Friday, April 22, 2016

।।জাঁহাপনা ঈমানদার ।।



।।জাঁহাপনা ঈমানদার ।।
কৃষক আর্জি জানালেন,-
জাঁহাপনা ঈমানদার !
কাঁদে না আপনার পরা?
ফসলের মাঠ আজ জলাশয়,
শক্ত বাঁধ হলো না কেন মহাশয়?
জাঁহাপনা ঈমানদার !
কে জামিনদার ?’

জাঁহাপনা হুঙ্কার দিলেন,
জলের কাজ জলে করেছে
মাটির বাঁধের তাতে দোষ কি রে ?
প্রশ্ন করিস আমার তরে !
দুঃসাহস তোর, সকলি ডরে !
আল্লাহর ধর্ম আল্লাহ করেছে
তোর কি তাতে যায় আসে !?’

কৃষক হাতজোড় করি কহিলেন,-
মাফ করিবেন সমাজ পতি,
আপনার বিনা নেই যে মোর গতি ।

অতপর মহাশয় ছবক দিলেন,-
ফিরে যা !সদা জপা চাই মোর জয় গান,
তাতেই তোর বাঁচবে জীবন মান

অবশেষে কৃষক আসিলেন ফিরে
মহাশয়ের মহা বানী নিয়ে, ধীরে।
জাহাপনা ঈমানদার !
জয়ের মালা বারংবার !

Thursday, April 7, 2016

পৌরসভার স্বাস্থ্য সচেতনতা এবং জনগণের সুস্বাস্থ্য!?

পৌরবাসীর স্বাস্থ্য সুরক্ষা পৌরসভার সেবার অন্তভূক্ত।
এক্ষেত্রে পৌরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের অধীনে পরিচ্ছন্ন শাখার একটি কাজ হলো-
ড্রেন নিয়মিত পরিস্কার করা ।
যাতে ড্রেনের ময়লাগুলো উপচে রাস্তায় চলে না আসে।
 ড্রেন পরিষ্কার করার সময় রাত ১০.০০ টা থেকে  ভোর ৫.০০ টা  পর্যন্ত হওয়া উচিৎ এবং
ড্রেনের ময়লা গুলো উক্ত সময়ের মধ্যে অপসারন করা জরুরী ।
যাতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের সৃষ্টি না হয়, জনগণের কোনরূপ অসুবিধা না হয় বা জনস্বাস্থের জন্য হুমকি না হয়।
কিন্তু জনগণের এসকল জনস্বাস্থ্য সম্পর্কীত নিয়মগুলি কি পৌরসভা খেয়াল করেন ? পালন করেন ?
যেমন সুনাম গঞ্জের দিরাই পৌরসভার ড্রেনের ময়লা গুলো তুলা হচ্ছে দিনের বেলা জনগণের চলাচলের মধ্যে এবং
 ড্রেনের ময়লা গুলো রাস্তার পাশে স্তুপিকৃত করে রাখা হচ্ছে,সংগে সংগে অপাসারণ করা হচ্ছে না।
যে ময়লাগুলোতে সবচেয়ে বেশী রোগ জীবনু বাস করে।
কিন্তু রাস্তার পাশে ড্রেনের ময়লা রাথার কারণে দূগন্ধে ভরে যাচ্ছে পরিবেশ ।
অস্বাস্থ্যকর পৌরবাসির চলাচলে অসুবিধা হচ্ছে ।
বৃষ্টি হচ্ছে,বৃষ্টির পানি ড্রেনের ময়লা রোগজীবানু ছড়িয়ে যাচ্ছে আশে পাশে ।
উম্মুক্ত ভাবে ফেলে রাখা ময়লা গুলো দিনের পর দিন
ড্রেনের ময়লাতে মাছি বসছে ।
সে মাছি উড়ে গিয়ে বসবে সংলগ্ন হোটেলের কোন মানুষের খাবারের প্লেটে।
সে খাবার খেয়ে মানুষ সহজেই রোগে আক্রান্ত হতে পারেন।
উ্ন্নয়নের জন্য ড্রেন দেয়া হয় যাতে মল, ময়লা মাটির তল দিয়ে অপসারিত হয়ে যায়।
সে ময়লা যদি জনগণের চলাচলের রাস্তার পাশে ফেলে রাখা হয় ,
তবে কি বলা যায় না এরুপ উন্নয়নের অব্যবস্থাপনা বুমেরাং হয়ে দূর্ভোগ বাড়াচ্ছে জনগণের ?
সরকার বাহাদুর কর্তৃক জনগণকে স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য বিপুল পরিমান টাকা ব্যয় করেন ।
জনগণের স্বাস্থ্য সচেতন হওয়ার জন্য বহুল প্রচারণা চালান।

