেই;
তাদের হৃদয়ে কোনো সভাপতি নেই;
শরীর বিবশ হলে অবশেষে ট্রেড-ইউনিয়নের
কংগ্রেসের মতো কোনো আশা-হতাশার
কোলাহল নেই।

অনেক শ্রমিক আছে এইখানে।
আরো ঢের লোক আছে
সঠিক শ্রমিক নয় তারা।
স্বাভাবিক মধ্যশ্রেণী নিম্নশ্রেণী মধ্যবিত্ত শ্রেনীর পরিধি থেকে ঝ’রে
এরা তবু মৃত নয়; অন্তবিহীন কাল মৃতবৎ ঘোরে।
নামগুলো কুশ্রী নয়, পৃথিবীর চেনা-জানা নাম এই সব।
আমরা অনেক দিন এ-সব নামের সাথে পরিচিত; তবু,
গৃহ নীড় নির্দেশ সকলই হারায়ে ফেলে ওরা
জানে না কোথায় গেলে মানুষের সমাজের পারিশ্রমিকের
মতন নির্দিষ্ট কোনো শ্রমের বিধান পাওয়া যাবে;
জানে না কোথায় গেলে জল তেল খাদ্য পাওয়া যাবে;
অথবা কোথায় মুক্ত পরিচ্ছন্ন বাতাসের সিন্ধুতীর আছে।

মেডিকেল ক্যাম্বেলের বেলগাছিয়ার
যাদবপুরের বেড কাঁচড়াপাড়ার বেড সব মিলে কতগুলো সব?
ওরা নয়ে—সহসা ওদের হয়ে আমি
কাউকে শুধায়ে কোনো ঠিকমতো জবাব পাইনি।
বেড আছে, বেশি নেইে—সকলের প্রয়োজনে নেই।
যাদের আস্তানা ঘর তল্পিতল্পা নেই
হাসপাতালের বেড হয়তো তাদের তরে নয়।
বটতলা মুচিপাড়া তালতলা জোড়াসাঁকোে—আরো ঢের ব্যার্থ অন্ধকারে
যারা ফুটপাত ধ’রে অথবা ট্রআমের লাইন মাড়িয়ে চলছে
তাদের আকাশ কোন্‌ দিকে?
জানু ভেঙে পড়ে গেলে হাত কিছুক্ষন আশাশীল
হয়ে কিছু চায়ে—কিছু খোঁজে;
এ ছাড়া আকাশ আর নেই।
তাদের আকাশ সর্বদাই ফুটপাতে;
মাঝে মাঝে এম্বুলেন্‌স্‌ গাড়ির ভিতরে
রণক্লান্ত নাবিকেরা ঘরে
ফিরে আসে
যেন এক অসীম আকাশে।

এ-রকম ভাবে চ’লে দিন যদি রাত হয়, রাত যদি হয়ে যায় দিন,
পদচিহ্নময় পথ হয় যদি দিকচিহ্নহীন,
কেবলই পাথুরেঘাটা নিমতলা চিৎপুরে—
খালের এপার-ওপার রাজাবাজারের অস্পষ্ট নির্দেশে
হাঘরে হাভাতেদের তবে
অনেক বেডের প্রয়োজন;
বিশ্রামের প্রয়োজন আছে;
বিচিত্র মৃত্যুর আগে শান্তির কিছুটা প্রয়োজন।
হাসপাতালের জন্য যাদের অমূল্য দাদন,
কিংবা যারা মরণের আগে মৃতদের
জাতিধর্ম নির্বিচারে সকলকেে—সব তুচ্ছতম আর্তকেও
শরীরের সান্ত্বনা এনে দিতে চায়,
কিংবা যারা এইসব মৃত্যু রোধ করে এক সাহসী পৃথিবী
সুবাতাস সমুজ্জ্বল সমাজ চেয়েছেে—
তাদের ও তাদের প্রতিভা প্রেম সংকল্পকে ধন্যবাদ দিয়ে
মানুষকে ধন্যবাদ দিয়ে যেতে হয়।
মানুষের অনিঃশেষ কাজ চিন্তা কথা
রক্তের নদীর মতো ভেসে গেলে, তারপর, তবু, এক অমূল্য মুগ্ধতা
অধিকার করে নিয়ে ক্রমেই নির্মল হতে পারে।

ইতিহাস অর্ধসত্যে কামাচ্ছন্ন এখনো কালের কিনারায়;
তবুও মানুষ এই জীবনকে ভালোবাসে; মানুষের মন
জানে জীবনের মানে : সকলের ভালো ক’রে জীবনযাপন।
কিন্তু সেই শুভ রাষ্ট্র ঢের দূরে আজ।
চারি দিকে বিকলাঙ্গ অন্ধ ভিড়ে—অলীক প্রয়াণ।
মন্বন্তর শেষ হলে পুনরায় নব মন্বন্তর;
যুদ্ধ শেষ হয়ে গেলে নতুন যুদ্ধের নান্দীরোল;
মানুষের লালসার শেষ নেই;
উত্তেজনা ছাড়া কোনো দিন ঋতু ক্ষণ
অবৈধ সংগম ছাড়া সুখ
অপরের সুখ ম্লান করে দেওয়া ছাড়া প্রিয় সাধ নেই।
কেবলই আসন থেকে বড়ো, নবতর
সিংহাসনে যাওয়া ছাড়া গতি নেই কোনো।
মানুষের দুঃখ কষ্ট মিথ্যা নিষ্ফলতা বেড়ে যায়।

মনে পড়ে কবে এক রাত্রির স্বপ্নের ভিতরে
শুনেছি একটি কুষ্ঠকলঙ্কিত নারী
কেমন আশ্চর্য গান গায়;
বোবা কালা পাগল মিনসে এক অপরূপ বেহালা বাজায়;
গানের ঝংকারে যেন সে এক একান্ত শ্যাম দেবদারুগাছে
রাত্রির বর্ণের মতো কালো কালো শিকারী বেড়াল
প্রেম নিবেদন করে আলোর রঙের মতো অগণন পাখিদের কাছে;
ঝর্‌ ঝর্‌ ঝর্‌
সারারাত শ্রাবণের নির্গলিত ক্লেদরক্ত বৃষ্টির ভিতর
এ পৃথিবী ঘুম স্বপ্ন রুদ্ধশ্বাস
শঠতা রিরংসা মৃত্যু নিয়ে
কেমন প্রদত্ত কালো গণিকার উল্লোল সংগীতে
মুখের ব্যাদান সাধ দুর্দান্ত গণিকালয়ে—নরক শ্মশান হল সব।
জেগে উঠে আমাদের আজকের পৃথিবীকে এ-রকম ভাবে অনুভব
আমিও করেছি রোজ সকালের আলোর ভিতরে
বিকেলে-রাত্রির পথে হেঁটে;
দেখেছি রাজনীগন্ধা নারীর শরীর অন্ন মুখে দিতে গিয়ে
আমরা অঙ্গার রক্ত: শতাব্দীর অন্তহীন আগুনের ভিতরে দাঁড়িয়ে।

এ আগুন এত রক্ত মধ্যযুগ দেখেছে কখনও?
তবুও সকল কাল শতাব্দীকে হিসেব নিকেশ করে আজ
শুভ কাজ সূচনার আগে এই পৃথিবীর মানবহৃদয়
স্নিগ্ধ হয়-বীতশোক হয়?
মানুষের সব গুণ শান্ত নীলিমার মতো ভালো?
দীনতা: অন্তিম গুণ, অন্তহীন নক্ষত্রের আলো।

 সময় সেতু পথে

 - জীবনানন্দ দাশ

 ভোরের বেলায় মাঠ প্রান্তর নীলকন্ঠ পাখি,
দুপুরবেলার আকাশে নীল পাহাড় নীলিমা,
সারাটি দিন মীনরৌদ্রমুখর জলের স্বর, -
অনবসিত বাহির-ঘরের ঘরণীর এই সীমা।
তবুও রৌদ্র সাগরে নিভে গেল;
বলে গেল : ‘অনেক মানুষ মরে গেছে'; ‘অনেক নারীরা কি
তাদের সাথে হারিয়ে গেছে?’ - বলতে গেলাম আমি;
উঁচু গাছের ধূসর হাড়ে চাঁদ না কি সে পাখি
বাতাস আকাশ নক্ষত্র নীড় খুঁজে
বসে আছে এই প্রকৃতির পলকে নিবড়ি হয়ে;
পুরুষনারী হারিয়ে গেছে শষ্প নদীর অমনোনিবেশে,
অমেয় সুসময়ের মতো রয়েছে হৃদয়ে ।

 যতিহীন

 - জীবনানন্দ দাশ

 বিকেলবেলা গড়িয়ে গেলে অনেক মেঘের ভিড়
কয়েক ফলা দীর্ঘতম সূর্যকিরণ বুকে
জাগিয়ে তুলে হলুদ নীল কমলা রঙের আলোয়
জ্বলে উঠে ঝরে গেল অন্ধকারের মুখে।
যুবারা সব যে যার ঢেউয়ে -
মেয়েরা সব যে যার প্রিয়ের সাথে
কোথায় আছে জানি না তো;
কোথায় সমাজ অর্থনীতি? - স্বর্গগামী সিড়ি
ভেঙে গিয়ে পায়ের নিচে রক্তনদীর মতো, -
মানব ক্রমপরিণতির পথে লিঙ্গশরীরী
হয়ে কি আজ চারি দিকে গণনাহীন ধুসর দেয়ালে
ছড়িয়ে আছে যে যার দ্বৈপসাগর দখল ক’রে!
পুরাণপুরুষ, গণমানুষ, নারীপুরুষ, মানবতা, অসংখ্য বিপ্লব
অর্থবিহীন হয়ে গেলে―তবু আরেক নবীনতর ভোরে
সার্থকতা পাওয়া যাবে ভেবে মানুষ সঞ্চারিত হয়ে
পথে পথে সবের শুভ নিকেতনের সমাজ বানিয়ে
তবুও কেবল দ্বীপ বানাল যে যার নিজের অবক্ষয়ের জলে।
প্রাচীন কথা নতুন ক’রে এই পৃথিবীর অনন্ত বোনভায়ে।
ভাবছে একা একা ব’সে
যুদ্ধ রক্ত রিরংসা ভয় কলরোলের ফাঁকে:
আমাদের এই আকাশ সাগর আঁধার আলোয় আজ
যে দোর কঠিন; নেই মনে হয়; - সে দ্বার খুলে দিয়ে
যেতে হবে আবার আলোয় অসার আলোর ব্যসন ছাড়িয়ে।

 অনেক নদীর জল

 - জীবনানন্দ দাশ

 অনেক নদীর জল উবে গেছে  -
ঘর বাড়ি সাঁকো ভেঙে গেল;
সে-সব সময় ভেদ ক’রে ফেলে আজ
কারা তবু কাছে চলে এল ।
যে সূর্য অয়নে নেই কোনো দিন,
- মনে তাকে দেখা যেত যদি -
যে নারী দেখে নি কেউ — ছ-সাতটি তারার তিমিরে
হৃদয়ে এসেছে সেই নদী ।
তুমি কথা বল - আমি জীবন-মৃত্যুর শব্দ শুনি :
সকালে শিশিরকণা যে-রকম ঘাসে
অচিরে মরণশীল হয়ে তবু সূর্যে আবার
মৃত্যু মুখে নিয়ে পরদিন ফিরে আসে।
জন্মতারকার ডাকে বারবার পৃথিবীতে ফিরে এসে আমি
দেখেছি তোমার চোখে একই ছায়া পড়ে :
সে কি প্রেম? অন্ধকার? - ঘাস ঘুম মৃত্যু প্রকৃতির
অন্ধ চলাচলের ভিতরে ।
স্থির হয়ে আছে মন; মনে হয় তবু
সে ধ্রুব গতির বেগে চলে,
মহা-মহা রজনীর ব্রহ্মান্ডকে ধরে;
সৃষ্টির গভীর গভীর হংসী প্রেম
নেমেছে  -এসেছে আজ রক্তের ভিতরে ।
‘এখানে পৃথিবী আর নেই - ’
ব’লে তারা পৃথিবীর জনকল্যাণেই
বিদায় নিয়েছে হিংসা ক্লান্তির পানে;
কল্যাণ কল্যাণ; এই রাত্রির গভীরতর মানে।
শান্তি এই আজ;
এইখানে স্মৃতি;
এখানে বিস্মৃতি তবু; প্রেম
ক্রমায়াত আঁধারকে আলোকিত করার প্রমিতি ।


চারিদিকে প্রকৃতির

  - জীবনানন্দ দাশ

 চারিদিকে প্রকৃতির ক্ষমতা নিজের মতো ছড়ায়ে রয়েছে।
সূর্য আর সূর্যের বনিতা তপতী—
মনে হয় ইহাদের প্রেম
মনে ক’রে নিতে গেলে, চুপে
তিমিরবিদারী রীতি হয়ে এরা আসে
আজ নয়—কোনো এক আগামী আকাশে।
অন্নের ঋণ,বিমলিন স্মৃতি সব
বন্দরবস্তির পথে কোনো এক দিন
নিমেষের রহস্যের মতো ভুলে গিয়ে
নদীর নারীর কথা—আরো প্রদীপ্তির কথা সব
সহসা চকিত হয়ে ভেবে নিতে গেলে বুঝি কেউ
হৃদয়কে ঘিরে রাখে, দিতে চায় একা আকাশের
আশেপাশে অহেতুক ভাঙা শাদা মেঘের মতন।
তবুও নারীর নাম ঢের দূরে আজ,
ঢের দূরে মেঘ;
সারাদিন নিলেমের কালিমার খারিজের কাজে মিশে থেকে
ছুটি নিতে ভালোবেসে ফেলে যদি মন
ছুটি দিতে চায় না বিবেক।
মাঝে মাঝে বাহিরের অন্তহীন প্রসারের
থেকে মানুষের চোখে-পড়া-না-পড়া সে কোনো স্বভাবের
সুর এসে মানবের প্রাণে
কোনো এক মানে পেতে চায়:
যে-পৃথিবী শুভ হতে গিয়ে হেরে গেছে সেই ব্যর্থতার মানে।
চারিদিকে কলকাতা টোকিয়ো দিল্লী মস্কৌ অতলান্তিকের কলরব,
সরবরাহের ভোর,
অনুপম ভোরাইয়ের গান;
অগণন মানুষের সময় ও রক্তের যোগান
ভাঙে গড়ে ঘর বাড়ি মরুভূমি চাঁদ
রক্ত হাড় বসার বন্দর জেটি ডক;
প্রীতি নেই—পেতে গেলে হৃদয়ের শান্তি স্বর্গের
প্রথম দুয়ারে এসে মুখরিত ক’রে তোলে মোহিনী নরক।
আমাদের এ পৃথিবী যতদূর উন্নত হয়েছে
ততদূর মানুষের বিবেক সফল।
সে চেতনা পিরামিডে পেপিরাসে-প্রিন্টিং-প্রেসে ব্যাপ্ত হয়ে
তবুও অধিক আধুনিকতর চরিত্রের বল।
শাদাসিদে মনে হয় সে সব ফসল:
পায়ের চলার পথে দিন আর রাত্রির মতন—
তবুও এদের গতি স্নিগ্ধ নিয়ন্ত্রিত ক’রে বার বার উত্তরসমাজ
ঈষৎ অনন্যসাধারণ।

স্বপ্ন

   - জীবনানন্দ দাশ

 পান্ডুলিপি কাছে রেখে ধূসর দীপের কাছে আমি
নিস্তব্ধ ছিলাম ব'সে;
শিশির পড়িতেছিলো ধীরে-ধীরে খ'সে;
নিমের শাখার থেকে একাকীতম কে পাখি নামি

উড়ে গেলো কুয়াশায়,  - কুয়াশার থেকে দূর-কুয়াশায় আরো।
তাহারি পাখার হাওয়া প্রদীপ নিভায়ে গেলো বুঝি?
অন্ধকার হাৎড়ায়ে ধীরে-ধীরে দেশলাই খুঁজি;
যখন জ্বালিব আলো কার মুখ দেখা যাবে বলিতে কি পারো?

