ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ডিম খাওয়া কি ঠিক
আমাদের অনেকে কোলেস্টেরলের ভয়ে ডিম এড়িয়ে চলেন। অনেকেই মনে করেন ডিম খেলে কোলেস্টেরল বাড়ে, হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ে। কিন্তু এ ধারণা একেবারেই অমূলক। ডিমে কোলেস্টেরল আছে। তবে তা মোটেও ক্ষতিকর নয় বরং উপকারী। প্রতিদিন একটি করে ডিম খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। ডিম খেয়ে আপনি ডাইবেটিস এড়াতে পারেন। সম্প্রতি আমেরিকান জার্নাল অফ ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশন-এ প্রকাশিত এক রিপোর্টে এই তথ্য জানানো হয়েছে।ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, যারা সপ্তাহে মোটে একটা ডিম খান, তাদের তুলনায় যারা সপ্তাহে অন্তত চারটা ডিম খান, তাদের টাইপ-টু ডায়াবেটিসের ঝুঁকি ৩৭ শতাংশ কমে যায়।
ইস্টার্ন ফিনল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা গত ১৯৮৪-১৯৮৯ এই পাঁচ বছর ২,৩৩২ জন ব্যক্তির খাদ্যাভ্যাসের ওপর গবেষণা পরিচালনা করেন। এদের বয়স ৪২ থেকে ৬০-এর মধ্যে। প্রায় ১৯ বছর পর দেখা যায়, তাদের মধ্যে মাত্র ৪৩২ জন টাইপ-টু ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়েছেন।
ওই গবেষণাতেই জানা যায়, রক্তে শর্করার পরিমাণের কম-বেশির ওপর ডিমের একটা ভালোরকম প্রভাব রয়েছে। দেখা গিয়েছ, যারা সপ্তাহে অন্তত চারটা করে ডিম খেয়েছেন, তাদের রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রিত।
ডায়াবেটিস প্রধানত দুই ধরনের হয়। টাইপ ওয়ান এবং টাইপ টু। টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিসে দেহে ইনসুলিন তৈরি হয় না। টাইপ টু ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে দেহে ইনসুলিন তৈরি হয়, তবে পর্যাপ্ত পরিমাণে উৎপন্ন হয় না । বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, ৯৫ থেকে ৯৮ শতাংশ রোগীই টাইপ টু ডায়াবেটিসে আক্রান্ত।
গবেষকরা আরও জানিয়েছেন, কোলেস্টেরল ছাড়াও ডিমে বেশ কিছু পুষ্টিকর উপাদান থাকে। যা শর্করার বিপাকে সহায়তা করে, যে কারণে টাইপ-টু ডায়াবেটিসের প্রবণতা কমে।
সম্প্রতি একটি গবেষণায় বলা হয়, টাইপ টু ডায়াবেটিস স্মৃতিশক্তি হ্রাস করতে পারে। এটি ব্যক্তির সিদ্ধান্ত নেওয়ার দক্ষতার ওপর প্রভাব ফেলে প্রাত্যহিক কাজকে প্রভাবিত করে বিলম্বিত করে।
গবেষকরা বলেন, টাইপ টু ডায়াবেটিস হওয়ার মাত্র দুই বছরের মধ্যে এটি মস্তিষ্কে নিয়মিত রক্তপ্রবাহের ক্ষমতাকে নেতিবাচকভাবে পরিবর্তন করে; যা ব্যক্তির আচরণ এবং দৈনন্দিন কাজের দক্ষতাকে প্রভাবিত করে।