কিন্তু জনগণের স্থানীয় সরকারের প্রতিষ্ঠান গুলো কি এ ব্যাপারে সচেতনতার পরিচয় দিতে পারছেন ?
যদি একটি গুরুত্বপূর্ন স্থানীয় সরকার এর প্রতিষ্ঠান জনগণের স্বাস্থ্য সচেতনতার বিষয়ে ব্যর্থতার পরিচয় দেন।
তবে জনগণ কিভাবে স্বাস্থ্য সচেতন হতে পারেন ?

Saturday, April 2, 2016

একটি প্রতিবাদ সভার পরিণতি

এক বনে এক বাঘ বাস করতো।
বাঘটি খুব হিংস্র ও শক্তিশালী ছিল।
বাঘটি যখন তখন নিরীহ পশুদের হত্যা করতো ।
পশুর কিছু রক্ত মাংস খেতো বাকিটা ফেলে রাখত।
বাঘের শিকার করা অবশিষ্ট পুশুর দেহ হায়নারা খেত।
এজন্য বাঘটি সকল পশুদের জন্য ত্রাসের কারণ হলেও হায়নারা বাঘটিকে পছন্দ করতো ।

কারণে অকারণে একর পর এক নিরীহ পশুরা বাঘের হত্যার শিকার হওয়ার প্রেক্ষিতে,
নিরীহ পশুরা অসহায় হয়ে হাতির কাছে এর প্রতিকার চাইল ।
কারণ বনে হাতী তাদের স্বগোত্রীয় তৃণভোজী সবচেয়ে বড় ও শক্তিশালী এবং অকারণে কারো ক্ষতি করে না।
ছাগল বনগরু হরিণ খরগোস ইত্যাদি তৃণভোজী প্রাণিদের অকারণ জীবন হাণী রোধ করার জন্য হাতি প্রতিবাদ সভার আহ্বান করলো ।

যথা সময়ে প্রতিবাদ সভা শুরু হলো ।
কিন্তু বিপত্তি বাঁধল সভাপতি পদ নিয়ে ।
তৃণভোজী প্রাণীরা হাতিকে প্রতিবাদ সভার সভাপতি হিসাবে দাবি করলো।
কিন্তু হায়নারা সভাপতি হিসাবে বনের রাজা বাঘকেই পদাধিকার বলে সভাপতি হিসাবে নির্বাচিত করলো।
হায়নারা শক্তিশালী ও হিংস্র এবং বনের রাজা বাঘকে সভাপতি হিসাবে না মানলে আরো বিপত্তি হতে পারে একথা ভেবে পশুরা হায়নাদের প্রস্তাব মেনে নিল।
হাতি অভিযুক্ত বাঘকে প্রতিবাদ সভার সভাপতি হিসাবে মেনে নিতে পারলো না ।
কিন্তু হাতি দেখতে পেল কেউ আর কোন প্রতিবাদ করছে না।
এমতাবস্থায় হাতি সভাস্থল ত্যাগ করবে কি না চিন্তা করল?
কিন্তু পরক্ষণেই ভাবল হঠাৎ করে সভাস্থল ত্যাগ করা উচিৎ হবে না ,
এবং নিরীহ পশুদের রক্ষার সুযোগ পাবার আশায় হাতি সভাস্থলে রয়ে গেল।