কার মুখ? —আমলকী শাখার পিছনে
শিঙের মত বাঁকা নীল চাঁদ একদিন দেখেছিলো তাহা;
এ-ধূসর পান্ডুলিপি একদিন দেখেছিলো, আহা,
সে-মুখ ধূসরতম আজ এই পৃথিবীর মনে।

তবু এই পৃথিবীর সব আলো একদিন নিভে গেলে পরে,
পৃথিবীর সব গল্প একদিন ফুরাবে যখন,
মানুষ র'বে না আর, র'বে শুধু মানুষের স্বপ্ন তখনঃ
সেই মুখ আর আমি র'বো সেই স্বপ্নের ভিতরে।

 সূর্যতামসী


   - জীবনানন্দ দাশ

কোথাও পাখির শব্দ শুনি;
কোনো দিকে সমুদ্রের সুর;
কোথাও ভোরের বেলা র'য়ে গেছে - তবে।
অগণন মানুষের মৃত্যু হ'লে - অন্ধকারে জীবিত ও মৃতের হৃদয়
বিস্মিতের মতো চেয়ে আছে;
এ কোন সিন্ধুর সুর:
মরণের - জীবনের?
এ কি ভোর?
অনন্ত রাত্রির মতো মনে হয় তবু।
একটি রাত্রির ব্যথা সয়ে -
সময় কি অবশেষে এ-রকম ভোরবেলা হয়ে
আগামী রাতের কালপুরুষের শস্য বুকে ক'রে জেগে ওঠে?
কোথাও ডানার শব্দ শুনি;
কোন দিকে সমুদ্রের সুর -
দক্ষিণের দিকে,
উত্তরের দিকে,
পশ্চিমের পানে?

সৃজনের ভয়াবহ মানে;
তবু জীবনের বসন্তের মতন কল্যাণে
সূর্যালোকিত সব সিন্ধু-পাখিদের শব্দ শুনি;
ভোরের বদলে তবু সেইখানে রাত্রি করোজ্জ্বল
ভিয়েনা, টোকিও, রোম, মিউনিখ - তুমি?
সার্থবাহ, সার্থবাহ, ওইদিকে নীল
সমুদ্রের পরিবর্তে আটলাণ্টিক চার্টার নিখিল মরুভূমি!
বিলীন হয় না মায়ামৃগ - নিত্য দিকদর্শিন;
যা জেনেছে - যা শেখেনি -
সেই মহাশ্মশানের গর্ভাঙ্কে ধূপের মত জ্ব'লে
জাগে না কি হে জীবন - হে সাগর -
শকুন্ত-ক্রান্তির কলরোলে।

  একটি নক্ষত্র আসে


  - জীবনানন্দ দাশ

একটি নক্ষত্র আসে; তারপর একা পায়ে চ'লে
ঝাউয়ের কিনার ঘেঁষে হেমন্তের তারাভরা রাতে
সে আসবে মনে হয়; - আমার দুয়ার অন্ধকারে
কখন খুলেছে তার সপ্রতিভ হাতে!
হঠাৎ কখন সন্ধ্যা মেয়েটির হাতের আঘাতে
সকল সমুদ্র সূর্য সত্বর তাকে ঘুম পাড়িয়ে রাত্রি হতে পারে
সে এসে এগিয়ে দেয়;
শিয়রে আকাশ দূর দিকে
উজ্জ্বল ও নিরুজ্জ্বল নক্ষত্র গ্রহের আলোড়নে
অঘ্রানের রাত্রি হয়;
এ-রকম হিরন্ময় রাত্রি ইতিহাস ছাড়া আর কিছু রেখেছে কি মনে।

শেষ ট্রাম মুছে গেছে, শেষ শব্দ, কলকাতা এখন
জীবনের জগতের প্রকৃতির অন্তিম নিশীথ;
চারিদিকে ঘর বাড়ি পোড়ো-সাঁকো সমাধির ভিড়;
সে অনেক ক্লান্তি ক্ষয় অবিনশ্বর পথে ফিরে
যেন ঢের মহাসাগরের থেকে এসেছে নারীর
পুরোনো হৃদয় নব নিবিড় শরীরে।

  হায় চিল


   - জীবনানন্দ দাশ

হায় চিল, সোনালী ডানার চিল, এই ভিজে মেঘের দুপুরে
তুমি আর কেঁদো নাকো উড়ে-উড়ে ধানসিঁড়ি নদীটির পাশে!
তোমার কান্নার সুরে বেতের ফলের মতো তার ম্লান চোখ মনে আসে!
পৃথিবীর রাঙা রাজকন্যাদের মতো সে যে চলে গেছে রূপ নিয়ে দূরে;
আবার তাহারে কেন ডেকে আনো? কে হায় হৃদয় খুঁড়ে
বেদনা জাগাতে ভালোবাসে!
হায় চিল, সোনালী ডানার চিল, এই ভিজে মেঘের দুপুরে
তুমি আর উড়ে-উড়ে কেঁদো নাকো ধানসিঁড়ি নদীটির পাশে!

  স্বভাব

    - জীবনানন্দ দাশ

 যদিও আমার চোখে ঢের নদী ছিলো একদিন
পুনরায় আমাদের দেশে ভোর হ'লে,
তবুও একটি নদী দেখা যেতো শুধু তারপর;
কেবল একটি নারী কুয়াশা ফুরোলে
নদীর রেখার পার লক্ষ্য ক'রে চলে;
সূর্যের সমস্ত গোল সোনার ভিতরে
মানুষের শরীরের স্থিরতর মর্যাদার মতো
তার সেই মূর্তি এসে পড়ে।
সূর্যের সম্পূর্ণ বড় বিভোর পরিধি
যেন তার নিজের জিনিস।
এতদিন পরে সেইসব ফিরে পেতে
সময়ের কাছে যদি করি সুপারিশ
তা'হলে সে স্মৃতি দেবে সহিষ্ণু আলোয়
দু-একটি হেমন্তের রাত্রির প্রথম প্রহরে;
যদিও লক্ষ লোক পৃথিবীতে আজ
আচ্ছন্ন মাছির মত মরে -
তবুও একটি নারী 'ভোরের নদীর
জলের ভিতরে জল চিরদিন সূর্যের আলোয় গড়াবে'
এ রকম দু-চারটে ভয়াবহ স্বাভাবিক কথা
ভেবে শেষ হ'য়ে গেছে একদিন সাধারণভাবে।

মহানগরী খানছা -ইবনে বতুতার রোমঞ্চকর অভিযান

ইবনে বতুতার  রোমঞ্চকর অভিযান

মহানগরী খানছা

চীনের কালান থেকে চৌদ্দ দিন পর জয়তুনে ফিরে আসলাম।শুনলাম খানের ফরমান এসে পৌঁছেছে ।ফরমানে আমাদেরকে রাজকীয় মেহমান হিসাবে গণ্য করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে এবং নদী পথে বা সড়ক পথে যেখান দিয়ে খুশী খানবালিপে যেতে পারব।চীনের বিখ্যাত আবেহায়াত নদী পথেই যাব ঠিক করলাম।
আমাদের যাত্রার জন্য খানের পক্ষ থেকে রাজকীয় নৌকা সজ্জিত করা হলো।প্রয়োজনীয় লোকজনও সাখে দেয়া হলো ।শাহী মেহমান হিসাবে আমরা যাত্রা করলাম এবং দশ দিন পর গাঞ্জালফু নামে এক শহরে এসে পৌঁছলাম।শহরটি বেশ বড় এবং চারটি দূর্গ দ্বারা বেষ্টীত।
গাঞ্জালফুতে পনেরো দিন থেকে আবার আমরা রওয়ানা হলাম এবং নদীপথে চার দিন পর‘বাইওয়াম কুতলু’পৌঁছলাম এরং সেখান থেকে আরোও সতেরো দিন পর খানচা হ্যাংচৌ শহরে এসে পৌঁছলাম।
দুনিয়াতে যতো শহর দেখেছি তার মধ্যে সবচেয়ে বড় শহর হলো এই খানচা হ্যাংচৌ শহর।শহরটি ঘুরে আসতে তিনি দিন লাগে।চীনের অন্যান্য শহরের মতো এখানেও ঘরবাড়ীর সাথে বাগ-বাগিচা রয়েছে।আসলে ছয়টি উপশহর মিলে খানছা মহানগরী গড়ে উঠেছে ।প্রতিটি উপশহর আলাদা আলাদা দূর্গদ্বারা বেষ্টিত।
শহরে পৌঁছে দেখলাম ওখানকার কাজী ফখরদ্দীন ও শেখুল ইসলাম সহকারে খানছার বিশিষ্ট ব্যক্তি ওসমান বিন আরফান মিশরীয় বংশের সন্তানদের নিয়ে ঢোল তবলা ও বাঁশি  বাঁজিয়ে সাদা নিশান উড়িয়ে এসে আমাদের স্বাগত জানালেন।শহরের আমীরও স্বাগত জানালেন।শহরের আমীরও আমাদের অভ্যর্থনা জানাতে দলবল নিয়ে এলেন।
খানছার ছয়টি উপশহরই আবার একটি বড় দূর্গ দ্বারা ঘেরা।প্রথম উপশহরে প্রহরীরা বসবাস করে।কাজীর কাছে শুনলাম এই প্রহরীদের সংখ্যা প্রায় বারো হাজার।এখানে পৌঁছতে আমাদের রাত হয়ে যায়।তাই প্রহরীদের অধিনায়কের বাড়ীতে থাকার ব্যবস্থা করা হয়।
পরদিন আমরা  দ্বিতীয় শহরে গেলাম।এখানকার ইহুদী দরজা দিয়ে এই উপশহরে প্রবেশ করলাম।এই শহরে ইহুদী খিষ্টান সূর্যপূজারী তুর্কীরা বসবাস করে।রাতে এখানকার আমীরের বাড়ীতে আমরা মেহমান হলাম।পরদিন তৃতীয় উপশহরে ডুকলাম।এটি মুসলমানদের এলাকা।এখানে অনেক বাজার ও কয়েকটি মসজিদও রয়েছে।আমরা যখন প্রবেশ করি তখন মোয়াজ্জিনরা যোহরের আযান দিচ্ছিল।এই শহরের  মিশরীয় খানদানের ওসমান নামের এক লোকের বাড়ীতে আমাদের থাকার ব্যবস্থা করা হলো।এখানে পনেরো দিন ছিলাম।প্রতিদিনই আমাদের কোন না কোন বাড়ীতে দাওয়াত করা হয়েছে ।এখানে থাকতেই প্রতিদিন ঘোড়ায় চড়ে আমি শহরের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরেছি।।

Monday, October 5, 2015

Tom and Jerry Beach টম এন্ড জেরী


ভারতীয় ছায়াছবির হিন্দি জনপ্রিয় গান


নেপাল এর গান


ভূটানের মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশে একটি ভূটানী গান।


চীনের শিকল পরা গোলাম -ইবনে বতুতা

ইবনে বতুতার রোমঞ্চকর অভিযান
 চীনের শিকল পরা গোলামের কথা!

চীন দেশীয় এই খানছার চতুর্থ অংশে বয়ে গেছে তিনটি নহর।এদের মধ্যে রয়েছে তিনটি শাখা নদী।ছোট ছোট নৌকা চলাচল করে নদী গুলোতে।জনগণ তাদের প্রয়োজনীয় সদাইপাতি ও কয়লা জাতীয় জ্বালানী  পাথর আনা নেওয়া করে।এই নদীতে অনেক বিলাসী বিনোদন নৌকাও চলাচল করতে দেখলাম।
খানছার এই অংশের মাঝখানে রয়েছে বিশাল এক দূর্গ।এখানে কাজ করে হাজার হাজার দক্ষ কারিগর।কারিগররা এখানে শূল্যবান কাপড় বোনে আর যুদ্ধ সরঞ্জাম তৈরী করে।আমির কুরতাইয়ের কাছে শুনেছি এই দূর্গে এক হাজার ছয়শত ওস্তাদ কারিগর রয়েছে।প্রত্যেকের অধীনে আবার তিন বা চার জন করে শিক্ষানবীশ কাজ করছে।এরা সবাই খানের গোলামদের অন্তর্ভূক্ত ।তাদের পায়ে লোহার শিকল পরানো।এরা শহরের বাজারগুলোতে যেতে পারে, তবে শহরের ফটকের বাহিরে যাওয়ার অনুমতি নেই।প্রতিদিন একশো দলে বাগ হয়ে এদেরকে আমির কুরতাইয়ের সামনে হাজিরা দিতে হয়।
নিয়ম হলো দশ বছর কাজ করার পর গোলামদের পা হতে শিকল খুলে দেয়া হয় তাদের স্বাধীনতা দেয়া হয় তারা চীনের যে কোন যায়গায় মুক্ত জীবন যাপন করতে পারবেন।তবে খানের সাম্রাজ্যের বাহিরে যেতে পারবেন না।অথবা ইচ্ছে থাকলে আগের কাজে নিয়োজিত থাকতে পারবেন,পায়ে শিকল না পরেই এজন্য তারা অতিরিক্ত বেতন ভাতা পাবেন।এভাবে এসব গোলামদের বয়স যখন পঞ্চাশ বছর হবে তখন তাদের অন্য কোন কাজও করতে হয় না।তখন সরকারী তহবিল হতে উপযুক্ত অবসর ভাতা দেয়া হয়।
এছাড়া রাজ্যের অন্যান্য কর্মচারীরার পঞ্চাশ বছর হলে অবসর নেন এবং সরকার হতে উপযুক্ত ভাতা পান।ষাট বছর বয়স হলে তাঁদেরকে সকল প্রকার আইনী শাস্তি থেকে রেহাই দেয়া হয়।তখন তাঁদেরকে শিশুর মতো নিষ্পাপ গণ্য করা হয়।চীনে এই ধরণের বয়স্ক লোকেরা খুবিই সম্মানীত।তাঁদেরকে জনসাধারণ‘আতা’ বা পিতা বলে সম্বোধন করেন।

ট্রেন -শামসুর রাহমান


Saturday, October 3, 2015

প্রেমের সময় বয়স

প্রেমের সময় বয়স

জীবনে সবাই কারো না কারো প্রেমে পড়েন। অনেকের ভাগ্যে এমনও হয়, কাউকে দারুণ ভালোবেসেও তাকে বোঝাতেই পারেন না মনের কথা। কাউকে পছন্দ হয়ে গেলে তার মনোযোগ কেড়ে নেওয়াটা জরুরি হয়ে ওঠে। প্রেম নিবেদনকে তৃপ্তিদায়ক ও সর্বাধিক উপভোগ্য করতে হলে আবেগের প্রদর্শন ও সুযোগের সদ্ব্যবহারকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়। কিন্তু অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘুম বিষয়ক বিশেষজ্ঞ ড. কেলি তার গবেষণায় বলেন, প্রেমিক-প্রেমিকা কিংবা স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ভালোবাসা অর্পণ সফল করতে হলে সময়জ্ঞানটাই সবচেয়ে বড় বিষয়।
গবেষনায় প্রকাশ পেয়েছে, মানবদেহ পরিচালিত হয় ‘সার্কাডিয়ান রিদম’ দ্বারা। সূর্যের আলোর সঙ্গে খাপ খাইয়ে চলতে আমাদের দেহ এই ছন্দ মেনে চলে। ঘুম এবং যৌনতার সঠিক সময় বের করতে পারলে উভয় ক্ষেত্রেই সর্বাধিক তৃপ্তি মিলতে পারে। বয়সের সঙ্গেও সার্কাডিয়ান রিদম বদলাতে থাকে। এসব বিষয়ের সঠিক সমন্বয় করতে হয়। বিশেষজ্ঞ জানাচ্ছেন, বয়সের সঙ্গে প্রেম নিবেদনের সঠিক সময়ের কথা।
.বিশের কোঠায় যাদের বয়স, দিনের যেকোনো সময় তাদের দেহ যৌন চাহিদা অনুভব করতে পারে। ড. কেলি বলেন, এ বয়সীরা যেকোনো সময় সঙ্গী-সঙ্গিনীর সাথে অন্তরঙ্গ হতে পারেন। এ বয়সীরা সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ঘুম থেকে ওঠা এবং রাত ১টার দিকে ঘুমাতে যাওয়ায় সর্বাধিক উপকার পাবেন।
.ত্রিশের কোঠা প্রেম ও সেক্স করার স্বর্ণসময়। সূর্যের আলো দেহে টেসস্টোটেরন হরমোনের ক্ষরণ বৃদ্ধি করে। এ বয়সীদের দেহঘড়ি তাদের সকালে জাগিয়ে তোলে। তাদের রাত ৮টার দিকে ডিনার সেরে ফেলা ভালো। মধ্যরাত তাদের বিছানায় যাওয়ার সেরা সময়।
.চল্লিশের কোঠায় যারা আছেন, তাদের জন্যে প্রেম নিবেদনের সেরা সময় রাত ১০টা ২০ মিনিট। গোটা দিন পেরিয়ে এ সময়টাতেই দেহে সর্বাধিক পরিমাণ অক্সিটোসিন হরমোন নিঃসৃত হয়। এতে দেহ অনেক শান্ত ও স্থিত হয়ে আসে। মধ্যরাতের আগেই তাদের ভালোবাসা পূর্ণতা পেতে পারে। ঘুম থেকে ওঠার আদর্শ সময় হবে সকাল ৭টা ৫০ মিনিট।
.পঞ্চাশের কোঠায় বিকেলেই সেক্স সবচেয়ে উপভোগ্য হতে পারে। সকালের ব্যস্ত সময় শুরু হওয়ার জন্যে এ বয়সীদের রাত সাড়ে ১০টার মধ্যেই ঘুমিয়ে যাওয়া উচিত।
.ষাট বছরে যারা পা রেখেছেন তাদের জন্যে রাত ৮টা উত্তেজনাকর মুহূর্ত হতে পারে। এ বয়সে রাত ১০টার দিকে মেলাটোনিন হরমোনের ক্ষরণ বৃদ্ধি পায়। এটি ঘুমকে গভীর করে। তাই তাদের সাড়ে ৬টার দিকে ডিনারের কাজ সেরে ফেলা উত্তম।
.সত্তর বছর বয়সে সেক্স মানুষকে তৃপ্তিদায়ক ঘুম ও বিশ্রামের সুযোগ করে দিতে পারে। এ বয়সীরা ঘুমের মাঝে বার বার জেগে যেতে পারেন। তাই যত দ্রুত সম্ভব বিছানায় গা এলিয়ে দিতে হবে। এদের সকাল সাড়ে ৬টার দিকে নাস্তা করা উচিত। দুপুর শুরু হতেই লাঞ্চ করাটা স্বাস্থ্যের জন্যে ভালো।

