Friday, October 9, 2015

ইবনে বতুতার ঐতিহাসিক রোমাঞ্চকর অভিযান, রহস্যময় উত্তর ও ভুতুড়ে বাণিজ্য

ইবনে বতুতার ঐতিহাসিক রোমাঞ্চকর অভিযান

রহস্যময় উত্তর ও ভুতুড়ে বাণিজ্য

তাতারদের এলাকা ছাড়িয়ে আরো উত্তরে রয়েছে এক রহস্যময় জগত।লোকজনের কাছে এ এলাকা ভুতুরে রাজ্য বলে পরিচিত।সমগ্র অঞ্চল কঠিন বরফে ঢাকা।কোথাও গাছপালা বা জনবসতি চোখে পড়ে না।দিনের পর দিন পথ পাড়ি দিয়েও ভুতুরে রাজ্যের কোন সুনিদৃষ্ট ঠিক-ঠিকানা খুঁজে পাওয়া যায় না।তারপরও যাযাবর কিছু মানুষ ঔই এলাকায় বাস করেন।আসলে ওরা কোন ধরনের মানুষ তারও সঠিক পরিচয় এখনও পাওয়া যায়নি।বরফের রাজ্যে বিচরণকারী এই ভুতুরে রাজ্যের যাযাবর গোষ্টির সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষগুলোর মাঝে মধ্যে যোগাযোগ ঘটে নিছক বানিজ্যের খাতিরে।ভুতুরে রাজ্যের এই বাসিন্দারা বিভিন্ন প্রকার লোমশ প্রাণী শিকার করে তাদের চামড়া বিক্রী করেন।তাদের এই বাণিজ্য কোন টাকা পয়সার মাধ্যমে হয় না।দক্ষিণাঞ্চলের বাসিন্দারা নিত্য প্রয়োজনীয় কিছু পণ্য সামগ্রী দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে উত্তরের এই এলাকায় নিয়ে আসেন।ব্যবসায়ীরা তাদের পণ্য সামগ্রী কোন খোলা জায়গায় ফেলে রেখে তাঁবুর বিতরে গিয়ে রাত কাটান ।পরদিন ওনাদের ফেলে আসা পণ্য সামগ্রীর নিদৃষ্ঠ জায়গায় গিয়ে দেখেন ওই সব পণ্যের বদলে ওখানে শ্বেত ভালুক,মেরু শিয়াল,নেকড়ে ও অন্যান্য লোমশ মেরু প্রানীর মৃত দেহ রাখা হয়েছে।অর্থাত ভুতুরে রাজ্যের বাসিন্দারা এইসব প্রাণী দিয়ে ব্যবসায়ীদের পন্য সামগ্রী কিনে নিয়েছেন।আর যদি ব্যবসায়ী দেখেন যে,তাদের পণ্য সামগ্রীর তুলনায় ঔই সব প্রানীদের চামড়ার মূল্য কম হবে তখন ওরা ঐ প্রাণীগুলো গ্রহণ না করে যথাস্থানেই ফেলে রাখেন।তাঁবুতে আরোও একদিন অপেক্ষা করেন।পরদিন সকালে উঠে আবার নিদৃষ্ট জায়গায় গিয়ে দেখেন গতকালের মৃত দেহগুলোর সঙ্গে আরোও কিছু লোমশ প্রাণীর মৃতদেহ যোগ হয়েছে।উত্তরের ভুতুরে রাজ্যের এই বাসিন্দারা বুঝতে পারেন প্রথমে ওরা যে কটা মৃত দেহ দিয়েছিল তা’ ব্যবসায়ীদের পণ্যের মূল্যের চেয়ে কম ছিল বলে ব্যবস্য়ীরা  গ্রহণ করেননি।তাই পরদিন আরো কিছু মৃতদেহ এনে ওরা এই দরদাম ঠিক করে দেন।উত্তরের ভুতুরে রাজ্যের এই বাসিন্দাদের বিকি-কিনি চলে এভাবে নিরবে নিভৃতে,ক্রেতা বিক্রেতার মাঝে কোন দেখা স্বাক্ষাত ছাড়াই।ব্যবসায়ীরা এসব প্রানীগুলোর চামড়াগুলো ছিলে দক্ষিণাঞ্চলে নিয়ে আসেন এবং শুকিয়ে প্রক্রিয়াজাত করে বাজারে বিক্রী করেন। এসব লোমশ চামড়ার তৈরী পোশাক অনেক দামে বিক্রী হয়।চীন দেশের আমির ওমরাদের কাছে এই সব পোশাক খুব আদরনীয়।ইরান ও ইরাকের বড় লোকেরাও এই ধরণের পোশাক পছন্দ করেন।এই সব লোমশ চামড়া গুলোর মধ্যে সবচেয়ে দামী হলে এ্যারামিনের চামড়া,এদের লোম ধবধবে সাদা এবং সবচেয়ে মোলায়েম।কৃষ্ণ শিয়ালের চামড়াও(স্যাবল) দামী তবে এ্যারামিনের চেয়ে কম দামী।স্যাবলের একটা বৈশিষ্ট্য হলো এই চামড়ার লোমে উকুন থাকতে পারে না।
কর্টেসী-মোহাম্মদ মামুনুর রশীদ


No comments:

Post a Comment

Friday, October 9, 2015

ইবনে বতুতার ঐতিহাসিক রোমাঞ্চকর অভিযান, রহস্যময় উত্তর ও ভুতুড়ে বাণিজ্য

ইবনে বতুতার ঐতিহাসিক রোমাঞ্চকর অভিযান

রহস্যময় উত্তর ও ভুতুড়ে বাণিজ্য

তাতারদের এলাকা ছাড়িয়ে আরো উত্তরে রয়েছে এক রহস্যময় জগত।লোকজনের কাছে এ এলাকা ভুতুরে রাজ্য বলে পরিচিত।সমগ্র অঞ্চল কঠিন বরফে ঢাকা।কোথাও গাছপালা বা জনবসতি চোখে পড়ে না।দিনের পর দিন পথ পাড়ি দিয়েও ভুতুরে রাজ্যের কোন সুনিদৃষ্ট ঠিক-ঠিকানা খুঁজে পাওয়া যায় না।তারপরও যাযাবর কিছু মানুষ ঔই এলাকায় বাস করেন।আসলে ওরা কোন ধরনের মানুষ তারও সঠিক পরিচয় এখনও পাওয়া যায়নি।বরফের রাজ্যে বিচরণকারী এই ভুতুরে রাজ্যের যাযাবর গোষ্টির সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষগুলোর মাঝে মধ্যে যোগাযোগ ঘটে নিছক বানিজ্যের খাতিরে।ভুতুরে রাজ্যের এই বাসিন্দারা বিভিন্ন প্রকার লোমশ প্রাণী শিকার করে তাদের চামড়া বিক্রী করেন।তাদের এই বাণিজ্য কোন টাকা পয়সার মাধ্যমে হয় না।দক্ষিণাঞ্চলের বাসিন্দারা নিত্য প্রয়োজনীয় কিছু পণ্য সামগ্রী দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে উত্তরের এই এলাকায় নিয়ে আসেন।ব্যবসায়ীরা তাদের পণ্য সামগ্রী কোন খোলা জায়গায় ফেলে রেখে তাঁবুর বিতরে গিয়ে রাত কাটান ।পরদিন ওনাদের ফেলে আসা পণ্য সামগ্রীর নিদৃষ্ঠ জায়গায় গিয়ে দেখেন ওই সব পণ্যের বদলে ওখানে শ্বেত ভালুক,মেরু শিয়াল,নেকড়ে ও অন্যান্য লোমশ মেরু প্রানীর মৃত দেহ রাখা হয়েছে।অর্থাত ভুতুরে রাজ্যের বাসিন্দারা এইসব প্রাণী দিয়ে ব্যবসায়ীদের পন্য সামগ্রী কিনে নিয়েছেন।আর যদি ব্যবসায়ী দেখেন যে,তাদের পণ্য সামগ্রীর তুলনায় ঔই সব প্রানীদের চামড়ার মূল্য কম হবে তখন ওরা ঐ প্রাণীগুলো গ্রহণ না করে যথাস্থানেই ফেলে রাখেন।তাঁবুতে আরোও একদিন অপেক্ষা করেন।পরদিন সকালে উঠে আবার নিদৃষ্ট জায়গায় গিয়ে দেখেন গতকালের মৃত দেহগুলোর সঙ্গে আরোও কিছু লোমশ প্রাণীর মৃতদেহ যোগ হয়েছে।উত্তরের ভুতুরে রাজ্যের এই বাসিন্দারা বুঝতে পারেন প্রথমে ওরা যে কটা মৃত দেহ দিয়েছিল তা’ ব্যবসায়ীদের পণ্যের মূল্যের চেয়ে কম ছিল বলে ব্যবস্য়ীরা  গ্রহণ করেননি।তাই পরদিন আরো কিছু মৃতদেহ এনে ওরা এই দরদাম ঠিক করে দেন।উত্তরের ভুতুরে রাজ্যের এই বাসিন্দাদের বিকি-কিনি চলে এভাবে নিরবে নিভৃতে,ক্রেতা বিক্রেতার মাঝে কোন দেখা স্বাক্ষাত ছাড়াই।ব্যবসায়ীরা এসব প্রানীগুলোর চামড়াগুলো ছিলে দক্ষিণাঞ্চলে নিয়ে আসেন এবং শুকিয়ে প্রক্রিয়াজাত করে বাজারে বিক্রী করেন। এসব লোমশ চামড়ার তৈরী পোশাক অনেক দামে বিক্রী হয়।চীন দেশের আমির ওমরাদের কাছে এই সব পোশাক খুব আদরনীয়।ইরান ও ইরাকের বড় লোকেরাও এই ধরণের পোশাক পছন্দ করেন।এই সব লোমশ চামড়া গুলোর মধ্যে সবচেয়ে দামী হলে এ্যারামিনের চামড়া,এদের লোম ধবধবে সাদা এবং সবচেয়ে মোলায়েম।কৃষ্ণ শিয়ালের চামড়াও(স্যাবল) দামী তবে এ্যারামিনের চেয়ে কম দামী।স্যাবলের একটা বৈশিষ্ট্য হলো এই চামড়ার লোমে উকুন থাকতে পারে না।
কর্টেসী-মোহাম্মদ মামুনুর রশীদ


No comments:

Post a Comment