সভা শুরুর প্রারম্ভে নিরীহ তৃণভোজী প্রানীরা তাদের বক্তব্যে বাঘ কর্তৃক তাদের অকারণ জীবন হাণীর করুণ কাহিনী তুলে ধরলো এবং এরুপ অন্যায় কাজ হতে বিরত থাকার জন্য জোর দাবী করলো।
এরপর হায়নারা বললো যে,
‘কারো খাবারের উপর কারো নিষেধাজ্ঞা করা অন্যায় ও অমানবিক তাছাড়া তিনি বনের রাজা,তার বিরোদ্ধে এমন কথা উচ্চারণ করা সমীচীন নয়।বরং পশুদের সদা সতর্ক হয়ে চলাচল করা উচিৎ।অসতর্ক হওয়া তাদের উচিৎ নয় ।’
হায়না দলপতির বক্তব্যে সকল হায়নারা মনের আনন্দে হাততালি দিল।
হায়নাদের বক্তব্যের পর এবার হাতীর বক্তব্য দেয়ার পালা ।
হাতি তৃনভোজী প্রাণীদের রক্ষার জন্য জ্বালাময়ী বক্তব্য এবং দাবি পেশ করার প্রস্তুতি নিল।
কিন্তু সে সময় এক বন গরু বলে উঠল,
‘বনের রাজা বাঘ হতে তৃণভোজী পশুদের সমীহ সতর্ক হয়ে চলাফেরা করা উচিৎ। এমতাবস্তায় হায়নাদের বক্তব্য সমর্থন যোগ্য।’
গরুর বক্তব্যে হায়নারা সমর্থন করে খুব খুশী হয়ে তুমুল হাত তালি দিয়ে স্বাগত জানাল।
এসময় বাঘকেও খুশী হতে দেখা গেল ।
হায়নাদের হাততালি ও বাঘের খুশীতে গরু ভাবল হায়না ও বাঘ হতে আজ হতে সে নিরাপদ ।
এবং নিজেকে বাঘ ও হায়নাদের পক্ষের একজন ভেবে গর্বিত মনে করলো ।
গরুর বক্তব্যে হাতি খুব বিরক্ত দুঃখিত হলো এবং  বক্তব্য না দিয়ে সভাস্থল ত্যাগ করে চলে গেল ।

সবশেষে সভাপতি বাঘ বয়ান করলেন,
আজকের এই প্রতিবাদ সভায় এটাই প্রমানীত হয়েছে যে,আমি পশু হত্যা করতে পারি না।কারণ আমি রাজা।সকল প্রজাদের সুবিধা অসুবিধা দেখা আমার কর্তব্য ।কিন্ত আমাকে খাদ্য গ্রহণ করা হতে বিরত রাখার ষড়যন্ত্র অমানবিক ।পশুদের সতর্ক হয়ে চলা উচিৎ,এটা শুধু আমার বক্তব্য নয় আপনারা দেখেছেন গরু মহাশয় আমার বক্তব্যে একমত ।আর এ বিষয়ে হাতি মহাশয়ের কোন দ্বিমত নেই বলেই তিনি সভাস্থল ত্যাগ করে চলে গেছেন।তাই সভার সিদ্ধান্ত হলো যে,আমি নির্দোষ, আমাকে খাদ্য গ্রহণে বিঘ্ন সৃষ্টি করা অনুচিৎ ।অতএব তৃণভোজী পশুদের সতর্ক হয়ে চলাফেরা করা উচিৎ।আজকের প্রতিবাদ সভা এখানেই শেষ করা হলো।
হায়নাদের বিশাল করতালির উৎফুল্লের মধ্যে প্রতিবাদ সভা শেষ হলো।
তৃণভোজী নিরীহ প্রাণীদের প্রতিবাদ সভা কোন কাজে আসল না।

পরদিন বনের প্রান্তে একদল হায়নাকে একটি মৃত ও রক্তাক্ত গরুর দেহ ভক্ষন করতে দেখা গেল।
মৃত গরুটির কন্ঠনালী হিস্র বাঘের থাবায় ছিন্নভিন্ন ছিল।
যার ছিনার মাংস ও কলিজা ইতিপূর্বে আক্রমণকারী বাঘে খেয়ে নিয়েছিল বলে প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছিল।
একটি ছাগল গাছের ডালে ভয়ার্ত সূরে ভ্যাঁ ভ্যাঁ ডাকছিল।
বাঘ যখন গরুটি শিকার করেছিল ছাগলটি সেটি প্রত্যক্ষ করেছিল ।
ভয়ে পাশের গাছে ডাল বেয়ে গাছে উঠে পরেছিল।
ছাগলের ডাকে অপর একটি গরু আসল।
এই সেই গরুটি যে প্রতিবাদ সভায় বলেছিল  ,
‘বনের রাজা হতে পশুদের সমীহ সতর্ক হয়ে চলাফেরা করা উচিৎ।’
গরুটি নিরাপদ দূরত্ব থেকে দেখতে পেল হায়নারা তার ভাইয়ের দেহ ছিড়ে খুড়ে খাচ্ছে ।
এ দৃশ্য দেখে গরুটির কোন ভাবান্তর হলো না বলে মনে হলো।
সেখানে তৃণভোজী প্রাণীদের প্রচুর উপকরণ থাকলেও কোন হাতি ছিল না।

Friday, April 22, 2016

।।জাঁহাপনা ঈমানদার ।।



।।জাঁহাপনা ঈমানদার ।।
কৃষক আর্জি জানালেন,-
জাঁহাপনা ঈমানদার !
কাঁদে না আপনার পরা?
ফসলের মাঠ আজ জলাশয়,
শক্ত বাঁধ হলো না কেন মহাশয়?
জাঁহাপনা ঈমানদার !
কে জামিনদার ?’