- এ ওয়ান নিউজ

Adobe Photoshop দিয়ে ছবি রিসাইজ করা

ওয়েব পেজ দ্রুত লোড করার পদ্ধতি এবং  Adobe Photoshop দিয়ে ছবি রিসাইজ করা।
সকলকে সালাম ও সুভেচ্ছা।আশা করি ভাল আাছেন।
আপনার একটি ওয়েব পেজ আছে।আপনি আপনার লেখার গুনগত মানে সন্তোষ্ট হল্ওে ভিজিটর তেমন আপনার ওয়েব পেজে বা আপনার ব্লগে তেমন আসেন না ।তার একমাত্র কারণ হতে পারে আপনার ওয়েব পেজটি দ্রুত লোড হয় না।এমতাবস্থায় আপনার ওয়েব পেজটির স্পিড কেমন তা জানতে হলে Google page Speed এ চেক করুন।যদি আপনার ওয়েব পেজটি স্লো হয় বা সমস্যা দেখায় ,তবে নির্দেশনা মোতাবেক প্রয়োজনীয় এডিট করে আপনার ওয়েব পেজটিকে দ্রুত করতে পারবেন।

ওয়েবপেজ দ্রুত লোড না হওয়ার আরেকটি প্রধাণ কারণ ছবি রিসাইজ না করে পোষ্ট করা। Adobe Photoshop দিয়ে ছবি  সহজেই  রিসাইজ করা যায় ।
 Adobe Photoshop দিয়ে কিভাবে ছবি রিসাইজ করা যায় ?
তা জানতে হলে ভিডিওটি দেখুন ।

আশা করি এখন বুঝতে পারছেন।
ধন্যবাদ।

Another main cause of the webpage does not load quickly resize images to the post. You can easily resize photos with Adobe Photoshop. With Adobe Photoshop to resize?
Watch the video to find out how.


I hope you understand now.
Thanks.

Friday, October 2, 2015

লেটেষ্ট ভার্সন ফ্রি এন্টিভাইরাস Free Antivirus

আসসালামু আলাইকুম আশা করি সবাই ভাল আছেন। আজ আপনাদের জানাব কিভাবে লেটেষ্ট ভার্সন ফ্রি এন্টিভাইরাস(Free Antivirus) নেট হতে সংগ্রহ করা যায়।

সকল কম্পিউটার ব্যবহারকারীদের লেটেষ্ট ভার্সন ফ্রি এন্টি ভাইরাস(Free Antivirus) প্রয়োজন হয়।
এছাড়া কাম্পউটার চালনায় অন্যান্য লেটেষ্ট ভার্সন  প্রয়োজনীয় সফটওয়্যারও প্রয়োজন হয়।নতুন ব্যবহারকারীরা অনেকের কাছে ওয়েব সাইট ঘেটে প্রয়োজনীয় সফটওয়্যারটি খুঁজে পেতে সমস্যা হয় বা সময় সাপেক্ষ ব্যাপার হয়ে দাড়ায়।
যদি সহজেই প্রয়োজনীয় সফটওয়্যারটি পাওয়া যায় তাহলো তো খুব ভাল হয়।
তাই আজকে আপনাদেরকে কিভাবে সহজেই লেটেষ্ট ভার্সন ফ্রি এন্টিভাইরাস(Free Antivirus) সহ অন্যান্য সফটওয়্যার পওয়া যায় ,তার উপায় বাতলে দিব।
এখন নিম্নের নিদেশনা অনুস্মরণ করুন।তাহলে সহজেই আপনি অাপনার কাঙ্খিত লেটেষ্ট ভার্সন ফ্রি এন্টিভাইরাস (Free Antivirus) অথবা প্রয়োজনীয় সফটওয়্যারটি পাবেন।
প্রথমে এখানে ক্লিক করুন।
নিচের ছবির মতো প্রদর্শিত হবে।



অাপনার কাঙ্খিত লেটেষ্ট ভার্সন ফ্রি এন্টিভাইরাস (Free Antivirus) অথবা প্রয়োজনীয় সফটওয়্যারটি পাবেন।

সফটওয়্যারের সিরিয়াল কী বা সফটওয়্যারটি কিভাবে ফুল ভার্সন  করা যায় তা জানতে হলে এখানে ক্লিক করুন।
ধন্যবাদ।।

কান্ডারী হুশিয়ার! – কাজী নজরুল ইসলাম Kandari warned! - Kazi Nazrul Islam


দুর্গম গিরি, কান্তার-মরু, দুস্তর পারাবার
লঙ্ঘিতে হবে রাত্রি-নিশীথে, যাত্রীরা হুশিয়ার!
দুলিতেছে তরি, ফুলিতেছে জল, ভুলিতেছে মাঝি পথ,
ছিঁড়িয়াছে পাল, কে ধরিবে হাল, আছে কার হিম্মৎ?
কে আছ জোয়ান হও আগুয়ান হাঁকিছে ভবিষ্যৎ।
এ তুফান ভারী, দিতে হবে পাড়ি, নিতে হবে তরী পার।
তিমির রাত্রি, মাতৃমন্ত্রী সান্ত্রীরা সাবধান!
যুগ-যুগান্তর সঞ্চিত ব্যথা ঘোষিয়াছে অভিযান।
ফেনাইয়া উঠে বঞ্চিত বুকে পুঞ্জিত অভিমান,
ইহাদের পথে নিতে হবে সাথে, দিতে হবে অধিকার।
অসহায় জাতি মরিছে ডুবিয়া, জানে না সন্তরন
কান্ডারী! আজ দেখিব তোমার মাতৃ মুক্তিপন।
হিন্দু না ওরা মুসলিম? ওই জিজ্ঞাসে কোন জন?
কান্ডারী! বল, ডুবিছে মানুষ, সন্তান মোর মার
গিরি সংকট, ভীরু যাত্রীরা গুরু গরজায় বাজ,
পশ্চাৎ-পথ-যাত্রীর মনে সন্দেহ জাগে আজ!
কান্ডারী! তুমি ভুলিবে কি পথ? ত্যাজিবে কি পথ-মাঝ?
করে হানাহানি, তবু চলো টানি, নিয়াছ যে মহাভার!
কান্ডারী! তব সম্মুখে ঐ পলাশীর প্রান্তর,
বাঙালীর খুনে লাল হল যেথা ক্লাইভের খঞ্জর!
ঐ গঙ্গায় ডুবিয়াছে হায়, ভারতের দিবাকর!
উদিবে সে রবি আমাদেরি খুনে রাঙিয়া পূনর্বার।
ফাঁসির মঞ্চে গেয়ে গেল যারা জীবনের জয়গান,
আসি অলক্ষ্যে দাঁড়ায়েছে তারা, দিবে কোন্ বলিদান
আজি পরীক্ষা, জাতির অথবা জাতের করিবে ত্রাণ?
দুলিতেছে তরী, ফুলিতেছে জল, কান্ডারী হুশিয়ার!


Kandari warned! - Kazi Nazrul Islam


Giri impassable, Deep-desert, ocean dustara

Will langhite night-night, warn the passengers!

Duliteche vegetable, phuliteche water, bhuliteche Waterman Way,

Chimriyache Pal, who shall be on the helm, there is himmat?

If you are a young man hamkiche advancing the future.

The heavy storm, will have to travel, to take the boat over.

Whale night matrmantri santrira careful!

Age-era campaign ghosiyache accumulated pain.

Seethe up Huff denied accumulated in the chest,

These will take you on the way, to the right.

Mariche helpless race to the bottom, do not know santarana

Kandari! Today dekhiba ransom your mother.

They Hindu or Muslim? The jijnase any ideas?

Kandari! Ball, dubiche people, children, my mother,

Giri crisis, cowardly passengers garajaya lightning guru,

The backward path as passengers wonders today!

Kandari! You have forgotten the way? What tyajibe middle path?

The dash, but would have been right, that mahabhara niyacha!

Kandari! Thy before the wilderness of Plassey,

Clive's bloody red horizon of the yetha hanjar!

Oh dubiyache the Ganges, India Shut up!

The company raniya punarbara udibe amaderi murderous.

Who was sentenced to death on stage to sing the joy of life,

Damrayeche they come invisibly, what would sacrifice

Test today, race or caste shall relief?

Duliteche boat, phuliteche water kandari warned!

Thursday, October 1, 2015

Wife gift to a friend বন্ধুকে বউ উপহার

Wife gift to a friend
Farman Ali, the two wives of Maulvi kulaura prthimapasara.
Masuk dear friend Mia's wife left the house and gone Affair involved.
Farman Ali was a friend of trouble, trouble.
 So sorry to ease his friend's wife gave one to a friend.
 Farman Ali, a resident of a slum in the nursery owner manachara karmadha Union (52) and kulaura municipality of jayapasa Masuk Mia (37) days from the deep friendly relationship between.
Masuk Mia's wife, three daughters and a son a few days ago, the love affair with the drawn-in boyfriend fled.

Farman Ali, the wife of his friend struck a responsive chord, Friend grief sad Farman Ali. Farman Ali, the wife of the house. He was pleased with the wife is a gift to a friend. Such a desire, as he implemented.

Rabirabajarastha prthimapasa union office on Tuesday night, Dr. Farman Ali nuretuna his second wife, Begum (3) is not divorced. 0 of 4 witnesses after he and a friend set Masuk Kabir Mia nuretuna money to marry the queen.

Masuk with new wife Mia has jayapasastha home.
Masuk Mia manatalaya domicile in Habiganj. The rickshaw driver by profession.




বন্ধুকে বউ উপহার !
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার পৃথিমপাশার ফরমান আলীর নিজের ঘরে রয়েছে  দুজন স্ত্রী। আর প্রিয়তম বন্ধু মাসুক মিয়ার  স্ত্রী পরকীয়ায় জড়িয়ে ঘর ছেড়েছে।
বন্ধুর কষ্টে সহমর্মিত ফরমান আলী । তাই বন্ধুর দুঃখ লাঘবে নিজের এক বউকে তুলে দিলেন বন্ধুর হাতে।

 কর্মধা ইউনিয়নের মনছড়া বস্তির বাসিন্দা নার্সারি মালিক ফরমান আলী ওরফে বৈজ্ঞানিক (৫২) ও কুলাউড়া পৌরসভার জয়পাশা এলাকার মাসুক মিয়া (৩৭)-এর মধ্যে দীর্ঘদিন থেকে গভীর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক।
কিছুদিন আগে মাসুক মিয়ার স্ত্রী তিন মেয়ে ও এক ছেলে রেখে পরকীয়া প্রেমের টানে প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে যায়।

আর বন্ধুর বউয়ের এ বিষয়টি ফরমান আলীর মনে দাগ কাটে,বন্ধুর দু:খিত হয় ফরমান আলী। ফরমান আলীর ঘরে দুই বউ । তিনি মনস্থ করলেন এক বউকে উপহারস্বরূপ বন্ধুকে দিয়ে দেবেন। যেমন ইচ্ছা, তেমনি বাস্তবায়নও করলেন তিনি।

গত মঙ্গলবার রাতে পৃথিমপাশা ইউনিয়নের রবিরবাজারস্থ কাজী অফিসে গিয়ে ফরমান আলী তার ২য় স্ত্রী নূরেতুন বেগম (৩২) কে তালাক দেন। পরে তিনিসহ ৪ জন সাক্ষীর উপস্থিতিতে ২০ হাজার টাকা কাবিন ধার্য করে বন্ধু মাসুক মিয়ার সঙ্গে নূরেতুন বেগমের বিয়ে দিয়ে দেন।

নতুন বউকে নিয়ে মাসুক মিয়া তার জয়পাশাস্থ বাড়িতে উঠেছেন। মাসুক মিয়ার স্থায়ী নিবাস হবিগঞ্জের মনতলায়। পেশায় তিনি রিকশাচালক।



Google Online Security Blog: HTTPS support coming to Blogspot

Google Online Security Blog: HTTPS support coming to Blogspot

Pigeon speech bak bakum -বাক বাকুম পায়রা

Pigeon speech bak bakum
With the tire
Tomorrow harness bride
Sedan will be with gold.
 Sedan to the village Wien-
 Six carriers foot three .
 Pigeon speech sound bakum bak
 Three carriers bald head.
 Bak bakum kum bak kum!
Six carriers could sleep .
Stopped them, shouting orders
  Pigeon speech sound bakum bak
 Six bearer is stumbling
Where pigeons can fly?

Wednesday, September 30, 2015

দিন যায় কথা থাকে Din Jay Kotha Thake



দিন যায় কথা থাকে
Din Jay Kotha Thake

দিন যায় কথা থাকে
সে যে কথা দিয়ে রাখলো না
চলে যাবার আগে ভাবলো না
সেকথা লেখা আছে বুকে।
সে কথা নয়নে আগুন-আল্পনা আঁকে
স্মৃতির পাপিয়া “চোখ গেলো” বলে ডাকে
সে জ্বালা-যন্ত্রণা কাউকে বোলবো না,
বলবো আছি কী যে সুখে।।
মনপাখি তুই থাকরে খাঁচায় বন্দী,
আমি তো করেছি দুঃখের সঙ্গে সন্ধি।
কি আছে পাওনা, তার কাছে দেনা
যাক সে হিসাব চুকে।।

 শিল্পীঃ সুবীর নন্দী,কনকচাঁপা ও কিশোর
  বছরঃ১৯৭৯

If the day of the
He's not that bad with words
No thought had gone before
The keeper's chest.
Tonight he draws fire-Alpana
In memory of the Nightingale "was eye" call       
He is one of bolabo not irritated,
What I am happy to say that ..
You Thackeray manapakhi cage,
I've already come to terms with grief.
What owe a debt to him
He said he Chuke account ..

  Singer- Subir Nandi, kanakacampa
and Kishor

Wednesday, October 7, 2015

খণ্ডকালীন ও চুক্তিভিত্তিক চাকুরী ‘আধুনিক দাসত্বে’ পরিণত হচ্ছে

খণ্ডকালীন ও চুক্তিভিত্তিক চাকুরী ‘আধুনিক দাসত্বে’ পরিণত করছে মানুষদের

                    শ্রমিক সংগঠন ইন্ডাস্ট্রিঅল বাংলাদেশ কাউন্সিল বলছে, খণ্ডকালীন বা চুক্তিভিত্তিক ‘নিরাপত্তাহীন ও অনিশ্চিত’ কাজের মাধ্যমে চাকরিজীবী বা শ্রমিক তার ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
                    শ্রমিকদের কাজের জন্য যেসব ন্যায্য সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার কথা, খণ্ডকালীন বা চুক্তিভিত্তিক কাজের মাধ্যমে অনেকেই তা পায়না।
                     সংগঠনটি বলছে, এর মাধ্যমে শ্রমিকদেরকে আধুনিক দাসে পরিণত করা হচ্ছে। আর এই প্রবণতা বিশ্বব্যাপী দিন দিন বাড়ছে।
                     ইন্ডাস্ট্রিঅল বাংলাদেশ কাউন্সিলের রায় রমেশচন্দ্র বলেন, বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় এবং ব্যক্তি মালিকানাধীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে এ ধরনের বঞ্চনার ঘটনা ঘটছে । অনেকে বারো বছর, চৌদ্দ বছর, পনেরো বছর ধরে এভাবে কাজ করে যাচ্ছেন কিন্তু স্থায়ী হচ্ছেন না। ফলে চুক্তিভিত্তিক শ্রমিকরা অনেক সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
                   তিনি বলেন, ‘প্রত্যেক শ্রমিকের আইনানুগ নিয়োগপত্র, চাকরির স্থায়িত্ব, সুযোগ-সুবিধা, গ্রাচুইটি সবার জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য হওয়া দরকার। কিন্তু মুক্ত বাজার অর্থনীতির নামে বিশ্বব্যাপী খণ্ডকালীন বা আউট সোর্সিং এর নামে শ্রমিকদেরকে আধুনিক দাসে পরিণত করা হচ্ছে।’
মূলত শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত করে মালিক পক্ষ কিংবা নিয়োগদাতাদের লাভ করার মানসিকতাই এর কারণ বলে তিনি জানান।
                    বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন সরকারী বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন সেক্টরেই চুক্তিভিত্তিক কিংবা খণ্ডকালীন নিয়োগ দেয়া হয়ে থাকে। এই কাজগুলোকে Precarious work বা নিরাপত্তাহীন অনিশ্চিত কাজ বলা হয়ে থাকে।
এই ‘নিরাপত্তাহীন অনিশ্চিত কাজ’ বন্ধের দাবিতে আজ একটি কর্মসূচি পালন করছে ইন্ডাস্ট্রিঅল।

সূত্র: বিবিসি

’সীমানা পেরিয়ে’- পূর্ণদৈর্ঘ বাংলা ছায়াছবি Simana Periye-Full Length Bangla Movie


মালির পথে - ইবনে বতুতার রোমাঞ্চকর অভিযান

মালির পথে

ইবনে বতুতার রোমাঞ্চকর অভিযান  

আইওয়ালাতানে থাকতে আর ভাল লাগছে না।ভাবলাম দেশে ফিরে যাব।কিন্ত পরে চিন্তা করলাম এদের রাজধানী না দেখে গেলে কেমন হয় !তাই মালি সফরের প্রস্তুতি নিলাম আইওয়ালাতান থেকে মালির দূরত্ব দ্রুত গতিতে গেলে চব্বিশ দিনের পথ।বিশাল এক মরুভূমি পাড়ি দিতে হবে।আমি একজন পথ প্রদর্শক ভাড়া করে রওয়ানা হলাম।আমার সাথে আরোও তিন জন ছিলেন।একটি বন এলাকা দিয়ে আমরা চলেছি।বড় বড় গাছের সারির ভেতর দিয়ে পথ চলে গিয়েছে।গাছগুলোর কান্ড বিশালাকায়।কোন কোন গাছের ডালপালা এতা বিস্তৃত যে একটি গাছের ছায়াতেই একটি কাফেলার সবাই বিশ্রাম নিতে পারে।কোন কোন গাছে কোন পাতা নেই।কিন্তু কান্ড এতো বিশাল যে এর ছায়াতেই মুসাফিররা বিশ্রাম নিতে পারে।এই এলাকার এক লোকের গাছ দেখলাম কান্ড বিশালাকায় ,বোতলাকৃতির এবং ভিতরে ফাঁপা।সেই ফাঁপা স্থানে বৃষ্টির পানি জমা থাকে।যেন একটি পানির কূপ!মুসাফিররা গাছের কান্ড ফুটো করে সেই পানি পান করতে পারে।আবার কোন কোন গাছের ফাঁপা অংশে মৌমাছিরা মৌচাক তৈরী করে।ওখান থেকে প্রচুর মধু পা্ওয়া যায়।এক জায়গায় আমি দেখলাম এক গাছের ফাঁপা অংশের বিশাল ফাটলে এক তাঁতী তার তাঁত দিয়ে ভেতরে বসে আরামে বসে বুনন কাজ করছে।এই দৃশ্য দেখে আমি তাজ্জব হয়ে গেলাম।আইওয়ালাতান ও মালির মধ্যবর্তী এলাকার জঙ্গলে বিভিন্ন রকমের ফল মূলের গাছ জন্মে।এখানে আপেল,নাশপাতি,খুবানী,শাফতালু গাছের মতো গাছ দেখা যায়।কিন্তু আসলে এগুলো অন্য গাছ।এ এলাকায় খরবুজার মতো এক জাতের ফল উতপন্ন হয়।পাকলে ফেটে যায় এবং ভিতবে আঠার মতো পদার্থ পা্ওয়া যায়।এই ফলগুলো রান্না করে খাওয়া হয়।বাজারেও বিক্রী হয়।মাটির নীচে শিমের বিচির মতো একধরনের শষ্য জন্মে।এগুলোকে ভেজে খাওয়া যায়।নাশপাতির মতো দেখতে গারতি নামে এক জাতের ফল জন্মে।যা খেতে অত্যন্ত মিষ্টি।এর বিচি থেকে তেলও পাওয়া যায়।এই তেল ভাজা,রান্না,চেরাগ জ্বালানো,গায়ে মাখা এবং এক জাতের মাটির সাথে মিশিয়ে পুটিন বানানোর কাজেও ব্যবহৃত হয়।এই তেল এই এলাকায় প্রচুর উতপন্ন হয়।লাউয়ের খোলের ভিতর বিভিন্ন শহরে নিয়ে যাওয়া হয়।এখানে বিশালাকৃতি লাউয়ের খোল শুকিয়ে পাত্র বানানো হয়। যা একটি বড় কলসির সমান হয়।এই এলাকায় সফরের সময় মুসাফিররা নিজেদের মালপত্র,খাবার দাবার বা টাকা পয়সা সাথে নেয় না।টাকা পয়সার বদলে নিয়ে যায় লবণের টুকরো আর সীসার অলংকার।সীসার তৈরী অলংকারকে বলা হয় নাজম।এছাড়া বিভিন্ন সুগন্ধি দ্রব্যও নিয়ে যাওয়া হয়।মুসাফিরদের কাফেলা কোন গ্রামে গিয়ে পৌঁছলে কৃষ্ণাঙ্গ রমণীরা ভূট্টা,চাল,দুধ,মুরগী,বরবটি,শিমের আটা,সরষের মতো দেখতে দানাদার শষ্য ফুনি প্রভৃতি নিয়ে আসেন।লবন,সীসার অলংকার ও সুগন্ধী দ্রব্যের বিনিময়ে এগুলো মুসাফিররা পছন্দ মতো কিনে নেন।

দশ দিন পর আমরা জাগনী নামে এক জনপদে এসে পৌঁছলাম।এখানে সাগবাগো সম্প্রদায়ের বসবাস।এরা কৃষ্ণাঙ্গ এবং আবাজিয়া।খারেজী মাজহাবের অনুসারী।এখানে মালেকি মাজহাবের লোকজনকে তুরি বলা হয় ।জাগরী থেকে আমরা পৌছালাম নাইজার নদীতে।মালি সম্রাজ্যের প্রধান নদী এই নাইজার।এই নদীর তীরে বিভিন্ন শহর গড়ে উঠেছে আমরা নাইজার তীরবর্তী কারসাখু কাবারাহ হয়ে জাগাহ পৌঁছলাম।কারবাহ ও জাগাহ দুইটি এলাকার দুজন রাজা শাসন করেন ।দুই জনেই মালির সুলতানের অধীন।জাগাহর কৃষ্ণাঙ্গরা প্রচীনকাল থেকেই ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন।এরা অত্যন্ত পরহেজগার এবং বিদ্যুতসাহী।জাগাহ থেকে নাইজার নদী এখান দিয়ে ঘুরে তুমবুকত ও কাউকাউ হয়ে মুলিতে পৌঁছেছে।মুলিতে লিমি উপউপজাতীয়দের বসবাস। এই এলাকা হলো মালি সম্রাজ্যের শেষ সীমা।নাইজার নদী এখান থেকে ঘুরে ইউফি শহরে পৌঁছেছে।এই এলাকা থেকে শুরু হয়েছে কৃষ্ণাঙ্গ কাফেরদের এলাকা।এখানকার রাজাকে কৃষ্ণাঙ্গ কাফেরদের সবচেয়ে বড় রাজা হিসাবে গণ্য করা হয়।শ্বেতকায়রা এই এলাকায় যায় না।কারণ গেলেই কৃষ্ণাঙ্গ কাফেররা হামলা করে ওদেরকে কতল করে ফেলে ।

ইউফি থেকে নাইজার নদী লোবা এলাকায় প্রবাহিত হয়েছে।এই এলাকার জনগণ খ্রিষ্টান। এরপর নাইজার নদী পৌঁছেছে দুনকুলা শহরে।এটি কৃষ্ণঙ্গদের সবচেয়ে বড় শহর।এখানকার সুলতানের নাম ইবনে কানজুদ্দিন।মিশরের সুলতান মালেক নাসেরের সময় ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হন ।এরপর নাইজার জানাদিল এলাকায় এসে সাগরে মিশেছে ।


কর্টেসী-মোহাম্মদ মামুনূর রশীদ

Tuesday, October 6, 2015

Total Recall (টোটাল রিকল) American science fiction action Full Movies HD 1080p


মনে হয় একদিন - জীবনানন্দ দাশ

 জীবনানন্দ দাশ


মনে হয় একদিন আকাশে শুকতারা দেখিব না আর ;
দেখিব না হেলেঞ্চার ঝোপ থেকে এক ঝাড় জোনাকি কখন
নিভে যায়  দেখিব না আর আমি এই পরিচিত বাঁশবন ,
শুঁকনো বাঁশের পাতা ছাওয়া মাটি হয়ে যাবে গভীর আঁধার
আমার চোখের কাছে  লক্ষী পূর্ণিমার রাতে সে কবে আবার
পেঁচা ডাকে জোছনায়  হিজলের বাকা ডাল করে গুঞ্জরন ;
সারা রাত কিশোরীর লাল পাড় চাঁদে ভাসে – হাতের কাঁকন
বেজে ওঠে : বুঝিব না গঙ্গাজল ,নারকোলনাড়ুগুলো তার
জানি না সে কারে দেবে  জানি না সে চিনি আর সাদা তালশাঁস
হাতে লয়ে পলাশের দিকে চেয়ে দুয়ারে দাড়ায়ে রবে কি না
আবার কাহার সাথে ভালবাসা হবে তার  আমি তা জানি না;
মৃত্যুরে কে মনে রাখে ?কীর্তিনাশা খুঁড়ে খুঁড়ে চলে বারো মাস
নতুন ডাঙার দিকে –পিছনের অবিরল মৃত চর বিনা
দিন তার কেটে যায়  শুকতারা নিভে গেলে কাঁদে কি আকাশ ?