জাঁহাপনা হুঙ্কার দিলেন,
জলের কাজ জলে করেছে
মাটির বাঁধের তাতে দোষ কি রে ?
প্রশ্ন করিস আমার তরে !
দুঃসাহস তোর, সকলি ডরে !
আল্লাহর ধর্ম আল্লাহ করেছে
তোর কি তাতে যায় আসে !?’

কৃষক হাতজোড় করি কহিলেন,-
মাফ করিবেন সমাজ পতি,
আপনার বিনা নেই যে মোর গতি ।

অতপর মহাশয় ছবক দিলেন,-
ফিরে যা !সদা জপা চাই মোর জয় গান,
তাতেই তোর বাঁচবে জীবন মান

অবশেষে কৃষক আসিলেন ফিরে
মহাশয়ের মহা বানী নিয়ে, ধীরে।
জাহাপনা ঈমানদার !
জয়ের মালা বারংবার !

Thursday, April 7, 2016

পৌরসভার স্বাস্থ্য সচেতনতা এবং জনগণের সুস্বাস্থ্য!?

পৌরবাসীর স্বাস্থ্য সুরক্ষা পৌরসভার সেবার অন্তভূক্ত।
এক্ষেত্রে পৌরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের অধীনে পরিচ্ছন্ন শাখার একটি কাজ হলো-
ড্রেন নিয়মিত পরিস্কার করা ।
যাতে ড্রেনের ময়লাগুলো উপচে রাস্তায় চলে না আসে।
 ড্রেন পরিষ্কার করার সময় রাত ১০.০০ টা থেকে  ভোর ৫.০০ টা  পর্যন্ত হওয়া উচিৎ এবং
ড্রেনের ময়লা গুলো উক্ত সময়ের মধ্যে অপসারন করা জরুরী ।
যাতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের সৃষ্টি না হয়, জনগণের কোনরূপ অসুবিধা না হয় বা জনস্বাস্থের জন্য হুমকি না হয়।
কিন্তু জনগণের এসকল জনস্বাস্থ্য সম্পর্কীত নিয়মগুলি কি পৌরসভা খেয়াল করেন ? পালন করেন ?
যেমন সুনাম গঞ্জের দিরাই পৌরসভার ড্রেনের ময়লা গুলো তুলা হচ্ছে দিনের বেলা জনগণের চলাচলের মধ্যে এবং
 ড্রেনের ময়লা গুলো রাস্তার পাশে স্তুপিকৃত করে রাখা হচ্ছে,সংগে সংগে অপাসারণ করা হচ্ছে না।
যে ময়লাগুলোতে সবচেয়ে বেশী রোগ জীবনু বাস করে।
কিন্তু রাস্তার পাশে ড্রেনের ময়লা রাথার কারণে দূগন্ধে ভরে যাচ্ছে পরিবেশ ।
অস্বাস্থ্যকর পৌরবাসির চলাচলে অসুবিধা হচ্ছে ।
বৃষ্টি হচ্ছে,বৃষ্টির পানি ড্রেনের ময়লা রোগজীবানু ছড়িয়ে যাচ্ছে আশে পাশে ।
উম্মুক্ত ভাবে ফেলে রাখা ময়লা গুলো দিনের পর দিন
ড্রেনের ময়লাতে মাছি বসছে ।
সে মাছি উড়ে গিয়ে বসবে সংলগ্ন হোটেলের কোন মানুষের খাবারের প্লেটে।
সে খাবার খেয়ে মানুষ সহজেই রোগে আক্রান্ত হতে পারেন।
উ্ন্নয়নের জন্য ড্রেন দেয়া হয় যাতে মল, ময়লা মাটির তল দিয়ে অপসারিত হয়ে যায়।
সে ময়লা যদি জনগণের চলাচলের রাস্তার পাশে ফেলে রাখা হয় ,
তবে কি বলা যায় না এরুপ উন্নয়নের অব্যবস্থাপনা বুমেরাং হয়ে দূর্ভোগ বাড়াচ্ছে জনগণের ?
সরকার বাহাদুর কর্তৃক জনগণকে স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য বিপুল পরিমান টাকা ব্যয় করেন ।
জনগণের স্বাস্থ্য সচেতন হওয়ার জন্য বহুল প্রচারণা চালান।