১৯৪৬-৪৭

 -জীবনানন্দ দাশ

 দিনের আলোয় অই চারি দিকে মানুষের অস্পষ্ট ব্যাস্ততা:
পথে-ঘাটে ট্রাক ট্রামলাইনে ফুটপাতে;
কোথায় পরের বাড়ি এখুনি নিলেম হবে—মনে হয়,
জলের মতন দামে।
সকলকে ফাঁকি দিয়ে স্বর্গে পৌঁছুবে
সকলের আগে সকলেই তাই।
অনেকেরই ঊর্ধশ্বাসে যেতে হয়, তবু
নিলেমের ঘরবাড়ি আসবাব—অথবা যা নিলেমের নয়
সে সব জিনিস
বহুকে বঞ্চিত ক’রে দু জন কি একজন কিনে নিতে পারে।
পৃথিবীতে সুদ খাটে: সকলের জন্যে নয়।
অনির্বচনীয় হুণ্ডি একজন দু জনের হাতে।
পৃথিবীর এইসব উঁচু লোকদের দাবি এসে
সবই নেয়, নারীকেও নিয়ে যায়।
বাকি সব মানুষেরা অন্ধকারে হেমন্তের অবিরল পাতার মতন
কোথাও নদীর পানে উড়ে যেতে চায়,
অথবা মাটির দিকে—পৃথিবীর কোনো পুনঃপ্রবাহের বীজের ভিতরে
মিশে গিয়ে। পৃথিবীতে ঢের জন্ম নষ্ট হয়ে গেছে জেনে, তবু
আবার সূর্যের গন্ধে ফিরে এসে ধুলো ঘাস কুসুমের অমৃতত্বে
কবে পরিচিত জল, আলো আধো অধিকারিণীকে অধিকার করে নিতে হবে:
ভেবে তারা অন্ধকারে লীন হয়ে যায়।
লীন হয়ে গেলে তারা তখন তো—মৃত।
মৃতেরা এ পৃথিবীতে ফেরে না কখনও
মৃতেরা কোথাও নেই; আছে?
কোনো কোনো অঘ্রানের পথে পায়চারি-করা শান্ত মানুষের
হৃদয়ের পথে ছাড়া মৃতেরা কোথাও নেই বলে মনে হয়;
তা হলে মৃত্যুর আগে আলো অন্ন আকাশ নারীকে
কিছুটা সুস্থিরভাবে পেলে ভালো হত।
বাংলার লক্ষ গ্রাম নিরাশায় আলোহীনতায় ডুবে নিস্তব্ধ নিস্তেল।
সূর্য অস্তে চলে গেলে কেমন সুকেশী অন্ধকার
খোঁপা বেঁধে নিতে আসে—কিন্তু কার হাতে?
আলুলায়িত হয়ে চেয়ে থাকে—কিন্তু কার তরে?
হাত নেই—কোথাও মানুষ নেই; বাংলার লক্ষ গ্রামরাত্রি একদিন
আলপনার, পটের ছবির মতো সুহাস্যা, পটলচেরা চোখের মানুষী
হতে পেরেছিল প্রায়; নিভে গেছে সব।
এইখানে নবান্নের ঘ্রাণ ওরা সেদিনও পেয়েছে;
নতুন চালের রসে রৌদ্রে কতো কাক
এ-পাড়ার বড়ো...ও-পাড়ার দুলে বোয়েদের
ডাকশাঁখে উড়ে এসে সুধা খেয়ে যেত;
এখন টুঁ শব্দ নেই সেই সব কাকপাখিদেরও;
মানুষের হাড় খুলি মানুষের গণনার সংখ্যাধীন নয়;
সময়ের হাতে অন্তহীন।
ওখানে চাঁদের রাতে প্রান্তরে চাষার নাচ হত
ধানের অদ্ভুত রস খেয়ে ফেলে মাঝি-বাগ্‌দির
ঈশ্বরী মেয়ের সাথে
বিবাহের কিছু আগে-বিবাহের কিছু পরে-সন্তানের জন্মাবার আগে।
সে সব সন্তান আজ এ যুগের কুরাষ্ট্রের মূঢ়
ক্লান্ত লোকসমাজের ভীড়ে চাপা পড়ে
মৃতপ্রায়; আজকের এই সব গ্রাম্য সন্ততির
প্রপিতামহের দল হেসে খেলে ভালোবেসে-অন্ধকারে জমিদারদের
চিরস্থায়ী ব্যাবস্থাকে চড়কের গাছে তুলে ঘুমায়ে গিয়েছে।
ওরা খুব বেশি ভালো ছিল না; তবুও
আজকের মন্বন্তর দাঙ্গা দুঃখ নিরক্ষরতায়
অন্ধ শতচ্ছিন্ন গ্রাম্য প্রাণীদের চেয়ে
পৃথক আর-এক স্পষ্ট জগতের অধিবাসী ছিল।
আজকে অস্পষ্ট সব? ভালো করে কথা ভাবা এখন কঠিন;
অন্ধকারে অর্ধসত্য সকলকে জানিয়ে দেবার
নিয়ম এখন আছে; তারপর একা অন্ধকারে
বাকি সত্য আঁচ করে নেওয়ার রেওয়াজ
রয়ে গেছে; সকলেই আড়চোখে সকলকে দেখে।
সৃষ্টির মনের কথা মনে হয়—দ্বেষ।
সৃষ্টির মনের কথা: আমাদেরই আন্তরিকতাতে
আমাদেরই সন্দেহের ছায়াপাত টেনে এনে ব্যাথা
খুঁজে আনা। প্রকৃতির পাহাড়ে পাথরে সমুচ্ছল
ঝর্নার জল দেখে তারপর হৃদয়ে তাকিয়ে
দেখেছি প্রথম জল নিহত প্রাণীর রক্তে লাল
হয়ে আছে ব’লে বাঘ হরিণের পিছু আজও ধায়;
মানুষ মেরেছি আমি—তার রক্তে আমার শরীর
ভরে গেছে; পৃথিবীর পথে এই নিহত ভ্রাতার
ভাই আমি; আমাকে সে কনিষ্ঠের মতো জেনে তবু
হৃদয়ে কঠিন হয়ে বধ করে গেল, আমি রক্তাক্ত নদীর
কল্লোলের কাছে শুয়ে অগ্রজপ্রতিম বিমূঢ়কে
বধ করে ঘুমাতেছি—তাহার অপরিসর বুকের ভিতরে
মুখ রেখে মনে হয় জীবনের স্নেহশীল ব্রতী
সকলকে আলো দেবে মনে করে অগ্রসর হয়ে
তবুও কোথাও কোনো আলো নেই বলে ঘুমাতেছে।
ঘুমাতেছে।
যদি ডাকি রক্তের নদীর থেকে কল্লোলিত হয়ে
বলে যাবে কাছে এসে, 'ইয়াসিন আমি,
হানিফ মহম্মদ মকবুল করিম আজিজ—
আর তুমি?' আমার বুকের 'পরে হাত রেখে মৃত মুখ থেকে
চোখ তুলে শুধাবে সে—রক্তনদী উদ্বেলিত হয়ে
ব’লে যাবে, 'গগন, বিপিন, শশী,পাথুরেঘাটার;
মানিকতলার, শ্যামবাজারের, গ্যালিফ স্ট্রীটের, এন্টালির-'
কোথাকার কেবা জানে; জীবনের ইতর শ্রেণীর
মানুষ তো এরা সব; ছেঁড়া জুতো পায়ে
বাজারের পোকাকাটা জিনিসের কেনাকাটা করে;
সৃষ্টির অপরিক্লান্ত চারণার বেগে
এইসব প্রাণকণা জেগেছিল—বিকেলের সূর্যের রশ্মিতে
সহসা সুন্দর বলে মনে হয়েছিল কোনো উজ্জ্বল চোখের
মনীষী লোকের কাছে এই সব অণুর মতন
উদ্ভাসিত পৃথিবীর উপেক্ষিত জীবনগুলোকে।
সূর্যের আলোর ঢলে রোমাঞ্চিত রেণুর শরীরে
রেণুর সংঘর্ষে যেই শব্দ জেগে ওঠে
সেখানে তার অনুপম কণ্ঠের সংগীতে
কথা বলে; কাকে বলে? ইয়াসিন মকবুল শশী
সহসা নিকটে এসে কোনো-কিছু বলবার আগে
আধ-খণ্ড অনন্তের অন্তরের থেকে যেন ঢের
কথা বলে গিয়েছিল; তবু—
অনন্ত তো খণ্ড নয়; তাই সেই স্বপ্ন, কাজ, কথা
অখণ্ডে অনন্তে অন্তর্হিত হয়ে গেছে;
কেউ নেই, কিছু নেই-সূর্য নিভে গেছে।
এ যুগে এখন ঢের কম আলো সব দিকে, তবে।
আমরা এ পৃথিবীর বহুদিনকার
কথা কাজ ব্যাথা ভুল সংকল্প চিন্তার
মর্যাদায় গড়া কাহিনীর মূল্য নিংড়ে এখন
সঞ্চয় করেছি বাক্য শব্দ ভাষা অনুপম বাচনের রীতি।
মানুষের ভাষা তবু অনুভূতিদেশ থেকে আলো
না পেলে নিছক ক্রিয়া; বিশেষণ; এলোমেলো নিরাশ্রয় শব্দের কঙ্কাল
জ্ঞানের নিকট থেকে ঢের দূরে থাকে।
অনেক বিদ্যার দান উত্তরাধিকারে পেয়ে তবু
আমাদের এই শতকের
বিজ্ঞান তো সংকলিত জিনিসের ভিড় শুধু—বেড়ে যায় শুধু;
তবুও কোথাও তার প্রাণ নেই বলে অর্থময়
জ্ঞান নেই আজ এই পৃথিবীতে; জ্ঞানের বিহনে প্রেম নেই।
এ-যুগে কোথাও কোনো আলো—কোনো কান্তিময় আলো
চোখের সুমুখে নেই যাত্রিকের; নেই তো নিঃসৃত অন্ধকার
রাত্রির মায়ের মতো: মানুষের বিহ্বল দেহের
সব দোষ প্রক্ষালিত করে দেয়—মানুষের মানুষের বিহ্বল আত্মাকে
লোকসমাগমহীন একান্তের অন্ধকারে অন্তঃশীল ক’রে
তাকে আর শুধায় না—অতীতের শুধানো
প্রশ্নের উত্তর চায় না আর—শুধু শব্দহীন মৃত্যুহীন
অন্ধকারে ঘিরে রাখে, সব অপরাধ ক্লান্তি ভয় ভুল পাপ
বীতকাম হয় যাতে—এ জীবন ধীরে ধীরে বীতশোক হয়,
স্নিগ্ধতা হৃদয়ে জাগে; যেন দিকচিহ্নময় সমুদ্রের পারে
কয়েকটি দেবদারুগাছের ভিতরে অবলীন
বাতাসের প্রিয়কণ্ঠ কাছে আসে—মানুষের রক্তাক্ত আত্মায়
সে-হাওয়া অনবচ্ছিন্ন সুগমের—মানুষের জীবন নির্মল।
আজ এই পৃথিবীতে এমন মহানুভব ব্যাপ্ত অন্ধকার
নেই আর? সুবাতাস গভীরতা পবিত্রতা নেই?
তবুও মানুষ অন্ধ দুর্দশার থেকে স্নিগ্ধ আঁধারের দিকে
অন্ধকার হ’তে তার নবীন নগরী গ্রাম উৎসবের পানে
যে অনবনমনে চলেছে আজও—তার হৃদয়ের
ভুলের পাপের উৎস অতিক্রম ক’রে চেতনার
বলয়ের নিজ গুণ রয়ে গেছে বলে মনে হয়।

বোধ

  -জীবনানন্দ দাশ

 আলো-অন্ধকারে যাই - মাথার ভিতরে
স্বপ্ন নয়, - কোন্‌ এক বোধ কাজ করে!
স্বপ্ন নয় - শান্তি নয়―ভালোবাসা নয়,
হৃদয়ের মাঝে এক বোধ জন্ম লয়!
আমি তারে পারি না এড়াতে,
সে আমার হাত রাখে হাতে;
সব কাজ তুচ্ছ হয়, - পণ্ড মনে হয়,
সব চিন্তা - প্রার্থনার সকল সময়
শূন্য মনে হয়,
শূন্য মনে হয়!

সহজ লোকের মতো কে চলিতে পারে!
কে থামিতে পারে এই আলোয় আঁধারে
সহজ লোকের মতো! তাদের মতন ভাষা কথা
কে বলিতে পারে আর! - কোনো নিশ্চয়তা
কে জানিতে পারে আর? - শরীরের স্বাদ
কে বুঝিতে চায় আর? - প্রাণের আহ্লাদ
সকল লোকের মতো কে পাবে আবার!
সকল লোকের মতো বীজ বুনে আর
স্বাদ কই! - ফসলের আকাঙ্ক্ষায় থেকে,
শরীরে মাটির গন্ধ মেখে,
শরীরে জলের গন্ধ মেখে,
উৎসাহে আলোর দিকে চেয়ে
চাষার মতন প্রাণ পেয়ে
কে আর রহিবে জেগে পৃথিবীর ՚পরে?
স্বপ্ন নয়, - শান্তি নয়,―কোন্‌ এক বোধ কাজ করে
মাথার ভিতরে!

পথে চ’লে পারে - পারাপারে
উপেক্ষা করিতে চাই তারে;
মড়ার খুলির মতো ধ’রে
আছাড় মারিতে চাই,জীবন্ত মাথার মতো ঘোরে
তবু সে মাথার চারিপাশে!
তবু সে চোখের চারিপাশে!
তবু সে বুকের চারিপাশে!
আমি চলি,সাথে সাথে সেও চলে আসে!
আমি থামি, -
সেও থেমে যায়;
সকল লোকের মাঝে ব’সে
আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা?
আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
আমার চোখেই শুধু বাধা?
জন্মিয়াছে যারা এই পৃথিবীতে
সন্তানের মতো হয়ে, -
সন্তানের জন্ম দিতে দিতে
যাহাদের কেটে গেছে অনেক সময়,
কিংবা আজ সন্তানের জন্ম দিতে হয়
যাহাদের ; কিংবা যারা পৃথিবীর বীজক্ষেতে আসিতেছে চ’লে
জন্ম দেবে - জন্ম দেবে ব’লে;
তাদের হৃদয় আর মাথার মতন
আমার হৃদয় না কি?―তাহাদের মন
আমার মনের মতো না কি? -
তবু কেন এমন একাকী?
তবু আমি এমন একাকী!
হাতে তুলে দেখিনি কি চাষার লাঙল?
বাল্‌টিতে টানিনি কি জল?
কাস্তে হাতে কতবার যাইনি কি মাঠে?
মেছোদের মতো আমি কত নদী ঘাটে
ঘুরিয়াছি;
পুকুরের পানা শ্যালা - আঁশটে গায়ের ঘ্রাণ গায়ে
গিয়েছে জড়ায়ে;
 - এইসব স্বাদ;
 - এ সব পেয়েছি আমি;―বাতাসের মতন অবাধ
বয়েছে জীবন,
নক্ষত্রের তলে শুয়ে ঘুমায়েছে মন
একদিন;
এইসব সাধ
জানিয়াছি একদিন, - অবাধ - অগাধ;
চ’লে গেছি ইহাদের ছেড়ে; -
ভালোবেসে দেখিয়াছি মেয়েমানুষেরে,
অবহেলা ক’রে আমি দেখিয়াছি মেয়েমানুষেরে,
ঘৃণা ক’রে দেখিয়াছি মেয়েমানুষেরে;
আমারে সে ভালোবাসিয়াছে,
আসিয়াছে কাছে,
উপেক্ষা সে করেছে আমারে,
ঘৃণা ক’রে চ’লে গেছে - যখন ডেকেছি বারে-বারে
ভালোবেসে তারে;
তবুও সাধনা ছিল একদিন, - এই ভালোবাসা;
আমি তার উপেক্ষার ভাষা
আমি তার ঘৃণার আক্রোশ
অবহেলা ক’রে গেছি; যে নক্ষত্র - নক্ষত্রের দোষ
আমার প্রেমের পথে বার-বার দিয়ে গেছে বাধা
আমি তা ভুলিয়া গেছি;
তবু এই ভালোবাসা - ধুলো আর কাদা -।

মাথার ভিতরে স্বপ্ন নয় - প্রেম নয় - কোনো এক বোধ কাজ করে।
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চ’লে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে :
সে কেন জলের মতো ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
অবসাদ নাই তার? নাই তার শান্তির সময়?
কোনোদিন ঘুমাবে না? ধীরে শুয়ে থাকিবার স্বাদ
পাবে না কি? পাবে না আহ্লাদ
মানুষের মুখ দেখে কোনোদিন!
মানুষীর মুখ দেখে কোনোদিন!
শিশুদের মুখ দেখে কোনোদিন!

এই বোধ - শুধু এই স্বাদ
পায় সে কি অগাধ - অগাধ!
পৃথিবীর পথ ছেড়ে আকাশের নক্ষত্রের পথ
চায় না সে? - করেছে শপথ
দেখিবে সে মানুষের মুখ?
দেখিবে সে মানুষীর মুখ?
দেখিবে সে শিশুদের মুখ?
চোখে কালোশিরার অসুখ,
কানে যেই বধিরতা আছে,
যেই কুঁজ - গলগণ্ড মাংসে ফলিয়াছে
নষ্ট শসা - পচা চালকুমড়ার ছাঁচে,
যে সব হৃদয়ে ফলিয়াছে
- সেই সব।


ঘাস

  -জীবনানন্দ দাশ

 কচি লেবুপাতার মত নরম সবুজ আলোয়
পৃথিবী ভরে গিয়েছে এই ভোরের বেলা;
কাঁচা বাতাবির মতো সবুজ ঘাস–তেমনি সুঘ্রাণ–
হরিণেরা দাঁত দিয়ে ছিঁড়ে নিচ্ছে।
আমারও ইচ্ছা করে এই ঘাসের ঘ্রাণ হরিৎ মদের মতো
গেলাসে গেলাসে পান করি,
এই ঘাসের শরীর ছানি–চোখে চোখ ঘষি,
ঘাসের পাখনায় আমার পালক,
ঘাসের ভিতর ঘাস হয়ে জন্মাই কোনো এক নিবিড় ঘাস–মাতার
শরীরের সুস্বাদ অন্ধকার থেকে নেমে।


নিরালোক

   -জীবনানন্দ দাশ

 একবার নক্ষত্রের দিকে চাই – একবার প্রান্তরের দিকে
আমি অনিমিখে।
ধানের ক্ষেতের গন্ধ মুছে গেছে কবে
জীবনের থেকে যেন; প্রান্তরের মতন নীরবে
বিচ্ছিন্ন খড়ের বোঝা বুকে নিয়ে ঘুম পায় তার;
নক্ষত্রেরা বাতি জ্বেলে–জ্বেলে–জ্বেলে– ‘নিভে গেলে- নিভে গেলে?’
বলে তারে জাগায় আবার;
জাগায় আবার।
বিচ্ছিন্ন খড়ের বোঝা বুকে নিয়ে- বুকে নিয়ে ঘুম পায় তার;
ঘুম পায় তার।

অনেক নক্ষত্রে ভরে গেছে সন্ধ্যার আকাশ– এই রাতের আকাশ;
এইখানে ফাল্গুনের ছায়া মাখা ঘাসে শুয়ে আছি;
এখন মরণ ভাল,– শরীরে লাগিয়া রবে এই সব ঘাস;
অনেক নক্ষত্র রবে চিরকাল যেন কাছাকাছি।
কে যেন উঠিল হেঁচে,– হামিদের মরখুটে কানা ঘোড়া বুঝি!
সারা দিন গাড়ি টানা হল ঢের,– ছুটি পেয়ে জ্যোৎস্নায় নিজ মনে খেয়ে যায় ঘাস;
যেন কোনো ব্যথা নাই পৃথিবীতে,– আমি কেন তবে মৃত্যু খুঁজি?
‘কেন মৃত্যু খোঁজো তুমি?’– চাপা ঠোঁটে বলে কৌতুকী আকাশ।

ঝাউফুলে ঘাস ভরে– এখানে ঝাউয়ের নীচে শুয়ে আছি ঘাসের উপরে;
কাশ আর চোরকাঁটা ছেড়ে দিয়ে ফড়িং চলিয়া গেছে ঘরে।
সন্ধ্যার নক্ষত্র, তুমি বলো দেখি কোন্‌ পথে কোন্‌ ঘরে যাব!
কোথায় উদ্যম নাই, কোথায় আবেগ নাই,- চিন্তা স্বপ্ন ভুলে গিয়ে শান্তি আমি পাব?

রাতের নক্ষত্র, তুমি বলো দেখি কোন্‌ পথে যাব ?
‘তোমারই নিজের ঘরে চলে যাও’– বলিল নক্ষত্র চুপে হেসে–
‘অথবা ঘাসের ‘পরে শুয়ে থাকো আমার মুখের রূপ ঠায় ভালবেসে;
অথবা তাকায়ে দেখো গোরুর গাড়িটি ধীরে চলে যায় অন্ধকারে
সোনালি খড়ের বোঝা বুকে;
পিছে তার সাপের খোলস, নালা, খলখল অন্ধকার – শান্তি তার রয়েছে সমুখে
চলে যায় চুপ-চুপে সোনালি খড়ের বোঝা বুকে–
যদিও মরেছে ঢের গন্ধর্ব, কিন্নর, যক্ষ, - তবু তার মৃত্যু নাই মুখে।‘

 আবার আসিব ফিরে

- জীবনানন্দ দাশ

আবার আসিব ফিরে ধানসিঁড়িটির তীরে - এই বাংলায়
হয়তো মানুষ নয় - হয়তো বা শাঁখচিল শালিকের বেশে,
হয়তো ভোরের কাক হয়ে এই কার্তিঁকের নবান্নের দেশে
কুয়াশার বুকে ভেসে একদিন আসিব কাঁঠাল ছায়ায়।
হয়তো বা হাঁস হবো - কিশোরীর - ঘুঙুর রহিবে লাল পায়
সারাদিন কেটে যাবে কলমীর গন্ধভরা জলে ভেসে ভেসে।
আবার আসিব আমি বাংলার নদী মাঠ ক্ষেত ভালোবেসে
জলঙ্গীর ঢেউ এ ভেজা বাংলারি সবুজ করুণ ডাঙ্গায়।
হয়তো দেখিবে চেয়ে সুদর্শন উড়িতেছে সন্ধ্যার বাতাসে।
হয়তো শুনিবে এক লক্ষীপেঁচা ডাকিতেছে শিমুলের ডালে।
হয়তো খৈয়ের ধান সরাতেছে শিশু এক উঠানের ঘাসে।
রূপসার ঘোলা জলে হয়তো কিশোর এক সাদাছেঁড়া পালে
ডিঙ্গা বায় - রাঙ্গা মেঘে সাঁতরায়েঅন্ধকারে আসিতেছে নীড়ে,
দেখিবে ধবল বক; আমারে পাবে তুমি ইহাদের ভীড়ে।

 এই সব দিনরাত্রি

- জীবনানন্দ দাশ


মনে হয় এর চেয়ে অন্ধকারে ডুবে যাওয়া ভালো।
এইখানে
পৃথিবীর এই ক্লান্ত এ অশান্ত কিনারা দেশে
এখানে আশ্চর্য সব মানুষ রয়েছে।
তাদের সম্রাট নেই, সেনাপতি নেই;
তাদের হৃদয়ে কোনো সভাপতি নেই;
শরীর বিবশ হলে অবশেষে ট্রেড-ইউনিয়নের
কংগ্রেসের মতো কোনো আশা-হতাশার
কোলাহল নেই।

অনেক শ্রমিক আছে এইখানে।
আরো ঢের লোক আছে
সঠিক শ্রমিক নয় তারা।
স্বাভাবিক মধ্যশ্রেণী নিম্নশ্রেণী মধ্যবিত্ত শ্রেনীর পরিধি থেকে ঝ’রে
এরা তবু মৃত নয়; অন্তবিহীন কাল মৃতবৎ ঘোরে।
নামগুলো কুশ্রী নয়, পৃথিবীর চেনা-জানা নাম এই সব।
আমরা অনেক দিন এ-সব নামের সাথে পরিচিত; তবু,
গৃহ নীড় নির্দেশ সকলই হারায়ে ফেলে ওরা
জানে না কোথায় গেলে মানুষের সমাজের পারিশ্রমিকের
মতন নির্দিষ্ট কোনো শ্রমের বিধান পাওয়া যাবে;
জানে না কোথায় গেলে জল তেল খাদ্য পাওয়া যাবে;
অথবা কোথায় মুক্ত পরিচ্ছন্ন বাতাসের সিন্ধুতীর আছে।

মেডিকেল ক্যাম্বেলের বেলগাছিয়ার
যাদবপুরের বেড কাঁচড়াপাড়ার বেড সব মিলে কতগুলো সব?
ওরা নয়ে—সহসা ওদের হয়ে আমি
কাউকে শুধায়ে কোনো ঠিকমতো জবাব পাইনি।
বেড আছে, বেশি নেইে—সকলের প্রয়োজনে নেই।
যাদের আস্তানা ঘর তল্পিতল্পা নেই
হাসপাতালের বেড হয়তো তাদের তরে নয়।
বটতলা মুচিপাড়া তালতলা জোড়াসাঁকোে—আরো ঢের ব্যার্থ অন্ধকারে
যারা ফুটপাত ধ’রে অথবা ট্রআমের লাইন মাড়িয়ে চলছে
তাদের আকাশ কোন্‌ দিকে?
জানু ভেঙে পড়ে গেলে হাত কিছুক্ষন আশাশীল
হয়ে কিছু চায়ে—কিছু খোঁজে;
এ ছাড়া আকাশ আর নেই।
তাদের আকাশ সর্বদাই ফুটপাতে;
মাঝে মাঝে এম্বুলেন্‌স্‌ গাড়ির ভিতরে
রণক্লান্ত নাবিকেরা ঘরে
ফিরে আসে
যেন এক অসীম আকাশে।

এ-রকম ভাবে চ’লে দিন যদি রাত হয়, রাত যদি হয়ে যায় দিন,
পদচিহ্নময় পথ হয় যদি দিকচিহ্নহীন,
কেবলই পাথুরেঘাটা নিমতলা চিৎপুরে—
খালের এপার-ওপার রাজাবাজারের অস্পষ্ট নির্দেশে
হাঘরে হাভাতেদের তবে
অনেক বেডের প্রয়োজন;
বিশ্রামের প্রয়োজন আছে;
বিচিত্র মৃত্যুর আগে শান্তির কিছুটা প্রয়োজন।
হাসপাতালের জন্য যাদের অমূল্য দাদন,
কিংবা যারা মরণের আগে মৃতদের
জাতিধর্ম নির্বিচারে সকলকেে—সব তুচ্ছতম আর্তকেও
শরীরের সান্ত্বনা এনে দিতে চায়,
কিংবা যারা এইসব মৃত্যু রোধ করে এক সাহসী পৃথিবী
সুবাতাস সমুজ্জ্বল সমাজ চেয়েছেে—
তাদের ও তাদের প্রতিভা প্রেম সংকল্পকে ধন্যবাদ দিয়ে
মানুষকে ধন্যবাদ দিয়ে যেতে হয়।
মানুষের অনিঃশেষ কাজ চিন্তা কথা
রক্তের নদীর মতো ভেসে গেলে, তারপর, তবু, এক অমূল্য মুগ্ধতা
অধিকার করে নিয়ে ক্রমেই নির্মল হতে পারে।

ইতিহাস অর্ধসত্যে কামাচ্ছন্ন এখনো কালের কিনারায়;
তবুও মানুষ এই জীবনকে ভালোবাসে; মানুষের মন
জানে জীবনের মানে : সকলের ভালো ক’রে জীবনযাপন।
কিন্তু সেই শুভ রাষ্ট্র ঢের দূরে আজ।
চারি দিকে বিকলাঙ্গ অন্ধ ভিড়ে—অলীক প্রয়াণ।
মন্বন্তর শেষ হলে পুনরায় নব মন্বন্তর;
যুদ্ধ শেষ হয়ে গেলে নতুন যুদ্ধের নান্দীরোল;
মানুষের লালসার শেষ নেই;
উত্তেজনা ছাড়া কোনো দিন ঋতু ক্ষণ
অবৈধ সংগম ছাড়া সুখ
অপরের সুখ ম্লান করে দেওয়া ছাড়া প্রিয় সাধ নেই।
কেবলই আসন থেকে বড়ো, নবতর
সিংহাসনে যাওয়া ছাড়া গতি নেই কোনো।
মানুষের দুঃখ কষ্ট মিথ্যা নিষ্ফলতা বেড়ে যায়।

মনে পড়ে কবে এক রাত্রির স্বপ্নের ভিতরে
শুনেছি একটি কুষ্ঠকলঙ্কিত নারী
কেমন আশ্চর্য গান গায়;
বোবা কালা পাগল মিনসে এক অপরূপ বেহালা বাজায়;
গানের ঝংকারে যেন সে এক একান্ত শ্যাম দেবদারুগাছে
রাত্রির বর্ণের মতো কালো কালো শিকারী বেড়াল
প্রেম নিবেদন করে আলোর রঙের মতো অগণন পাখিদের কাছে;
ঝর্‌ ঝর্‌ ঝর্‌
সারারাত শ্রাবণের নির্গলিত ক্লেদরক্ত বৃষ্টির ভিতর
এ পৃথিবী ঘুম স্বপ্ন রুদ্ধশ্বাস
শঠতা রিরংসা মৃত্যু নিয়ে
কেমন প্রদত্ত কালো গণিকার উল্লোল সংগীতে
মুখের ব্যাদান সাধ দুর্দান্ত গণিকালয়ে—নরক শ্মশান হল সব।
জেগে উঠে আমাদের আজকের পৃথিবীকে এ-রকম ভাবে অনুভব
আমিও করেছি রোজ সকালের আলোর ভিতরে
বিকেলে-রাত্রির পথে হেঁটে;
দেখেছি রাজনীগন্ধা নারীর শরীর অন্ন মুখে দিতে গিয়ে
আমরা অঙ্গার রক্ত: শতাব্দীর অন্তহীন আগুনের ভিতরে দাঁড়িয়ে।

এ আগুন এত রক্ত মধ্যযুগ দেখেছে কখনও?
তবুও সকল কাল শতাব্দীকে হিসেব নিকেশ করে আজ
শুভ কাজ সূচনার আগে এই পৃথিবীর মানবহৃদয়
স্নিগ্ধ হয়-বীতশোক হয়?
মানুষের সব গুণ শান্ত নীলিমার মতো ভালো?
দীনতা: অন্তিম গুণ, অন্তহীন নক্ষত্রের আলো।

 সময় সেতু পথে

 - জীবনানন্দ দাশ

 ভোরের বেলায় মাঠ প্রান্তর নীলকন্ঠ পাখি,
দুপুরবেলার আকাশে নীল পাহাড় নীলিমা,
সারাটি দিন মীনরৌদ্রমুখর জলের স্বর, -
অনবসিত বাহির-ঘরের ঘরণীর এই সীমা।
তবুও রৌদ্র সাগরে নিভে গেল;
বলে গেল : ‘অনেক মানুষ মরে গেছে'; ‘অনেক নারীরা কি
তাদের সাথে হারিয়ে গেছে?’ - বলতে গেলাম আমি;
উঁচু গাছের ধূসর হাড়ে চাঁদ না কি সে পাখি
বাতাস আকাশ নক্ষত্র নীড় খুঁজে
বসে আছে এই প্রকৃতির পলকে নিবড়ি হয়ে;
পুরুষনারী হারিয়ে গেছে শষ্প নদীর অমনোনিবেশে,
অমেয় সুসময়ের মতো রয়েছে হৃদয়ে ।

 যতিহীন

 - জীবনানন্দ দাশ

 বিকেলবেলা গড়িয়ে গেলে অনেক মেঘের ভিড়
কয়েক ফলা দীর্ঘতম সূর্যকিরণ বুকে
জাগিয়ে তুলে হলুদ নীল কমলা রঙের আলোয়
জ্বলে উঠে ঝরে গেল অন্ধকারের মুখে।
যুবারা সব যে যার ঢেউয়ে -
মেয়েরা সব যে যার প্রিয়ের সাথে
কোথায় আছে জানি না তো;
কোথায় সমাজ অর্থনীতি? - স্বর্গগামী সিড়ি
ভেঙে গিয়ে পায়ের নিচে রক্তনদীর মতো, -
মানব ক্রমপরিণতির পথে লিঙ্গশরীরী
হয়ে কি আজ চারি দিকে গণনাহীন ধুসর দেয়ালে
ছড়িয়ে আছে যে যার দ্বৈপসাগর দখল ক’রে!
পুরাণপুরুষ, গণমানুষ, নারীপুরুষ, মানবতা, অসংখ্য বিপ্লব
অর্থবিহীন হয়ে গেলে―তবু আরেক নবীনতর ভোরে
সার্থকতা পাওয়া যাবে ভেবে মানুষ সঞ্চারিত হয়ে
পথে পথে সবের শুভ নিকেতনের সমাজ বানিয়ে
তবুও কেবল দ্বীপ বানাল যে যার নিজের অবক্ষয়ের জলে।
প্রাচীন কথা নতুন ক’রে এই পৃথিবীর অনন্ত বোনভায়ে।
ভাবছে একা একা ব’সে
যুদ্ধ রক্ত রিরংসা ভয় কলরোলের ফাঁকে:
আমাদের এই আকাশ সাগর আঁধার আলোয় আজ
যে দোর কঠিন; নেই মনে হয়; - সে দ্বার খুলে দিয়ে
যেতে হবে আবার আলোয় অসার আলোর ব্যসন ছাড়িয়ে।

 অনেক নদীর জল

 - জীবনানন্দ দাশ

 অনেক নদীর জল উবে গেছে  -
ঘর বাড়ি সাঁকো ভেঙে গেল;
সে-সব সময় ভেদ ক’রে ফেলে আজ
কারা তবু কাছে চলে এল ।
যে সূর্য অয়নে নেই কোনো দিন,
- মনে তাকে দেখা যেত যদি -
যে নারী দেখে নি কেউ — ছ-সাতটি তারার তিমিরে
হৃদয়ে এসেছে সেই নদী ।
তুমি কথা বল - আমি জীবন-মৃত্যুর শব্দ শুনি :
সকালে শিশিরকণা যে-রকম ঘাসে
অচিরে মরণশীল হয়ে তবু সূর্যে আবার
মৃত্যু মুখে নিয়ে পরদিন ফিরে আসে।
জন্মতারকার ডাকে বারবার পৃথিবীতে ফিরে এসে আমি
দেখেছি তোমার চোখে একই ছায়া পড়ে :
সে কি প্রেম? অন্ধকার? - ঘাস ঘুম মৃত্যু প্রকৃতির
অন্ধ চলাচলের ভিতরে ।
স্থির হয়ে আছে মন; মনে হয় তবু
সে ধ্রুব গতির বেগে চলে,
মহা-মহা রজনীর ব্রহ্মান্ডকে ধরে;
সৃষ্টির গভীর গভীর হংসী প্রেম
নেমেছে  -এসেছে আজ রক্তের ভিতরে ।
‘এখানে পৃথিবী আর নেই - ’
ব’লে তারা পৃথিবীর জনকল্যাণেই
বিদায় নিয়েছে হিংসা ক্লান্তির পানে;
কল্যাণ কল্যাণ; এই রাত্রির গভীরতর মানে।
শান্তি এই আজ;
এইখানে স্মৃতি;
এখানে বিস্মৃতি তবু; প্রেম
ক্রমায়াত আঁধারকে আলোকিত করার প্রমিতি ।


চারিদিকে প্রকৃতির

  - জীবনানন্দ দাশ

 চারিদিকে প্রকৃতির ক্ষমতা নিজের মতো ছড়ায়ে রয়েছে।
সূর্য আর সূর্যের বনিতা তপতী—
মনে হয় ইহাদের প্রেম
মনে ক’রে নিতে গেলে, চুপে
তিমিরবিদারী রীতি হয়ে এরা আসে
আজ নয়—কোনো এক আগামী আকাশে।
অন্নের ঋণ,বিমলিন স্মৃতি সব
বন্দরবস্তির পথে কোনো এক দিন
নিমেষের রহস্যের মতো ভুলে গিয়ে
নদীর নারীর কথা—আরো প্রদীপ্তির কথা সব
সহসা চকিত হয়ে ভেবে নিতে গেলে বুঝি কেউ
হৃদয়কে ঘিরে রাখে, দিতে চায় একা আকাশের
আশেপাশে অহেতুক ভাঙা শাদা মেঘের মতন।
তবুও নারীর নাম ঢের দূরে আজ,
ঢের দূরে মেঘ;
সারাদিন নিলেমের কালিমার খারিজের কাজে মিশে থেকে
ছুটি নিতে ভালোবেসে ফেলে যদি মন
ছুটি দিতে চায় না বিবেক।
মাঝে মাঝে বাহিরের অন্তহীন প্রসারের
থেকে মানুষের চোখে-পড়া-না-পড়া সে কোনো স্বভাবের
সুর এসে মানবের প্রাণে
কোনো এক মানে পেতে চায়:
যে-পৃথিবী শুভ হতে গিয়ে হেরে গেছে সেই ব্যর্থতার মানে।
চারিদিকে কলকাতা টোকিয়ো দিল্লী মস্কৌ অতলান্তিকের কলরব,
সরবরাহের ভোর,
অনুপম ভোরাইয়ের গান;
অগণন মানুষের সময় ও রক্তের যোগান
ভাঙে গড়ে ঘর বাড়ি মরুভূমি চাঁদ
রক্ত হাড় বসার বন্দর জেটি ডক;
প্রীতি নেই—পেতে গেলে হৃদয়ের শান্তি স্বর্গের
প্রথম দুয়ারে এসে মুখরিত ক’রে তোলে মোহিনী নরক।
আমাদের এ পৃথিবী যতদূর উন্নত হয়েছে
ততদূর মানুষের বিবেক সফল।
সে চেতনা পিরামিডে পেপিরাসে-প্রিন্টিং-প্রেসে ব্যাপ্ত হয়ে
তবুও অধিক আধুনিকতর চরিত্রের বল।
শাদাসিদে মনে হয় সে সব ফসল:
পায়ের চলার পথে দিন আর রাত্রির মতন—
তবুও এদের গতি স্নিগ্ধ নিয়ন্ত্রিত ক’রে বার বার উত্তরসমাজ
ঈষৎ অনন্যসাধারণ।

স্বপ্ন

   - জীবনানন্দ দাশ

 পান্ডুলিপি কাছে রেখে ধূসর দীপের কাছে আমি
নিস্তব্ধ ছিলাম ব'সে;
শিশির পড়িতেছিলো ধীরে-ধীরে খ'সে;
নিমের শাখার থেকে একাকীতম কে পাখি নামি

উড়ে গেলো কুয়াশায়,  - কুয়াশার থেকে দূর-কুয়াশায় আরো।
তাহারি পাখার হাওয়া প্রদীপ নিভায়ে গেলো বুঝি?
অন্ধকার হাৎড়ায়ে ধীরে-ধীরে দেশলাই খুঁজি;
যখন জ্বালিব আলো কার মুখ দেখা যাবে বলিতে কি পারো?