কিন্তু জনগণের স্থানীয় সরকারের প্রতিষ্ঠান গুলো কি এ ব্যাপারে সচেতনতার পরিচয় দিতে পারছেন ?
যদি একটি গুরুত্বপূর্ন স্থানীয় সরকার এর প্রতিষ্ঠান জনগণের স্বাস্থ্য সচেতনতার বিষয়ে ব্যর্থতার পরিচয় দেন।
তবে জনগণ কিভাবে স্বাস্থ্য সচেতন হতে পারেন ?

Saturday, April 2, 2016

একটি প্রতিবাদ সভার পরিণতি

এক বনে এক বাঘ বাস করতো।
বাঘটি খুব হিংস্র ও শক্তিশালী ছিল।
বাঘটি যখন তখন নিরীহ পশুদের হত্যা করতো ।
পশুর কিছু রক্ত মাংস খেতো বাকিটা ফেলে রাখত।
বাঘের শিকার করা অবশিষ্ট পুশুর দেহ হায়নারা খেত।
এজন্য বাঘটি সকল পশুদের জন্য ত্রাসের কারণ হলেও হায়নারা বাঘটিকে পছন্দ করতো ।

কারণে অকারণে একর পর এক নিরীহ পশুরা বাঘের হত্যার শিকার হওয়ার প্রেক্ষিতে,
নিরীহ পশুরা অসহায় হয়ে হাতির কাছে এর প্রতিকার চাইল ।
কারণ বনে হাতী তাদের স্বগোত্রীয় তৃণভোজী সবচেয়ে বড় ও শক্তিশালী এবং অকারণে কারো ক্ষতি করে না।
ছাগল বনগরু হরিণ খরগোস ইত্যাদি তৃণভোজী প্রাণিদের অকারণ জীবন হাণী রোধ করার জন্য হাতি প্রতিবাদ সভার আহ্বান করলো ।

যথা সময়ে প্রতিবাদ সভা শুরু হলো ।
কিন্তু বিপত্তি বাঁধল সভাপতি পদ নিয়ে ।
তৃণভোজী প্রাণীরা হাতিকে প্রতিবাদ সভার সভাপতি হিসাবে দাবি করলো।
কিন্তু হায়নারা সভাপতি হিসাবে বনের রাজা বাঘকেই পদাধিকার বলে সভাপতি হিসাবে নির্বাচিত করলো।
হায়নারা শক্তিশালী ও হিংস্র এবং বনের রাজা বাঘকে সভাপতি হিসাবে না মানলে আরো বিপত্তি হতে পারে একথা ভেবে পশুরা হায়নাদের প্রস্তাব মেনে নিল।
হাতি অভিযুক্ত বাঘকে প্রতিবাদ সভার সভাপতি হিসাবে মেনে নিতে পারলো না ।
কিন্তু হাতি দেখতে পেল কেউ আর কোন প্রতিবাদ করছে না।
এমতাবস্থায় হাতি সভাস্থল ত্যাগ করবে কি না চিন্তা করল?
কিন্তু পরক্ষণেই ভাবল হঠাৎ করে সভাস্থল ত্যাগ করা উচিৎ হবে না ,
এবং নিরীহ পশুদের রক্ষার সুযোগ পাবার আশায় হাতি সভাস্থলে রয়ে গেল।