কার মুখ? —আমলকী শাখার পিছনে
শিঙের মত বাঁকা নীল চাঁদ একদিন দেখেছিলো তাহা;
এ-ধূসর পান্ডুলিপি একদিন দেখেছিলো, আহা,
সে-মুখ ধূসরতম আজ এই পৃথিবীর মনে।

তবু এই পৃথিবীর সব আলো একদিন নিভে গেলে পরে,
পৃথিবীর সব গল্প একদিন ফুরাবে যখন,
মানুষ র'বে না আর, র'বে শুধু মানুষের স্বপ্ন তখনঃ
সেই মুখ আর আমি র'বো সেই স্বপ্নের ভিতরে।

 সূর্যতামসী


   - জীবনানন্দ দাশ

কোথাও পাখির শব্দ শুনি;
কোনো দিকে সমুদ্রের সুর;
কোথাও ভোরের বেলা র'য়ে গেছে - তবে।
অগণন মানুষের মৃত্যু হ'লে - অন্ধকারে জীবিত ও মৃতের হৃদয়
বিস্মিতের মতো চেয়ে আছে;
এ কোন সিন্ধুর সুর:
মরণের - জীবনের?
এ কি ভোর?
অনন্ত রাত্রির মতো মনে হয় তবু।
একটি রাত্রির ব্যথা সয়ে -
সময় কি অবশেষে এ-রকম ভোরবেলা হয়ে
আগামী রাতের কালপুরুষের শস্য বুকে ক'রে জেগে ওঠে?
কোথাও ডানার শব্দ শুনি;
কোন দিকে সমুদ্রের সুর -
দক্ষিণের দিকে,
উত্তরের দিকে,
পশ্চিমের পানে?

সৃজনের ভয়াবহ মানে;
তবু জীবনের বসন্তের মতন কল্যাণে
সূর্যালোকিত সব সিন্ধু-পাখিদের শব্দ শুনি;
ভোরের বদলে তবু সেইখানে রাত্রি করোজ্জ্বল
ভিয়েনা, টোকিও, রোম, মিউনিখ - তুমি?
সার্থবাহ, সার্থবাহ, ওইদিকে নীল
সমুদ্রের পরিবর্তে আটলাণ্টিক চার্টার নিখিল মরুভূমি!
বিলীন হয় না মায়ামৃগ - নিত্য দিকদর্শিন;
যা জেনেছে - যা শেখেনি -
সেই মহাশ্মশানের গর্ভাঙ্কে ধূপের মত জ্ব'লে
জাগে না কি হে জীবন - হে সাগর -
শকুন্ত-ক্রান্তির কলরোলে।

  একটি নক্ষত্র আসে


  - জীবনানন্দ দাশ

একটি নক্ষত্র আসে; তারপর একা পায়ে চ'লে
ঝাউয়ের কিনার ঘেঁষে হেমন্তের তারাভরা রাতে
সে আসবে মনে হয়; - আমার দুয়ার অন্ধকারে
কখন খুলেছে তার সপ্রতিভ হাতে!
হঠাৎ কখন সন্ধ্যা মেয়েটির হাতের আঘাতে
সকল সমুদ্র সূর্য সত্বর তাকে ঘুম পাড়িয়ে রাত্রি হতে পারে
সে এসে এগিয়ে দেয়;
শিয়রে আকাশ দূর দিকে
উজ্জ্বল ও নিরুজ্জ্বল নক্ষত্র গ্রহের আলোড়নে
অঘ্রানের রাত্রি হয়;
এ-রকম হিরন্ময় রাত্রি ইতিহাস ছাড়া আর কিছু রেখেছে কি মনে।

শেষ ট্রাম মুছে গেছে, শেষ শব্দ, কলকাতা এখন
জীবনের জগতের প্রকৃতির অন্তিম নিশীথ;
চারিদিকে ঘর বাড়ি পোড়ো-সাঁকো সমাধির ভিড়;
সে অনেক ক্লান্তি ক্ষয় অবিনশ্বর পথে ফিরে
যেন ঢের মহাসাগরের থেকে এসেছে নারীর
পুরোনো হৃদয় নব নিবিড় শরীরে।

  হায় চিল


   - জীবনানন্দ দাশ

হায় চিল, সোনালী ডানার চিল, এই ভিজে মেঘের দুপুরে
তুমি আর কেঁদো নাকো উড়ে-উড়ে ধানসিঁড়ি নদীটির পাশে!
তোমার কান্নার সুরে বেতের ফলের মতো তার ম্লান চোখ মনে আসে!
পৃথিবীর রাঙা রাজকন্যাদের মতো সে যে চলে গেছে রূপ নিয়ে দূরে;
আবার তাহারে কেন ডেকে আনো? কে হায় হৃদয় খুঁড়ে
বেদনা জাগাতে ভালোবাসে!
হায় চিল, সোনালী ডানার চিল, এই ভিজে মেঘের দুপুরে
তুমি আর উড়ে-উড়ে কেঁদো নাকো ধানসিঁড়ি নদীটির পাশে!

  স্বভাব

    - জীবনানন্দ দাশ

 যদিও আমার চোখে ঢের নদী ছিলো একদিন
পুনরায় আমাদের দেশে ভোর হ'লে,
তবুও একটি নদী দেখা যেতো শুধু তারপর;
কেবল একটি নারী কুয়াশা ফুরোলে
নদীর রেখার পার লক্ষ্য ক'রে চলে;
সূর্যের সমস্ত গোল সোনার ভিতরে
মানুষের শরীরের স্থিরতর মর্যাদার মতো
তার সেই মূর্তি এসে পড়ে।
সূর্যের সম্পূর্ণ বড় বিভোর পরিধি
যেন তার নিজের জিনিস।
এতদিন পরে সেইসব ফিরে পেতে
সময়ের কাছে যদি করি সুপারিশ
তা'হলে সে স্মৃতি দেবে সহিষ্ণু আলোয়
দু-একটি হেমন্তের রাত্রির প্রথম প্রহরে;
যদিও লক্ষ লোক পৃথিবীতে আজ
আচ্ছন্ন মাছির মত মরে -
তবুও একটি নারী 'ভোরের নদীর
জলের ভিতরে জল চিরদিন সূর্যের আলোয় গড়াবে'
এ রকম দু-চারটে ভয়াবহ স্বাভাবিক কথা
ভেবে শেষ হ'য়ে গেছে একদিন সাধারণভাবে।

মহানগরী খানছা -ইবনে বতুতার রোমঞ্চকর অভিযান

ইবনে বতুতার  রোমঞ্চকর অভিযান

মহানগরী খানছা

চীনের কালান থেকে চৌদ্দ দিন পর জয়তুনে ফিরে আসলাম।শুনলাম খানের ফরমান এসে পৌঁছেছে ।ফরমানে আমাদেরকে রাজকীয় মেহমান হিসাবে গণ্য করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে এবং নদী পথে বা সড়ক পথে যেখান দিয়ে খুশী খানবালিপে যেতে পারব।চীনের বিখ্যাত আবেহায়াত নদী পথেই যাব ঠিক করলাম।
আমাদের যাত্রার জন্য খানের পক্ষ থেকে রাজকীয় নৌকা সজ্জিত করা হলো।প্রয়োজনীয় লোকজনও সাখে দেয়া হলো ।শাহী মেহমান হিসাবে আমরা যাত্রা করলাম এবং দশ দিন পর গাঞ্জালফু নামে এক শহরে এসে পৌঁছলাম।শহরটি বেশ বড় এবং চারটি দূর্গ দ্বারা বেষ্টীত।
গাঞ্জালফুতে পনেরো দিন থেকে আবার আমরা রওয়ানা হলাম এবং নদীপথে চার দিন পর‘বাইওয়াম কুতলু’পৌঁছলাম এরং সেখান থেকে আরোও সতেরো দিন পর খানচা হ্যাংচৌ শহরে এসে পৌঁছলাম।
দুনিয়াতে যতো শহর দেখেছি তার মধ্যে সবচেয়ে বড় শহর হলো এই খানচা হ্যাংচৌ শহর।শহরটি ঘুরে আসতে তিনি দিন লাগে।চীনের অন্যান্য শহরের মতো এখানেও ঘরবাড়ীর সাথে বাগ-বাগিচা রয়েছে।আসলে ছয়টি উপশহর মিলে খানছা মহানগরী গড়ে উঠেছে ।প্রতিটি উপশহর আলাদা আলাদা দূর্গদ্বারা বেষ্টিত।
শহরে পৌঁছে দেখলাম ওখানকার কাজী ফখরদ্দীন ও শেখুল ইসলাম সহকারে খানছার বিশিষ্ট ব্যক্তি ওসমান বিন আরফান মিশরীয় বংশের সন্তানদের নিয়ে ঢোল তবলা ও বাঁশি  বাঁজিয়ে সাদা নিশান উড়িয়ে এসে আমাদের স্বাগত জানালেন।শহরের আমীরও স্বাগত জানালেন।শহরের আমীরও আমাদের অভ্যর্থনা জানাতে দলবল নিয়ে এলেন।
খানছার ছয়টি উপশহরই আবার একটি বড় দূর্গ দ্বারা ঘেরা।প্রথম উপশহরে প্রহরীরা বসবাস করে।কাজীর কাছে শুনলাম এই প্রহরীদের সংখ্যা প্রায় বারো হাজার।এখানে পৌঁছতে আমাদের রাত হয়ে যায়।তাই প্রহরীদের অধিনায়কের বাড়ীতে থাকার ব্যবস্থা করা হয়।
পরদিন আমরা  দ্বিতীয় শহরে গেলাম।এখানকার ইহুদী দরজা দিয়ে এই উপশহরে প্রবেশ করলাম।এই শহরে ইহুদী খিষ্টান সূর্যপূজারী তুর্কীরা বসবাস করে।রাতে এখানকার আমীরের বাড়ীতে আমরা মেহমান হলাম।পরদিন তৃতীয় উপশহরে ডুকলাম।এটি মুসলমানদের এলাকা।এখানে অনেক বাজার ও কয়েকটি মসজিদও রয়েছে।আমরা যখন প্রবেশ করি তখন মোয়াজ্জিনরা যোহরের আযান দিচ্ছিল।এই শহরের  মিশরীয় খানদানের ওসমান নামের এক লোকের বাড়ীতে আমাদের থাকার ব্যবস্থা করা হলো।এখানে পনেরো দিন ছিলাম।প্রতিদিনই আমাদের কোন না কোন বাড়ীতে দাওয়াত করা হয়েছে ।এখানে থাকতেই প্রতিদিন ঘোড়ায় চড়ে আমি শহরের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরেছি।।

Monday, October 5, 2015

Tom and Jerry Beach টম এন্ড জেরী


ভারতীয় ছায়াছবির হিন্দি জনপ্রিয় গান


নেপাল এর গান


ভূটানের মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশে একটি ভূটানী গান।


চীনের শিকল পরা গোলাম -ইবনে বতুতা

ইবনে বতুতার রোমঞ্চকর অভিযান
 চীনের শিকল পরা গোলামের কথা!

চীন দেশীয় এই খানছার চতুর্থ অংশে বয়ে গেছে তিনটি নহর।এদের মধ্যে রয়েছে তিনটি শাখা নদী।ছোট ছোট নৌকা চলাচল করে নদী গুলোতে।জনগণ তাদের প্রয়োজনীয় সদাইপাতি ও কয়লা জাতীয় জ্বালানী  পাথর আনা নেওয়া করে।এই নদীতে অনেক বিলাসী বিনোদন নৌকাও চলাচল করতে দেখলাম।
খানছার এই অংশের মাঝখানে রয়েছে বিশাল এক দূর্গ।এখানে কাজ করে হাজার হাজার দক্ষ কারিগর।কারিগররা এখানে শূল্যবান কাপড় বোনে আর যুদ্ধ সরঞ্জাম তৈরী করে।আমির কুরতাইয়ের কাছে শুনেছি এই দূর্গে এক হাজার ছয়শত ওস্তাদ কারিগর রয়েছে।প্রত্যেকের অধীনে আবার তিন বা চার জন করে শিক্ষানবীশ কাজ করছে।এরা সবাই খানের গোলামদের অন্তর্ভূক্ত ।তাদের পায়ে লোহার শিকল পরানো।এরা শহরের বাজারগুলোতে যেতে পারে, তবে শহরের ফটকের বাহিরে যাওয়ার অনুমতি নেই।প্রতিদিন একশো দলে বাগ হয়ে এদেরকে আমির কুরতাইয়ের সামনে হাজিরা দিতে হয়।
নিয়ম হলো দশ বছর কাজ করার পর গোলামদের পা হতে শিকল খুলে দেয়া হয় তাদের স্বাধীনতা দেয়া হয় তারা চীনের যে কোন যায়গায় মুক্ত জীবন যাপন করতে পারবেন।তবে খানের সাম্রাজ্যের বাহিরে যেতে পারবেন না।অথবা ইচ্ছে থাকলে আগের কাজে নিয়োজিত থাকতে পারবেন,পায়ে শিকল না পরেই এজন্য তারা অতিরিক্ত বেতন ভাতা পাবেন।এভাবে এসব গোলামদের বয়স যখন পঞ্চাশ বছর হবে তখন তাদের অন্য কোন কাজও করতে হয় না।তখন সরকারী তহবিল হতে উপযুক্ত অবসর ভাতা দেয়া হয়।
এছাড়া রাজ্যের অন্যান্য কর্মচারীরার পঞ্চাশ বছর হলে অবসর নেন এবং সরকার হতে উপযুক্ত ভাতা পান।ষাট বছর বয়স হলে তাঁদেরকে সকল প্রকার আইনী শাস্তি থেকে রেহাই দেয়া হয়।তখন তাঁদেরকে শিশুর মতো নিষ্পাপ গণ্য করা হয়।চীনে এই ধরণের বয়স্ক লোকেরা খুবিই সম্মানীত।তাঁদেরকে জনসাধারণ‘আতা’ বা পিতা বলে সম্বোধন করেন।

ট্রেন -শামসুর রাহমান


Saturday, October 3, 2015

প্রেমের সময় বয়স

প্রেমের সময় বয়স

জীবনে সবাই কারো না কারো প্রেমে পড়েন। অনেকের ভাগ্যে এমনও হয়, কাউকে দারুণ ভালোবেসেও তাকে বোঝাতেই পারেন না মনের কথা। কাউকে পছন্দ হয়ে গেলে তার মনোযোগ কেড়ে নেওয়াটা জরুরি হয়ে ওঠে। প্রেম নিবেদনকে তৃপ্তিদায়ক ও সর্বাধিক উপভোগ্য করতে হলে আবেগের প্রদর্শন ও সুযোগের সদ্ব্যবহারকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়। কিন্তু অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘুম বিষয়ক বিশেষজ্ঞ ড. কেলি তার গবেষণায় বলেন, প্রেমিক-প্রেমিকা কিংবা স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ভালোবাসা অর্পণ সফল করতে হলে সময়জ্ঞানটাই সবচেয়ে বড় বিষয়।
গবেষনায় প্রকাশ পেয়েছে, মানবদেহ পরিচালিত হয় ‘সার্কাডিয়ান রিদম’ দ্বারা। সূর্যের আলোর সঙ্গে খাপ খাইয়ে চলতে আমাদের দেহ এই ছন্দ মেনে চলে। ঘুম এবং যৌনতার সঠিক সময় বের করতে পারলে উভয় ক্ষেত্রেই সর্বাধিক তৃপ্তি মিলতে পারে। বয়সের সঙ্গেও সার্কাডিয়ান রিদম বদলাতে থাকে। এসব বিষয়ের সঠিক সমন্বয় করতে হয়। বিশেষজ্ঞ জানাচ্ছেন, বয়সের সঙ্গে প্রেম নিবেদনের সঠিক সময়ের কথা।
.বিশের কোঠায় যাদের বয়স, দিনের যেকোনো সময় তাদের দেহ যৌন চাহিদা অনুভব করতে পারে। ড. কেলি বলেন, এ বয়সীরা যেকোনো সময় সঙ্গী-সঙ্গিনীর সাথে অন্তরঙ্গ হতে পারেন। এ বয়সীরা সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ঘুম থেকে ওঠা এবং রাত ১টার দিকে ঘুমাতে যাওয়ায় সর্বাধিক উপকার পাবেন।
.ত্রিশের কোঠা প্রেম ও সেক্স করার স্বর্ণসময়। সূর্যের আলো দেহে টেসস্টোটেরন হরমোনের ক্ষরণ বৃদ্ধি করে। এ বয়সীদের দেহঘড়ি তাদের সকালে জাগিয়ে তোলে। তাদের রাত ৮টার দিকে ডিনার সেরে ফেলা ভালো। মধ্যরাত তাদের বিছানায় যাওয়ার সেরা সময়।
.চল্লিশের কোঠায় যারা আছেন, তাদের জন্যে প্রেম নিবেদনের সেরা সময় রাত ১০টা ২০ মিনিট। গোটা দিন পেরিয়ে এ সময়টাতেই দেহে সর্বাধিক পরিমাণ অক্সিটোসিন হরমোন নিঃসৃত হয়। এতে দেহ অনেক শান্ত ও স্থিত হয়ে আসে। মধ্যরাতের আগেই তাদের ভালোবাসা পূর্ণতা পেতে পারে। ঘুম থেকে ওঠার আদর্শ সময় হবে সকাল ৭টা ৫০ মিনিট।
.পঞ্চাশের কোঠায় বিকেলেই সেক্স সবচেয়ে উপভোগ্য হতে পারে। সকালের ব্যস্ত সময় শুরু হওয়ার জন্যে এ বয়সীদের রাত সাড়ে ১০টার মধ্যেই ঘুমিয়ে যাওয়া উচিত।
.ষাট বছরে যারা পা রেখেছেন তাদের জন্যে রাত ৮টা উত্তেজনাকর মুহূর্ত হতে পারে। এ বয়সে রাত ১০টার দিকে মেলাটোনিন হরমোনের ক্ষরণ বৃদ্ধি পায়। এটি ঘুমকে গভীর করে। তাই তাদের সাড়ে ৬টার দিকে ডিনারের কাজ সেরে ফেলা উত্তম।
.সত্তর বছর বয়সে সেক্স মানুষকে তৃপ্তিদায়ক ঘুম ও বিশ্রামের সুযোগ করে দিতে পারে। এ বয়সীরা ঘুমের মাঝে বার বার জেগে যেতে পারেন। তাই যত দ্রুত সম্ভব বিছানায় গা এলিয়ে দিতে হবে। এদের সকাল সাড়ে ৬টার দিকে নাস্তা করা উচিত। দুপুর শুরু হতেই লাঞ্চ করাটা স্বাস্থ্যের জন্যে ভালো।

- এ ওয়ান নিউজ

Adobe Photoshop দিয়ে ছবি রিসাইজ করা

ওয়েব পেজ দ্রুত লোড করার পদ্ধতি এবং  Adobe Photoshop দিয়ে ছবি রিসাইজ করা।
সকলকে সালাম ও সুভেচ্ছা।আশা করি ভাল আাছেন।
আপনার একটি ওয়েব পেজ আছে।আপনি আপনার লেখার গুনগত মানে সন্তোষ্ট হল্ওে ভিজিটর তেমন আপনার ওয়েব পেজে বা আপনার ব্লগে তেমন আসেন না ।তার একমাত্র কারণ হতে পারে আপনার ওয়েব পেজটি দ্রুত লোড হয় না।এমতাবস্থায় আপনার ওয়েব পেজটির স্পিড কেমন তা জানতে হলে Google page Speed এ চেক করুন।যদি আপনার ওয়েব পেজটি স্লো হয় বা সমস্যা দেখায় ,তবে নির্দেশনা মোতাবেক প্রয়োজনীয় এডিট করে আপনার ওয়েব পেজটিকে দ্রুত করতে পারবেন।

ওয়েবপেজ দ্রুত লোড না হওয়ার আরেকটি প্রধাণ কারণ ছবি রিসাইজ না করে পোষ্ট করা। Adobe Photoshop দিয়ে ছবি  সহজেই  রিসাইজ করা যায় ।
 Adobe Photoshop দিয়ে কিভাবে ছবি রিসাইজ করা যায় ?
তা জানতে হলে ভিডিওটি দেখুন ।

আশা করি এখন বুঝতে পারছেন।
ধন্যবাদ।

Another main cause of the webpage does not load quickly resize images to the post. You can easily resize photos with Adobe Photoshop. With Adobe Photoshop to resize?
Watch the video to find out how.


I hope you understand now.
Thanks.

Friday, October 2, 2015

লেটেষ্ট ভার্সন ফ্রি এন্টিভাইরাস Free Antivirus

আসসালামু আলাইকুম আশা করি সবাই ভাল আছেন। আজ আপনাদের জানাব কিভাবে লেটেষ্ট ভার্সন ফ্রি এন্টিভাইরাস(Free Antivirus) নেট হতে সংগ্রহ করা যায়।

সকল কম্পিউটার ব্যবহারকারীদের লেটেষ্ট ভার্সন ফ্রি এন্টি ভাইরাস(Free Antivirus) প্রয়োজন হয়।
এছাড়া কাম্পউটার চালনায় অন্যান্য লেটেষ্ট ভার্সন  প্রয়োজনীয় সফটওয়্যারও প্রয়োজন হয়।নতুন ব্যবহারকারীরা অনেকের কাছে ওয়েব সাইট ঘেটে প্রয়োজনীয় সফটওয়্যারটি খুঁজে পেতে সমস্যা হয় বা সময় সাপেক্ষ ব্যাপার হয়ে দাড়ায়।
যদি সহজেই প্রয়োজনীয় সফটওয়্যারটি পাওয়া যায় তাহলো তো খুব ভাল হয়।
তাই আজকে আপনাদেরকে কিভাবে সহজেই লেটেষ্ট ভার্সন ফ্রি এন্টিভাইরাস(Free Antivirus) সহ অন্যান্য সফটওয়্যার পওয়া যায় ,তার উপায় বাতলে দিব।
এখন নিম্নের নিদেশনা অনুস্মরণ করুন।তাহলে সহজেই আপনি অাপনার কাঙ্খিত লেটেষ্ট ভার্সন ফ্রি এন্টিভাইরাস (Free Antivirus) অথবা প্রয়োজনীয় সফটওয়্যারটি পাবেন।
প্রথমে এখানে ক্লিক করুন।
নিচের ছবির মতো প্রদর্শিত হবে।



অাপনার কাঙ্খিত লেটেষ্ট ভার্সন ফ্রি এন্টিভাইরাস (Free Antivirus) অথবা প্রয়োজনীয় সফটওয়্যারটি পাবেন।

সফটওয়্যারের সিরিয়াল কী বা সফটওয়্যারটি কিভাবে ফুল ভার্সন  করা যায় তা জানতে হলে এখানে ক্লিক করুন।
ধন্যবাদ।।

কান্ডারী হুশিয়ার! – কাজী নজরুল ইসলাম Kandari warned! - Kazi Nazrul Islam


দুর্গম গিরি, কান্তার-মরু, দুস্তর পারাবার
লঙ্ঘিতে হবে রাত্রি-নিশীথে, যাত্রীরা হুশিয়ার!
দুলিতেছে তরি, ফুলিতেছে জল, ভুলিতেছে মাঝি পথ,
ছিঁড়িয়াছে পাল, কে ধরিবে হাল, আছে কার হিম্মৎ?
কে আছ জোয়ান হও আগুয়ান হাঁকিছে ভবিষ্যৎ।
এ তুফান ভারী, দিতে হবে পাড়ি, নিতে হবে তরী পার।
তিমির রাত্রি, মাতৃমন্ত্রী সান্ত্রীরা সাবধান!
যুগ-যুগান্তর সঞ্চিত ব্যথা ঘোষিয়াছে অভিযান।
ফেনাইয়া উঠে বঞ্চিত বুকে পুঞ্জিত অভিমান,
ইহাদের পথে নিতে হবে সাথে, দিতে হবে অধিকার।
অসহায় জাতি মরিছে ডুবিয়া, জানে না সন্তরন
কান্ডারী! আজ দেখিব তোমার মাতৃ মুক্তিপন।
হিন্দু না ওরা মুসলিম? ওই জিজ্ঞাসে কোন জন?
কান্ডারী! বল, ডুবিছে মানুষ, সন্তান মোর মার
গিরি সংকট, ভীরু যাত্রীরা গুরু গরজায় বাজ,
পশ্চাৎ-পথ-যাত্রীর মনে সন্দেহ জাগে আজ!
কান্ডারী! তুমি ভুলিবে কি পথ? ত্যাজিবে কি পথ-মাঝ?
করে হানাহানি, তবু চলো টানি, নিয়াছ যে মহাভার!
কান্ডারী! তব সম্মুখে ঐ পলাশীর প্রান্তর,
বাঙালীর খুনে লাল হল যেথা ক্লাইভের খঞ্জর!
ঐ গঙ্গায় ডুবিয়াছে হায়, ভারতের দিবাকর!
উদিবে সে রবি আমাদেরি খুনে রাঙিয়া পূনর্বার।
ফাঁসির মঞ্চে গেয়ে গেল যারা জীবনের জয়গান,
আসি অলক্ষ্যে দাঁড়ায়েছে তারা, দিবে কোন্ বলিদান
আজি পরীক্ষা, জাতির অথবা জাতের করিবে ত্রাণ?
দুলিতেছে তরী, ফুলিতেছে জল, কান্ডারী হুশিয়ার!


Kandari warned! - Kazi Nazrul Islam


Giri impassable, Deep-desert, ocean dustara

Will langhite night-night, warn the passengers!

Duliteche vegetable, phuliteche water, bhuliteche Waterman Way,

Chimriyache Pal, who shall be on the helm, there is himmat?

If you are a young man hamkiche advancing the future.

The heavy storm, will have to travel, to take the boat over.

Whale night matrmantri santrira careful!

Age-era campaign ghosiyache accumulated pain.

Seethe up Huff denied accumulated in the chest,

These will take you on the way, to the right.

Mariche helpless race to the bottom, do not know santarana

Kandari! Today dekhiba ransom your mother.

They Hindu or Muslim? The jijnase any ideas?

Kandari! Ball, dubiche people, children, my mother,

Giri crisis, cowardly passengers garajaya lightning guru,

The backward path as passengers wonders today!

Kandari! You have forgotten the way? What tyajibe middle path?

The dash, but would have been right, that mahabhara niyacha!

Kandari! Thy before the wilderness of Plassey,

Clive's bloody red horizon of the yetha hanjar!

Oh dubiyache the Ganges, India Shut up!

The company raniya punarbara udibe amaderi murderous.

Who was sentenced to death on stage to sing the joy of life,

Damrayeche they come invisibly, what would sacrifice

Test today, race or caste shall relief?

Duliteche boat, phuliteche water kandari warned!

Thursday, October 1, 2015

Wife gift to a friend বন্ধুকে বউ উপহার

Wife gift to a friend
Farman Ali, the two wives of Maulvi kulaura prthimapasara.
Masuk dear friend Mia's wife left the house and gone Affair involved.
Farman Ali was a friend of trouble, trouble.
 So sorry to ease his friend's wife gave one to a friend.
 Farman Ali, a resident of a slum in the nursery owner manachara karmadha Union (52) and kulaura municipality of jayapasa Masuk Mia (37) days from the deep friendly relationship between.
Masuk Mia's wife, three daughters and a son a few days ago, the love affair with the drawn-in boyfriend fled.

Farman Ali, the wife of his friend struck a responsive chord, Friend grief sad Farman Ali. Farman Ali, the wife of the house. He was pleased with the wife is a gift to a friend. Such a desire, as he implemented.

Rabirabajarastha prthimapasa union office on Tuesday night, Dr. Farman Ali nuretuna his second wife, Begum (3) is not divorced. 0 of 4 witnesses after he and a friend set Masuk Kabir Mia nuretuna money to marry the queen.

Masuk with new wife Mia has jayapasastha home.
Masuk Mia manatalaya domicile in Habiganj. The rickshaw driver by profession.




বন্ধুকে বউ উপহার !
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার পৃথিমপাশার ফরমান আলীর নিজের ঘরে রয়েছে  দুজন স্ত্রী। আর প্রিয়তম বন্ধু মাসুক মিয়ার  স্ত্রী পরকীয়ায় জড়িয়ে ঘর ছেড়েছে।
বন্ধুর কষ্টে সহমর্মিত ফরমান আলী । তাই বন্ধুর দুঃখ লাঘবে নিজের এক বউকে তুলে দিলেন বন্ধুর হাতে।

 কর্মধা ইউনিয়নের মনছড়া বস্তির বাসিন্দা নার্সারি মালিক ফরমান আলী ওরফে বৈজ্ঞানিক (৫২) ও কুলাউড়া পৌরসভার জয়পাশা এলাকার মাসুক মিয়া (৩৭)-এর মধ্যে দীর্ঘদিন থেকে গভীর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক।
কিছুদিন আগে মাসুক মিয়ার স্ত্রী তিন মেয়ে ও এক ছেলে রেখে পরকীয়া প্রেমের টানে প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে যায়।

আর বন্ধুর বউয়ের এ বিষয়টি ফরমান আলীর মনে দাগ কাটে,বন্ধুর দু:খিত হয় ফরমান আলী। ফরমান আলীর ঘরে দুই বউ । তিনি মনস্থ করলেন এক বউকে উপহারস্বরূপ বন্ধুকে দিয়ে দেবেন। যেমন ইচ্ছা, তেমনি বাস্তবায়নও করলেন তিনি।

গত মঙ্গলবার রাতে পৃথিমপাশা ইউনিয়নের রবিরবাজারস্থ কাজী অফিসে গিয়ে ফরমান আলী তার ২য় স্ত্রী নূরেতুন বেগম (৩২) কে তালাক দেন। পরে তিনিসহ ৪ জন সাক্ষীর উপস্থিতিতে ২০ হাজার টাকা কাবিন ধার্য করে বন্ধু মাসুক মিয়ার সঙ্গে নূরেতুন বেগমের বিয়ে দিয়ে দেন।

নতুন বউকে নিয়ে মাসুক মিয়া তার জয়পাশাস্থ বাড়িতে উঠেছেন। মাসুক মিয়ার স্থায়ী নিবাস হবিগঞ্জের মনতলায়। পেশায় তিনি রিকশাচালক।



Google Online Security Blog: HTTPS support coming to Blogspot

Google Online Security Blog: HTTPS support coming to Blogspot

Pigeon speech bak bakum -বাক বাকুম পায়রা

Pigeon speech bak bakum
With the tire
Tomorrow harness bride
Sedan will be with gold.
 Sedan to the village Wien-
 Six carriers foot three .
 Pigeon speech sound bakum bak
 Three carriers bald head.
 Bak bakum kum bak kum!
Six carriers could sleep .
Stopped them, shouting orders
  Pigeon speech sound bakum bak
 Six bearer is stumbling
Where pigeons can fly?

Wednesday, September 30, 2015

দিন যায় কথা থাকে Din Jay Kotha Thake



দিন যায় কথা থাকে
Din Jay Kotha Thake

দিন যায় কথা থাকে
সে যে কথা দিয়ে রাখলো না
চলে যাবার আগে ভাবলো না
সেকথা লেখা আছে বুকে।
সে কথা নয়নে আগুন-আল্পনা আঁকে
স্মৃতির পাপিয়া “চোখ গেলো” বলে ডাকে
সে জ্বালা-যন্ত্রণা কাউকে বোলবো না,
বলবো আছি কী যে সুখে।।
মনপাখি তুই থাকরে খাঁচায় বন্দী,
আমি তো করেছি দুঃখের সঙ্গে সন্ধি।
কি আছে পাওনা, তার কাছে দেনা
যাক সে হিসাব চুকে।।

 শিল্পীঃ সুবীর নন্দী,কনকচাঁপা ও কিশোর
  বছরঃ১৯৭৯

If the day of the
He's not that bad with words
No thought had gone before
The keeper's chest.
Tonight he draws fire-Alpana
In memory of the Nightingale "was eye" call       
He is one of bolabo not irritated,
What I am happy to say that ..
You Thackeray manapakhi cage,
I've already come to terms with grief.
What owe a debt to him
He said he Chuke account ..

  Singer- Subir Nandi, kanakacampa
and Kishor