সভা শুরুর প্রারম্ভে নিরীহ তৃণভোজী প্রানীরা তাদের বক্তব্যে বাঘ কর্তৃক তাদের অকারণ জীবন হাণীর করুণ কাহিনী তুলে ধরলো এবং এরুপ অন্যায় কাজ হতে বিরত থাকার জন্য জোর দাবী করলো।
এরপর হায়নারা বললো যে,
‘কারো খাবারের উপর কারো নিষেধাজ্ঞা করা অন্যায় ও অমানবিক তাছাড়া তিনি বনের রাজা,তার বিরোদ্ধে এমন কথা উচ্চারণ করা সমীচীন নয়।বরং পশুদের সদা সতর্ক হয়ে চলাচল করা উচিৎ।অসতর্ক হওয়া তাদের উচিৎ নয় ।’
হায়না দলপতির বক্তব্যে সকল হায়নারা মনের আনন্দে হাততালি দিল।
হায়নাদের বক্তব্যের পর এবার হাতীর বক্তব্য দেয়ার পালা ।
হাতি তৃনভোজী প্রাণীদের রক্ষার জন্য জ্বালাময়ী বক্তব্য এবং দাবি পেশ করার প্রস্তুতি নিল।
কিন্তু সে সময় এক বন গরু বলে উঠল,
‘বনের রাজা বাঘ হতে তৃণভোজী পশুদের সমীহ সতর্ক হয়ে চলাফেরা করা উচিৎ। এমতাবস্তায় হায়নাদের বক্তব্য সমর্থন যোগ্য।’
গরুর বক্তব্যে হায়নারা সমর্থন করে খুব খুশী হয়ে তুমুল হাত তালি দিয়ে স্বাগত জানাল।
এসময় বাঘকেও খুশী হতে দেখা গেল ।
হায়নাদের হাততালি ও বাঘের খুশীতে গরু ভাবল হায়না ও বাঘ হতে আজ হতে সে নিরাপদ ।
এবং নিজেকে বাঘ ও হায়নাদের পক্ষের একজন ভেবে গর্বিত মনে করলো ।
গরুর বক্তব্যে হাতি খুব বিরক্ত দুঃখিত হলো এবং  বক্তব্য না দিয়ে সভাস্থল ত্যাগ করে চলে গেল ।

সবশেষে সভাপতি বাঘ বয়ান করলেন,
আজকের এই প্রতিবাদ সভায় এটাই প্রমানীত হয়েছে যে,আমি পশু হত্যা করতে পারি না।কারণ আমি রাজা।সকল প্রজাদের সুবিধা অসুবিধা দেখা আমার কর্তব্য ।কিন্ত আমাকে খাদ্য গ্রহণ করা হতে বিরত রাখার ষড়যন্ত্র অমানবিক ।পশুদের সতর্ক হয়ে চলা উচিৎ,এটা শুধু আমার বক্তব্য নয় আপনারা দেখেছেন গরু মহাশয় আমার বক্তব্যে একমত ।আর এ বিষয়ে হাতি মহাশয়ের কোন দ্বিমত নেই বলেই তিনি সভাস্থল ত্যাগ করে চলে গেছেন।তাই সভার সিদ্ধান্ত হলো যে,আমি নির্দোষ, আমাকে খাদ্য গ্রহণে বিঘ্ন সৃষ্টি করা অনুচিৎ ।অতএব তৃণভোজী পশুদের সতর্ক হয়ে চলাফেরা করা উচিৎ।আজকের প্রতিবাদ সভা এখানেই শেষ করা হলো।
হায়নাদের বিশাল করতালির উৎফুল্লের মধ্যে প্রতিবাদ সভা শেষ হলো।
তৃণভোজী নিরীহ প্রাণীদের প্রতিবাদ সভা কোন কাজে আসল না।

পরদিন বনের প্রান্তে একদল হায়নাকে একটি মৃত ও রক্তাক্ত গরুর দেহ ভক্ষন করতে দেখা গেল।
মৃত গরুটির কন্ঠনালী হিস্র বাঘের থাবায় ছিন্নভিন্ন ছিল।
যার ছিনার মাংস ও কলিজা ইতিপূর্বে আক্রমণকারী বাঘে খেয়ে নিয়েছিল বলে প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছিল।
একটি ছাগল গাছের ডালে ভয়ার্ত সূরে ভ্যাঁ ভ্যাঁ ডাকছিল।
বাঘ যখন গরুটি শিকার করেছিল ছাগলটি সেটি প্রত্যক্ষ করেছিল ।
ভয়ে পাশের গাছে ডাল বেয়ে গাছে উঠে পরেছিল।
ছাগলের ডাকে অপর একটি গরু আসল।
এই সেই গরুটি যে প্রতিবাদ সভায় বলেছিল  ,
‘বনের রাজা হতে পশুদের সমীহ সতর্ক হয়ে চলাফেরা করা উচিৎ।’
গরুটি নিরাপদ দূরত্ব থেকে দেখতে পেল হায়নারা তার ভাইয়ের দেহ ছিড়ে খুড়ে খাচ্ছে ।
এ দৃশ্য দেখে গরুটির কোন ভাবান্তর হলো না বলে মনে হলো।
সেখানে তৃণভোজী প্রাণীদের প্রচুর উপকরণ থাকলেও কোন হাতি ছিল না।